লড়াকু: বিশেষ ভাবে সক্ষমদের নিয়ে ফুটবল প্রতিযোগিতা। সোমবার, দেশপ্রিয় পার্কে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
ছোটবেলায় পথ-দুর্ঘটনায় হাঁটুর উপর থেকে বাঁ পা বাদ গিয়েছিল ভোলানাথ দলুইয়ের। কিন্তু দমে যাননি শোভাবাজারের বাসিন্দা ভোলানাথ। সাঁতার শিখে জাতীয় ও রাজ্য স্তরে একাধিক পুরস্কার জেতার পরে তিনি এখন বেলেঘাটা সুইমিং ক্লাবের প্রশিক্ষক। নিমতার বাসিন্দা জয়দেব মণ্ডল শৈশবে পথ দুর্ঘটনায় ডান হাত হারালেও সাঁতারে রাজ্য ও জাতীয় স্তরে একাধিক পুরস্কার জিতেছেন।
‘খেলা হবে’ দিবসে তাঁদের মতো বিশেষ ভাবে সক্ষম যুবকেরাই মাঠে দাপিয়ে বেড়ালেন। দেশপ্রিয় পার্কে সোমবার তাঁদের নিয়ে এই আয়োজন হয়েছিল বিধায়ক দেবাশিস কুমারের উদ্যোগে। অংশগ্রহণকারীদের কারও পা নেই, কারও হাত নেই। কেউ মূক ও বধির, কেউ বা পোলিয়োয় আক্রান্ত হয়েছিলেন। ‘খেলা হবে’ দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে তাঁরা খুশি। ন’জন করে সদস্য নিয়ে দু’টি দল এ দিন অংশগ্রহণ করে। টিম ‘ব্রাভো’-র অধিনায়ক ভোলানাথ গোলরক্ষক হিসেবে খেললেন। গোলও বাঁচালেন। তাঁর কথায়, ‘‘বড় দুর্ঘটনা সত্ত্বেও দমে যাইনি। একটা কথাই সকলকে বলতে চাই, কঠোর সংকল্প আর দৃঢ় মানসিকতা থাকলে জয় নিশ্চিত। আজ খেলায় আমরা একটু আলাদা ছিলাম। আমাদের কথা ভাবায় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।’’ বছর কয়েক আগে রাজ্য সরকারের খেল সম্মান পুরস্কারে ভূষিত হন ভোলানাথ। এগারো বার জাতীয় স্তরে সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন তিনি।
বিপক্ষ ‘আলফা’ দলের অধিনায়ক জয়দেবও ছোটবেলায় ডান হাত হারানোর পরে বাড়ির সবাই তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। কিন্তু হার না মানা মানসিকতায় আজ জীবনযুদ্ধে জয়ী জয়দেব। এ দিন জয়দেবরা দু’গোলে হারলেও উপস্থিত সবার মন জিতেছেন। মাঠের এক পাশে বসে বার বার হাততালি দিতে দেখা যাচ্ছিল দেবাশিস কুমারকে। তাঁর কথায়, ‘‘বিশেষ ভাবে সক্ষমরা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ওঁদের সম্মান জানাতেই এই উদ্যোগ।’’ বিশেষ ভাবে সক্ষমদের এই ভাবে একত্রিত করার কারিগর, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি অভিজিৎ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘ওঁদের সব সময়ে উৎসাহ জোগানো আমাদের কর্তব্য।’’ এ দিন খেলার শেষে সবার হাতে মেডেল তুলে দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy