Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

ধস কেড়েছে রুজি, উদ্বেগে শ্রমিকেরা

বৌবাজার অঞ্চলে যে সোনার দোকানগুলি রয়েছে, অধিকাংশের গয়না তৈরির কাজ হয় ওই এলাকা সংলগ্ন সরু গলির মধ্যে ছোট ছোট কারখানায়।

আশঙ্কার কথা বলছেন সেকরাপাড়া লেনের একটি দোকানের কর্মী। নিজস্ব চিত্র

আশঙ্কার কথা বলছেন সেকরাপাড়া লেনের একটি দোকানের কর্মী। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:২৭
Share: Save:

ওঁরা কেউই বৌবাজারের সেকরাপাড়া লেন বা দুর্গা পিতুরি লেনের বাসিন্দা নন। ওই জায়গাটি ওঁদের কর্মস্থল। সেখানে সোনার গয়না তৈরি করেন ওই শ্রমিকেরা। কিন্তু ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য দুই রাস্তার একাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আপাতত বন্ধ হয়ে গিয়েছে কারখানা। কবে খুলবে, জানেন না কেউ। সোমবার সকালে ওই শ্রমিকেরা জড়ো হয়েছিলেন এলাকার একটি গলিতে। জানালেন, এই ঘটনার পরে অন্তত কয়েক হাজার কর্মী কাজ হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন। আর এক মাস বাদেই পুজো। ঠিক তার মুখে এমন হওয়ায় অকূলপাথারে পড়েছেন তাঁরা।

এমনই দুই কর্মী পবিত্র জানা ও চঞ্চল পাল। পবিত্র জানালেন, শনিবার রাতে তাঁরা যখন দোকান বন্ধ করে যান, তখন ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি ঠিক পরের দিন এমন কিছু ঘটতে চলেছে। তিনি বলেন, ‘‘রবিবার ছুটি থাকায় দোকানে আসিনি। সকালে টিভিতে খবর দেখে চমকে উঠি। রাতেই চলে আসি বৌবাজারে। কিন্তু পুলিশ ভিতরে ঢুকতে দেয়নি।’’ আর চঞ্চলের কথায়, ‘‘মাত্র কয়েক হাজার টাকা বেতন পাই। তা দিয়ে সংসার চলে। পুজোর আগে কাজ চলে গেলে কী যে হবে!’’

বৌবাজার অঞ্চলে যে সোনার দোকানগুলি রয়েছে, অধিকাংশের গয়না তৈরির কাজ হয় ওই এলাকা সংলগ্ন সরু গলির মধ্যে ছোট ছোট কারখানায়। সেকরাপাড়া লেন ও দুর্গা পিতুরি লেনেও রয়েছে এমন অজস্র ছোট কারখানা। অনেক কারখানা চলে বসতবাড়ির নীচে। শুধু গয়না তৈরিই নয়, রয়েছে আসবাবপত্রের দোকান থেকে শুরু করে আরও হরেক দোকান। অনুপ মণ্ডল নামে এক সোনার দোকানের কর্মী বলেন, ‘‘নিরাপত্তার জন্য দোকান খুলতে দিচ্ছে না পুলিশ। এ দিকে, অর্ডার দেওয়া বহু গয়না রয়ে গিয়েছে দোকানে। সেগুলি হারিয়ে গেলে বা চুরি হলে দায়িত্ব কে নেবে?’’ স্বপন মণ্ডল নামে এক কারিগর বললেন, ‘‘মেট্রো কর্তৃপক্ষ আগেভাগে সতর্ক করলে কারখানায় রাখা মূল্যবান জিনিসগুলি অন্তত সরাতে পারতাম।’’

সোমবার গণেশ চতুর্থী উপলক্ষে কয়েকটি সোনার দোকানে পুজো হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই ঘটনার পরে সেই পরিকল্পনা বন্ধ রেখেছেন মালিকেরা। এমনই একটি সোনার দোকানের মালিক বললেন, ‘‘আমাদের দোকান রাস্তার উপরে ঠিকই। কিন্তু গয়না তৈরির মূল কাজ হয় ছোট কারখানাগুলিতে। সেটাই যখন বন্ধ, তখন পুজো কী করব?’’ সেকরাপাড়া লেনের একটি দোকানের মালিক বিমল পাল জানান, গয়না তৈরির বহু দামি যন্ত্র রয়েছে কারখানাগুলিতে। ধস নামার আগে যদি সেই যন্ত্রগুলিও সরানো যেত, তাঁরা অনেকটা নিশ্চিন্ত হতে পারতেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Landslide Kolkata Metro Goldsmith
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy