পথে নেমে বিক্ষোভ দেখালেন বৌবাজারের সোনার ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। নিজস্ব চিত্র
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জেরে ঘটে যাওয়া বিপর্যয়ে ঘরছাড়া হতে হয়েছে বৌবাজারের একটা বড় অংশের বাসিন্দাদের। মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন করে মঙ্গলবারেই তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু সেই আশ্বাস পেয়েও দুর্ভাবনা কমছে না বৌবাজারের সেকরাতলা লেন, গৌরী দে লেন, দুর্গা পিতুরি লেনে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য সোনার দোকান ও ওয়ার্কশপের সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার কর্মীর। কয়েক লক্ষ টাকার অর্ডারি সোনা কী ভাবে উদ্ধার হবে, কী ভাবে পাওয়া যাবে দোকানে রাখা নগদ টাকা, এই চিন্তাই যেন রাতারাতি অকুলপাথারে ফেলেছে তাঁদের। সমস্যা থেকে মুক্তি পেতেই এ দিন পথে নামলেন তাঁরা।
বৌবাজারে সেকরাতলা লেন, গৌরী দে লেন, দুর্গা পিতুরি লেনে প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক সোনার কাজ করেন। এ রাজ্য তো বটেই, ভিন রাজ্য থেকেও বহু কর্মী এখানে কাজ করতে আসেন। এই পাড়াগুলিতেই ঘর ভাড়া নিয়ে থাকেন তাঁরা। ছোট ছোট গুমটিগুলির মধ্যেই চলে ওয়ার্কশপের কাজ। শনিবারের ঘটনায় এই এলাকাটাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। হঠাৎ করে ঘর ছাড়তে বাধ্য হওয়া ওই ওয়ার্কশপের মালিকেরা মজুত সোনা বের করেও আনতে পারেনি। যাবতীয় দুশ্চিন্তা লক্ষ লক্ষ টাকার সোনা নিয়েই।
আরও পড়ুন:প্রকাশ্যে এল জেএমবি-র উত্তর দিনাজপুর মডিউল, জিহাদি করতে জঙ্গিদের হাতিয়ার এনআরসি!
আরও পড়ুন:‘কংগ্রেসের হাতে ১৫০ বছরের ইতিহাস, আরএসএসের রসদ ৫০০০ বছরের’
দুর্গা পিতুরি লেনে নিজের দোকান রয়েছে উত্তম পালের। তিনি বলছেন, ‘‘শনিবার তালা দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছি। কিছু নিয়ে বের হতে পারিনি। কয়েক লক্ষ টাকার সোনা কী ভাবে উদ্ধার হবে জানি না।’’ মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা সোমনাথ পালেরও দোকান গৌরী দে লেনে। অর্ডার নেওয়ার সময় অগ্রিম নিয়েছিলেন তিনি। কী বলে গ্রাহকদের বোঝাবেন, তা-ই ঠাওর করতে পারছেন না সোমনাথবাবু। ‘‘অনেকে সোনার অর্ডার দিয়ে গিয়েছে। ভাউচারও নিয়েছি। এখন তো কাস্টমার কথা শুনবে না,’’ বলছেন সোমনাথবাবু। তাঁর মতোই প্রায় তিনশো মানুষ এ দিন প্ল্যাকার্ড নিয়ে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি একটাই, শিগগির দোকান খুলতে সাহায্য করুক প্রশাসন। জমায়েতে হাজির হওয়া বহু শ্রমিকের আক্ষেপ, আগেভাগে সতর্ক করলে অন্যত্র মাল সরানো যেত।
দেখুন জমায়েতের ভিডিয়ো:
তবে দোকান খুললেই কি লক্ষ্মীলাভ হবে? গণেশ চতুর্থীর মতো গুরুত্বপূর্ণ দিনে লেনদেন করা যায়নি। মঙ্গলবার বৌবাজারে রাস্তার উপর কিছু দোকান খুললেও খদ্দেরের দেখা মেলেনি। এমন ভাবে আর কিছু দিন চলতে থাকলে হাঁড়ির হাল হবে সোনার কাজে জড়িত শ্রমিকদের। হয়তো ফিরে যেতে হবে ভিন রাজ্যের শ্রমিকদেরও। এই বিপদের আশঙ্কাই ঘুম কেড়ে নিয়েছে সেকরাতলা লেন, গৌরী দে লেন, দুর্গা পিতুরি লেনের ব্যস্ত মানুষগুলির। এই অপেক্ষার শেষ কবে জানা নেই কারও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy