প্রতীকী ছবি
দিনেদুপুরে এক বর্ষীয়ান আইনজীবীর দোতলার ফ্ল্যাটে ঢুকে তাণ্ডব চালাল একদল দুষ্কৃতী। ওই আইনজীবীকে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে ক্লোরোফর্ম দিয়ে সংজ্ঞাহীন করার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, বাধা দিতে যাওয়ায় তাঁর মেয়ে ও দীর্ঘদিনের বৃদ্ধ গৃহকর্মীকে বেধড়ক মারধর ও ক্লোরোফর্ম দিয়ে অজ্ঞান করে দুষ্কৃতীরা। তার পরে তছনছ করে গোটা বাড়ি।
শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ঘিঞ্জি এলাকা বলে পরিচিত হাওড়ার বেলিলিয়াস রোডে। পুলিশের অনুমান, ডাকাতির চেষ্টার থেকেও বাড়ির মালিককে ভয় দেখানোর জন্য ভাঙচুর, তছনছ করতেই দুষ্কৃতীরা এসেছিল। কারণ, কোনও মূল্যবান জিনিস খোয়া যায়নি। এর পিছনে আইনজীবীর পরিবারের ঘনিষ্ঠ কেউ জড়িত কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, বেলিলিয়াস রোডের ওই ফ্ল্যাটবাড়ির দোতলায় থাকেন হাওড়া আদালতের আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ দে, তাঁর মেয়ে সুমিত্রা শ্রীবাস্তব এবং ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে থাকা গৃহকর্মী মনোরঞ্জন দাস। ফ্ল্যাটের একতলায় রবীন্দ্রনাথবাবুর চেম্বার। ৮২ বছরের ওই আইনজীবীর স্ত্রী মারা গিয়েছেন আগেই। মেয়ে সুমিত্রাও স্বামীর মৃত্যুর পরে বাবার সঙ্গে থাকেন। বর্তমানে তিনি গাড়ির পালিশ বানানোর ব্যবসা করেন।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়ির পালিশ কিনতে বাড়িতে অনেক লোকেরই যাতায়াত ছিল। গত ৩-৪ দিন ধরে এক জন ছোটখাটো যুবক পালিশ কেনার অছিলায় আসছিল। কিছু পালিশের বোতল কিনেও ছিল সে। বলেছিল, ‘বস আসবে আরও বেশি বরাত দিতে।’ এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ মুখে মাস্ক পরা ওই যুবকই দোতলার ফ্ল্যাটে উঠে সুমিত্রাকে ডেকে একতলায় নিয়ে যায়। নীচে তখন মাস্ক পরা আরও তিন যুবক অপেক্ষা করছিল।
পুলিশ জানায়, সুমিত্রার কথার ফাঁকেই তিন যুবক দোতলায় উঠে রবীন্দ্রনাথবাবুর মুখে ক্লোরোফর্ম দেওয়া কাপড় চেপে অজ্ঞান করার চেষ্টা করে। এর পরে তাঁকে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে ফেলে। দোতলায় এসে ওই দৃশ্য দেখতে পেয়ে সুমিত্রা বাধা দিতে গেলে এক দুষ্কৃতী ঘুষি মেরে তাঁর মুখ ফাটিয়ে দেয়। পরে একই কায়দায় ক্লোরোফর্ম দেওয়া কাপড় চেপে তারা সংজ্ঞাহীন করে দেয় সুমিত্রাকে। ইতিমধ্যে চিৎকার শুনে মনোরঞ্জনবাবু ছুটে এলে তাঁকেও মারধর করে দুষ্কৃতীরা। ঘুষি মেরে তাঁর দাঁত ভেঙে দেয়।
এ দিন আতঙ্কিত সুমিত্রা বলেন, ‘‘ওরা তিন-চার দিন ধরে আমার সঙ্গে দেখা করার নামে সব দেখে গিয়ে ছক কষেছিল। আমাদের মারধর করে ঘরের সব জিনিস লন্ডভন্ড করেছে। কিন্তু কিছু নিয়ে যায়নি।’’ পুলিশ জানিয়েছে, জ্ঞান আসার পরে মনোরঞ্জনবাবু দরজা খুলতে গিয়ে দেখেন, বাইরে থেকে শিকল দেওয়া। দোতলার কাচের জানলা ভেঙে চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা এসে দরজা খুলে দেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। খবর পেয়ে আসেন হাওড়া ক্রিমিনাল কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সমীর বসুরায়চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘দিনেদুপুরে এই ঘটনা! মনে হচ্ছে, বাড়ি লন্ডভন্ড করাই মূল লক্ষ্য ছিল দুষ্কৃতীদের।’’
খবর পেয়ে আসেন হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ অফিসারেরা। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘অন্য উদ্দেশ্যে এই আক্রমণ বলে মনে হচ্ছে। পরিবারের ঘনিষ্ঠ কেউ জড়িত বলে অনুমান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy