ফাইল চিত্র।
প্রথমে ছুটি ছিল দেড় মাস। পরে সরকারি নির্দেশে তা আরও ১১ দিন বাড়ানো হয়েছিল। দীর্ঘ প্রায় দু’মাস সেই গরমের ছুটির পরে অবশেষে আজ, সোমবার খুলছে শহরের সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ও সরকার পোষিত স্কুলগুলি। কিছু বেসরকারি স্কুল আগে খুলে গেলেও অধিকাংশ বেসরকারি স্কুলও খুলছে আজ। তবে আজ থেকে পঠনপাঠন শুরু হলেও শিক্ষা দফতর বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের আসতে হবে শনিবার থেকেই। সেই মতো শনিবার প্রায় সব স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা এসে, স্কুলভবন ও ক্লাসঘরে জীবাণুনাশের কাজ খতিয়ে দেখেন। দীর্ঘ ছুটিতে স্কুলের মাঠে গজিয়ে উঠেছিল আগাছা ও জঙ্গল। সেগুলিও পরিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্কুল-প্রধানেরা।
হালতু কিশলয় শিক্ষা সদনের প্রধান শিক্ষিকা অর্পিতা সরকার জানিয়েছেন, এত দিন স্কুল বন্ধ থাকায় মাঠে বড় বড় ঘাস জন্মেছিল। কিছু দিন আগেই সেগুলি কেটে মাঠ পরিষ্কার করা হয়েছে। এর পরে হাত দেওয়া হয়েছে ক্লাসঘর পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করার কাজে। সেই কাজ সম্পন্ন হয়েছে শনিবারই। তিনি বলেন, ‘‘করোনা তো চলে যায়নি। বরং, এখন তা আবার একটু একটু করে বাড়ছে বলে শোনা যাচ্ছে। তাই আমরা কোনও ঝুঁকি নিচ্ছি না।’’
কী কী বিধি মেনে স্কুলে আসতে হবে, তা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ক্লাসের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেলতলা গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অজন্তা মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, স্কুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার রাখা হচ্ছে। ছাত্রীদেরও বলা হয়েছে মাস্ক পরে আসতে, সঙ্গে রাখতে স্যানিটাইজ়ার। তারা যাতে টিফিন ভাগ করে না খায়, সেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অজন্তা বলেন, ‘‘শনিবার স্কুলে সব শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা এসেছিলেন। প্রতিটি ক্লাসঘর জীবাণুমুক্ত করাহয়েছে কি না, তা তাঁরা দেখেছেন।’’ তিনি জানান, ছুটির মধ্যেও বিভিন্ন কাজে অনেক শিক্ষককে আসতে হয়েছে। কিন্তু ক্লাসঘরগুলি বন্ধ থাকায় স্কুল খোলার আগে সেগুলির পরিচ্ছন্নতার উপরে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘ গরমের ছুটির মধ্যেও বিভিন্ন সময়ে বৃষ্টি হয়েছে। আর এখন বর্ষা চলে আসায় মাঝেমধ্যেই নামছে বৃষ্টি। ফলে স্কুলের খোলা জায়গা, বিশেষত চাতালে শেওলা জমেছে। বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী বলেন, ‘‘স্কুল চত্বর জীবাণুনাশ করা ছাড়াও শেওলা পরিষ্কার করা হয়েছে। বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে পানীয় জলের ট্যাঙ্ক পরিষ্কারে।’’
আগামী মাস থেকে স্কুলেই রান্না করা মিড-ডে মিল পাওয়ার কথা পড়ুয়াদের। তাই মিড-ডে মিলের সামগ্রী যাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে, সে দিকেও নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষকেরা। হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত জানান, শনিবার প্রতিটি ক্লাসঘর স্যানিটাইজ় করে সেগুলির দরজা-জানলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সোমবার পড়ুয়ারা এলে তবে ক্লাসঘর খোলা হবে।
বছরের প্রথম ছ’মাস কেটে গেলেও এখনও অধিকাংশ স্কুলে পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন হয়নি। তাই বেশির ভাগ স্কুল কর্তৃপক্ষই জানিয়েছেন, আজ স্কুল খোলার পরে যত শীঘ্র সম্ভব পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন শুরু করা হবে। বাকি রয়েছে একাদশ শ্রেণির প্র্যাক্টিক্যালও। শিয়ালদহ টাকি বয়েজ়ের প্রধান শিক্ষিকা স্বাগতা বসাক বলেন, ‘‘এত দিন পরে স্কুল খুলছে। এখন টানা ক্লাস হওয়া খুব জরুরি। পরীক্ষা এবং ক্লাস, দুটোই নিতে হবে। এ দিকে, করোনা আবার বাড়ছে বলে শোনা যাচ্ছে। তাই বিধি মেনেই স্কুল চালাতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy