এ বার থেকে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্তারিত তথ্য জোগাড় করে অ্যাপে তুলতে হবে পুলিশ আধিকারিকদের। প্রতীকী ছবি।
শহরে দুর্ঘটনা ঘটলে এত দিন হাতেকলমে তার কারণ খুঁজত পুলিশ। তবে এ বার থেকে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্তারিত তথ্য জোগাড় করে অ্যাপে তুলতে হবে পুলিশ আধিকারিকদের। আগামী সোমবার থেকে এই নিয়ম চালু হতে চলেছে। তাতে দুর্ঘটনার কারণ খোঁজার পাশাপাশি, অভিযুক্ত এবং জখম বা মৃতের তথ্য নথিভুক্ত করতে হবে ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটির আইর্যাড (ইন্টিগ্রেটেড রোড অ্যাক্সিডেন্ট ডেটাবেস) অ্যাপে। সেখানে তথ্য আপলোড করার পরে জাতীয় স্তরে ওই দুর্ঘটনার কারণ পর্যবেক্ষণ করা হবে। জাতীয় স্তর থেকে দুর্ঘটনার বিস্তারিত নথি জানতে পারা যাবে একটি ক্লিকেই।
উল্লেখ্য, ইন্টিগ্রেটেড রোড অ্যাক্সিডেন্ট ডেটাবেসে পুলিশ ছাড়াও থাকছে রাজ্য পরিবহণ, পূর্ত, স্বাস্থ্য দফতর এবং স্টেট ও ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটির সদস্যেরা। দুর্ঘটনা রোধে ওই সব দফতরের পৃথক দায়িত্ব রয়েছে। সকলের দেওয়া তথ্য পর্যবেক্ষণ করে দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বর্তমানে শহরের কোথাও দুর্ঘটনা ঘটলে ট্র্যাফিক পুলিশের সঙ্গে যান স্থানীয় থানার পুলিশকর্মীরা। সোমবার থেকে থানার সাব-ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার কোনও আধিকারিককে যেতে হবে দুর্ঘটনাস্থলে। প্রথমে ওই অ্যাপের মাধ্যমে দুর্ঘটনাস্থলের দ্রাঘিমাংশ-অক্ষাংশ চিহ্নিত করতে হবে। এর পরে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির বিবরণ তুলতে হবে ওই অ্যাপে। অর্থাৎ ওই গাড়ি আগে কোনও দুর্ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বা ট্র্যাফিক আইনভঙ্গ করেছে কি না— সব কিছু খতিয়ে দেখে অ্যাপে লিখে রাখতে হবে। পাশাপাশি কী কারণে ওই দুর্ঘটনা, রাস্তার ত্রুটি বা অন্য কোনও কারণ আছে কি না, তা-ও সেখানে তুলতে হবে। এক পুলিশ কর্তা জানান, দু’টি গাড়িতে সামান্য ধাক্কা লাগার মতো ঘটনা ঘটলেও পুলিশ অফিসারকে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে সে সম্পর্কে তথ্য অ্যাপে নথিভুক্ত করতে হবে। সূত্রের খবর, পুলিশের দেওয়া সেই তথ্যের ভিত্তিতেই অ্যাপে থাকা বাকি দফতরগুলি তাদের ভূমিকা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখবে। যেমন, রাস্তা খারাপের জন্য দুর্ঘটনা ঘটলে পূর্ত বা সংশ্লিষ্ট দফতর সেটি খতিয়ে দেখবে।
লালবাজার সূত্রের খবর, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, কর্নাটক, তামিলনাড়ুতে ২০২১ সাল থেকে আইর্যাড অ্যাপ চালু হয়েছে। এ বার কলকাতা পুলিশেও তা চালু হতে চলেছে। ওই অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিটি দুর্ঘটনার কারণ নির্ধারণ করা হবে। এ জন্য কলকাতা পুলিশের সব থানার আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। অ্যাপে নথি আপলোড করার জন্য তাঁদের আইডি ও পাসওয়ার্ডও দেওয়া হয়েছে। তবে থানাগুলিতে পুলিশ আধিকারিকদের অপ্রতুলতার জন্য এই ব্যবস্থা কতটা কার্যকর হবে, সেই প্রশ্ন রয়েছে। বিভিন্ন থানায় পুলিশকর্মীর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। ফলে প্রতিটি দুর্ঘটনায় সাব-ইনস্পেক্টর বা ডিউটি অফিসারকে যেতে হলে থানার দৈনন্দিন কাজে বাধা পড়তে পারে বলে অভিযোগ করছেন পুলিশকর্মীদের একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy