অস্বাস্থ্যকর: লেক টাউন থানা চত্বরে দাঁড় করানো মোটরবাইক। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
পরপর দাঁড় করানো শ’খানেক মোটরবাইক। তার কোনওটির আসন খোলা, কোনওটির যন্ত্রাংশ নেই। দূরে দাঁড় করানো ভাঙা গাড়ি, প্লাস্টিকের টব। পাইপ ফেটে অনবরত জল বেরিয়ে জমছে উঠোনময়। নর্দমার জমা জলে ভনভন করছে মশা। বৃহস্পতিবার এমনই দৃশ্য দেখা গেল লেক টাউন থানায়। যে থানার পাঁচ পুলিশকর্মী এখন ডেঙ্গিতে কাবু।
তাঁদের এই দুর্ভোগ দেখে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ওই থানার বাকি পুলিশকর্মীদের মধ্যেও। পাশের পুলিশ আবাসনেও আতঙ্কিত বাসিন্দারা। পুলিশকর্মীদের ডেঙ্গি হওয়ার খবর শুনে পুরসভা লোক পাঠিয়ে ঝোপঝাড় পরিষ্কার করিয়েছে। কিন্তু বাজেয়াপ্ত হওয়া বা দুর্ঘটনার পরে থানায় নিয়ে আসা বাইকগুলি তাঁরা কোথায় পাঠাবেন, তা ভেবে পাচ্ছেন না পুলিশকর্মীরা।
ভরা হেমন্তে বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গির এমন প্রকোপে দিশাহারা অবস্থা দক্ষিণ দমদম পুরসভার। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, গোটা বর্ষায় ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতার প্রচার চলেছে। সেই সময়ে থানা চত্বর পরিষ্কার করা হত নিয়মিত। কিন্তু বর্ষার পরে গা-ছাড়া মনোভাব দেখা দেওয়াই কাল হল বলে মনে করছেন পুরকর্তারা। এর মধ্যে প্রথমে দুর্গাপুজো এবং পরে কালীপুজোর মুখে অকাল বর্ষণের ফলেই ডেঙ্গি মশার বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়।
থানার ঠিক পাশেই পুলিশ আবাসন। তার পিছনে, সিঁড়ির নীচে জমে রয়েছে পরিষ্কার জল। নিকাশির যে নালা রয়েছে, তাতেও জল জমছে অনবরত। সে জল জমে আছে সেখানেই। আবাসনের এক পুলিশকর্মীর ছেলে, দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া পারভেজ রানাও গত কয়েক দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। কিছুতেই জ্বর কমছে না। বৃহস্পতিবারই চিকিৎসক তার রক্ত পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন।
রয়েছে খোলা নর্দমাও। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
ওই আবাসনে থাকে সাতটি পরিবার। থানার পাশাপাশি আবাসনেও জ্বর ছড়ানোয় আতঙ্কে পড়েছেন তাঁরা। এক আবাসিক জানালেন, অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, তাঁরা আপাতত আবাসন ছেড়ে বর্ধমানে দেশের বাড়িতে যাওয়ার কথা ভাবছেন।
কেন এমন অবস্থা হল? এক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘দেখছেনই তো, চারপাশে জঞ্জাল জমে। এখন ডিউটি করব, না জঞ্জাল সাফাই, জানি না।’’ দক্ষিণ দমদমের পুরপ্রধান বলেন, ‘‘থানা চত্বরের জঞ্জাল আমরা সাফ করে দিয়েছি। আগে জানা থাকলে আগেই করাতাম। পরবর্তীকালে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য কর্মসূচি নেওয়া হবে।’’
লেক টাউন থানায় মোট ২২ জন পুলিশকর্মী রয়েছেন। আইসি-সহ পাঁচ পুলিশকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়ায় উৎসবের মরসুমে আইন-শৃঙ্খলা সামলাতে নাকাল হতে হচ্ছে বাকিদের। বিধাননগর কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, ওই থানার পুলিশকর্মীরা পাঁচ ঘণ্টা বাড়তি ডিউটি করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy