বিমানবন্দরে চলছে চেকিং। — ফাইল চিত্র।
ওষুধ খেতে ভুলে যান অনেকেই। বাসে-ট্রামে ছাতা ফেলে চলে আসার উদাহরণও কিছু কম নয়। ইদানীং মোবাইল বা হ্যান্ডস-ফ্রি (কানে গোঁজা মোবাইল সংযোগকারী তার) ভুলে চলে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। কিন্তু তাই বলে কোমরের বেল্ট!
কলকাতা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে মোবাইল, ল্যাপটপ-সহ মানিব্যাগ, হ্যান্ডস ফ্রি, পেনের মতো ব্যক্তিগত জিনিস ট্রে-তে রেখে মেটাল ডিটেক্টর ডোর পেরিয়ে দেহ তল্লাশিতে যেতে হয়। ততক্ষণে সেই সব জিনিসপত্র এক্স-রে হয়ে চলে আসে। দেহ তল্লাশির শেষে সেগুলি তুলে নিয়ে যাত্রী উড়ান ধরতে চলে যান। কিন্তু ট্রে থেকে সমস্ত জিনিস তুলে নিতে প্রায় নিয়মিত ভাবেই ভুলে যান যাত্রীরা। সেই সব ফেলে রাখা মালপত্র জমা পড়ে বিমানবন্দরের ‘লস্ট লাগেজ সেকশন’-এ। সকলকে অবাক করে সেখানেই ইদানীং বাড়ছে বেল্টের সংখ্যা। এক অফিসারের কথায়, “এখন গড়ে প্রতি দিন ৩০টি করে বেল্ট জমা পড়ছে। সারা দিনে ফেলে যাওয়া জিনিসের সংখ্যা প্রায় ১০০।”
প্রশ্ন উঠতেই পারে, যিনি বেল্ট ব্যবহার করেন, তিনি দেহ তল্লাশির পরে সেটি ফেলে রেখে বিমানেওঠার সময়ে তা অনুভব করতে পারছেন না? বিমানবন্দরের এক কর্মীর সরস মন্তব্য, “বিমানের পথে বেল্ট নেই বলে কারও প্যান্ট খুলে গিয়েছে, এমনটা দেখিনি।’’
মনোবিদ অনিরুদ্ধ দেবের কথায়, “এখন অনেকে স্মার্ট দেখানোর জন্য বেল্ট ব্যবহার করেন।” তাঁরযুক্তি, উড়ান ছেড়ে দেওয়ার পরে হয়তো বেল্টের কথা অনেকের মনে পড়ে। যাঁরা উড়ানে যাতায়াত করেন, তাঁদের পক্ষে গন্তব্যে পৌঁছে একটি বেল্ট কিনে নেওয়া বড় কথা নয়। ফলে কলকাতায় পড়েই থাকে বেল্ট। কেউ একটি বেল্ট ফিরে পেতে বিমানবন্দরে আবার ফিরে আসেন না।
কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা সি পট্টাভি বলছেন, “যাত্রীদের ফেলে যাওয়া এই সব জিনিস যত্ন করে রেখে দিতে হয়। সে জন্য পরিকাঠামো খাতে খরচও হয় বিস্তর। যাত্রী যদি তাঁর ফেলে যাওয়া জিনিস ফেরত নিতে আসেন, সে জন্য প্রায় তিন মাস অপেক্ষা করা হয়। তার পরে আমরা কেন্দ্রীয় একটি সংস্থাকে দিয়ে সেই সব জিনিস নিলাম করে দিই। পুরনো সব জিনিস কম দামে বিক্রি হয়ে যায়। তবে সেই টাকায় পরিকাঠামোর খরচ ওঠে না।”
শুধু বেল্টই নয়। যাত্রীদের ফেলে যাওয়া জিনিসের তালিকায় রয়েছে মোবাইল, হ্যান্ডস ফ্রি, ল্যাপটপ, জামাকাপড়, এমনকি খেলনাও। বিমানবন্দরের এক আধিকারিকের কথায়, “অনেক সময়ে দেখা যায়, যাত্রীর জিনিসের ওজন বেশি হয়ে গিয়েছে। সেই অতিরিক্ত ওজনের জন্য তাঁকে অনেক টাকা দিতে হবে। তখন অনেকে জামাকাপড় ইচ্ছে করেই ফেলে যান।”
অনিরুদ্ধের যুক্তি, “মানুষ যখন দুশ্চিন্তায় থাকেন, তখনই ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। অনেকেই প্রথম বার উড়ান ধরেন। তখন তাঁদের মধ্যে সেই দুশ্চিন্তা বেশি থাকে। বিমান ধরার তাড়া ও দুশ্চিন্তার জেরে অনেকেই জিনিস ভুলেচলে যান।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy