Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
R G Kar Hospital Incident

পাশে দাঁড়াচ্ছে শহর, রাতের আর জি করে তবু আতঙ্কের ছাপ

তরুণী ডাক্তার ছাত্রীর খুন, ধর্ষণ এবং তার পরে হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে দুর্বৃত্তদের তাণ্ডবের পরে দিনের আর জি কর মানেই এখন নেতা, নেত্রী বা বিশিষ্টদের প্রতিবাদে ভরপুর। কিন্তু রাতের আর জি কর ঘিরে অনেকের মধ্যেই আতঙ্ক কাজ করছে।

সহমর্মী: আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক-ছাত্রীকে খুন ও ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে পথে সেন্ট জেভির্য়াসের পড়ুয়ারা। শুক্রবার, পার্ক স্ট্রিটে।

সহমর্মী: আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক-ছাত্রীকে খুন ও ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে পথে সেন্ট জেভির্য়াসের পড়ুয়ারা। শুক্রবার, পার্ক স্ট্রিটে। ছবি: সুমন বল্লভ। 

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৪ ০৮:০৪
Share: Save:

বেহালার বাড়ি থেকে বেরিয়ে শেষ মেট্রো ধরে উত্তর কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন তানিয়া মিস্ত্রি। নতুন আলাপ হওয়া বন্ধু তথা সহযোদ্ধাদের সঙ্গে অ্যাপ-ক্যাবে উঠলেন শুক্রবার ভোর চারটেয়। এ বছর স্বাধীনতা দিবসের শুরু কিংবা শেষ, দুটোই তানিয়ার মতো নবীনাদের কাছে অন্য মাত্রা পেল।

তানিয়া নাট্যকর্মী। যাদবপুরের সপ্তপর্ণা চট্টোপাধ্যায়, দিল্লিতে কর্মরত। কিন্তু প্রতিবাদে উত্তাল কলকাতা ছেড়ে এখন কোথাও যাওয়ার কথা ভাবতে পারছেন না। ছুটির মেয়াদ বাড়িয়ে কিছু দিন থাকতে চান তিনি। দেশের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবসে কলকাতার নানা প্রান্ত থেকে আসা এই মেয়েদের সঙ্গে কোথায় যেন মিলে গেল নবীন চিকিৎসক পিজিটি অমৃতা ভট্টাচার্য বা সায়নী সরকারদের যন্ত্রণা। উত্তরবঙ্গের মেয়ে সায়নী আর জি করেরই ছাত্রী। অমৃতা রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানে তালিম নিচ্ছেন। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তনী অমৃতা বলছিলেন, “এমবিবিএস করার সময়ে মনে হত আমাদের জন্য হাসপাতালই নিরাপদ পরিসর। ছোটখাটো সমস্যা ঘটলেও ভাবতাম হাসপাতালে বিপদ ঘটবে না। সেই বিশ্বাস চুরমার হয়ে গেল। এই আতঙ্ক থেকে বেরোতে পারব না!”

তরুণী ডাক্তার ছাত্রীর খুন, ধর্ষণ এবং তার পরে হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে দুর্বৃত্তদের তাণ্ডবের পরে দিনের আর জি কর মানেই এখন নেতা, নেত্রী বা বিশিষ্টদের প্রতিবাদে ভরপুর। কিন্তু রাতের আর জি কর ঘিরে অনেকের মধ্যেই আতঙ্ক কাজ করছে। ফের হবে না তো প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা বা ইমার্জেন্সিতে হামলার পুনরাবৃত্তি? স্বাধীনতা দিবসের সন্ধ্যাতেও তাই আর জি করে ‘রাত পাহারা’র ডাক উঠেছিল। আন্দোলনরত ডাক্তার, ছাত্রদের প্রতি সংহতি প্রকাশের এই চেষ্টায় মিশে গেলেন বিনোদন জগতের চেনা মুখ থেকে অখ্যাত, অচেনা শহরবাসীও। এ দিনও পুরোভাগে মেয়েরাই। ৬৩ বছরের মুক্তি গোস্বামী রাত দখলের উদ্দীপনা থেকে প্রেরণার ছোঁয়াচ পাচ্ছেন। অভিনেত্রী সোহিনী সরকারের আবার মত, “একটি রাতের আন্দোলনে থামলে চলবে না। সুবিচার ছিনিয়ে আনার পথ খুঁজতেই হবে।”

আর জি করের এই জমায়েত শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড় পর্যন্ত মিছিল করে গেল এবং ফিরে এল। স্লোগানে নানা দাবির মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ভূমিকায় ক্ষোভ স্পষ্ট। তবে হাসপাতালের কাছে এসে
চেঁচিয়ে স্লোগান বন্ধ। প্রতিবাদীরা আলোচনা করলেন, পরে আবার কবে পথে নামা যায়। এ দিনও সৃজিত মুখোপাধ্যায়, বিরসা দাশগুপ্তের মতো পুরুষ সহযোদ্ধারা কিছুটা
পিছনে দাঁড়িয়ে।

জনসাধারণের প্রতিবাদী আন্দোলনের যাঁরা ডাক দিচ্ছেন, তাঁদের আলোচনায় উঠে এল, কী ভাবে আগামী দিনে আর জি করের আন্দোলনকারীদের সাহস জোগাতে রাতে পাশে থাকা যায়। তবে হাসপাতালে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা নিয়ে পুলিশও দায়িত্ব এড়াতে পারে না বলে এখনও আর জি কর হাসপাতাল চত্বরে ক্ষোভ আছড়ে পড়ছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy