Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Kolkata Municipal Corporation

কলকাতার পুর অধিবেশনে তৃণমূল-বিজেপি মারপিট, থামাতে গিয়ে হিমশিম খেলেন মেয়র ফিরহাদ

শনিবার কলকাতা পুরসভার অধিবেশনে নিজেদের মধ্যে মারামারিতে জড়িয়ে পড়লেন তৃণমূল এবং বিজেপির কাউন্সিলরেরা। মারামারি থামাতে গিয়ে কার্যত হিমশিম খেতে হল মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে।

পুরসভায় কাউন্সিলরদের মধ্যে হাতাহাতির সেই ছবি।

পুরসভায় কাউন্সিলরদের মধ্যে হাতাহাতির সেই ছবি। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:৪১
Share: Save:

নজিরবিহীন ঘটনা কলকাতা পুরসভায়। এ বার অধিবেশন কক্ষেই মারামারিতে জড়িয়ে পড়লেন তৃণমূল এবং বিজেপির কাউন্সিলরেরা। সেই মারামারি থামাতে গিয়ে কার্যত হিমশিম খেতে হল মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। কলকাতা পুরসভার ইতিহাসে এই ঘটনা নজিরবিহীন বলেই জানাচ্ছেন পুরসভার আধিকারিকদের একাংশ। ধুন্ধুমারকাণ্ড সামাল দিতে না পেরে অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান ক্ষুব্ধ চেয়ারপার্সন মালা রায়। পরে যদিও পুর-সদস্যদের অনুরোধে ফিরে এসে অধিবেশনের কাজ পুনরায় শুরু করেন তিনি। সঙ্গে বিবাদমান কাউন্সিলরদের উদ্দেশে মালা বলেন, ‘‘অধিবেশন কক্ষ মারামারি করার জায়গায় নয়। এমন কাজ করতে চাইলে হয় নরদান পার্কে যান, নয় লেবুতলা পার্কে যান।’’

শনিবার পুরসভার মাসিক অধিবেশনে প্রথমে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসু। ঘটনায় প্রকাশ, অধিবেশন চলাকালীন মেয়র ফিরহাদ বিরোধী বেঞ্চের দিকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘‘বিরোধীরা অধিবেশনে কোনও প্রশ্ন করেন না। বাধ্য হয়ে তাই আমাদের নিজেদের দলের কাউন্সিলরদের দিয়ে প্রশ্ন করাতে হয়।’’ জবাবে নিজের আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেন বিজেপি কাউন্সিলর সজল। তিনি বলেন, ‘‘প্রশ্ন করব কী? প্রশ্ন করলে তো জবাব দেওয়া হয় না। বিরোধীদের প্রশ্নের কোনও মূল্য আপনাদের কাছে নেই।’’ জবাবে মেয়র বলেন, ‘‘আপনি প্রশ্ন জমা দিন, আমরা আপনাদের সব প্রশ্নের জবাব দেব।’’ পাল্টা সজল আবার বলেন, ‘‘টেন্ডার দুর্নীতি নিয়ে আমি বিগত অধিবেশনে প্রস্তাব জমা দিয়েছিলাম। সেই প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়নি। আসলে পুরসভা যাঁরা চালাচ্ছেন, তাঁরা তো দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন।’’ এ কথা শোনা মাত্রই তৃণমূল কাউন্সিলরেরা প্রতিবাদ করেন। সজলের কাছের আসনে বসা তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম এগিয়ে যান সজলের দিকে। শুরু হয় তর্কাতর্কি। এর পরেই অসীম ধাক্কা দেন সজলকে, এমনটাই অভিযোগ বিজেপির। সজলকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন আর এক বিজেপি কাউন্সিলর বিজয় ওঝা। একে একে তৃণমূল কাউন্সিলরেরাও এগিয়ে এলে শুরু হয় বচসা। তৃণমূল কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারম্যান সুদীপ পোল্লে এর মাঝে সজলের ঘাড় চেপে ধরেন বলেও অভিযোগ ওঠে। এমন ঘটনা প্রত্যক্ষ করে তীব্র উষ্মা প্রকাশ করে অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান মালা।

প্রথমে দূর থেকে মেয়র দুই কাউন্সিলরকে ঝগড়া থামাতে বললেও, পরে পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাচ্ছে দেখে কাছে এসে ঝামেলা থামতে যান তিনি। দু’পক্ষের মারমুখী মেজাজের মুখে পড়ে ঝামেলা থামাতে হিমশিম খেতে হয় মেয়রকে। মেয়রের সঙ্গেই ঝামেলা থামাতে এগিয়ে আসেন মেয়র পারিষদ সন্দীপন সাহা, সন্দীপরঞ্জন বক্সী প্রমুখ। পরে ঝামেলা থামলে চেয়ারপার্সন ফিরে এলে অধিবেশন শুরু হয়। বক্তব্য রাখা শুরু করেন মেয়র। এক সময় সজলকে তাঁর আনা প্রস্তাব পাঠ করতে বলেন মালা। নিজের প্রস্তাব পাঠের পর প্রতিবাদ জানিয়ে অধিবেশন বয়কটের ঘোষণা করেন সজল। কিন্তু তাঁকে তাঁর প্রশ্নের জবাব শুনেই অধিবেশন কক্ষ ছাড়ার নির্দেশ দেন পুর চেয়ারপার্সন। কিন্তু অনুরোধে কর্ণপাত না করেই স্লোগান দিতে দিতেই অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করেন তাঁরা।

মারামারির ঘটনা নিয়ে সজল এবং অসীম দু’জনের কাছেই জবাব তলব করেছেন পুর চেয়ারপার্সন মালা। সন্তোযজনক জবাব না পাওয়া গেলে কড়া পদক্ষেপ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। গত মাসের পুর অধিবেশনেও বিজেপি কাউন্সিলরদের সঙ্গে তৃণমূল কাউন্সিলরদের বচসার ঘটনা ঘটেছিল। তবে তা হয়েছিল কাউন্সিলর ক্লাবে। গত ১৯ অগস্ট শ্যামপুকুর বিধানসভা এলাকার বাসিন্দা বিজেপি নেতা সুনীল সিংহের বাড়ির অংশ বুলডোজ়ার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় পুরসভা। তা নিয়ে দিনভর উত্তপ্ত হয়েছিল পুরসভা।

অন্য বিষয়গুলি:

KMC TMC BJP Firhad Hakim
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy