হাহাকার: কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় মৃত শুভজিৎ মালি। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁর স্ত্রী মিঠু ও মা কাকলি মালি। সোমবার, জামির লেনে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
সোমবার ছিল তাঁর ১১ বছরের মেয়ের জন্মদিন। তাই প্রথমে এক দিন পরে বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও সেই পরিকল্পনা বদলান তিনি। মেয়ে জানিয়েছিল, বাবা বাড়ি এলে তবেই কেক কাটবে। সোমবার বাড়ি পৌঁছনোর জন্য কাজ সেরে নির্ধারিত ট্রেনের বদলে তড়িঘড়ি তৎকালে টিকিট কেটে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ধরেছিলেন তিনি। সেটাই যেন কাল হল। মেয়ের জন্মদিনে কলকাতার জামির লেনের বাড়িতে এসে পৌঁছল শুভজিৎ মালির (৩১) মৃত্যুর খবর।
উত্তরবঙ্গের রাঙাপানিতে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে শুভজিতের। সোমবার দুপুরে সেই খবর এসে পৌঁছনোর পরেই জামির লেনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শুভজিতের বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী মিঠু, ১১ বছরের মেয়ে সৃষ্টি এবং দেড় বছরের ছেলে শিবম। রয়েছেন শুভজিতের বাবা-মা, দাদা-বৌদি। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর আসার পরেই ঘটনাস্থলে রওনা দিয়েছেন দাদা সুরজিৎ। সঙ্গে গিয়েছেন খুড়তুতো ভাই অজয় মালি এবং পাড়ার এক যুবক। সুরজিতের স্ত্রী ডলি মালি বলেন, ‘‘আজ মেয়ের জন্মদিনের জন্য কেক নিয়ে বাড়িতে আসার কথা ছিল শুভজিতের।’’ সৃষ্টি একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। স্থানীয় বাসিন্দা চন্দনা মণ্ডল বলেন, ‘‘শুনলাম, সৃষ্টি জন্মদিনে সোনার হার পরার আবদার করেছিল শুভজিতের কাছে। সেই মতো হারও গড়িয়েছিল শুভজিৎ।’’ তিনি আরও জানান, সৃষ্টির জন্য বাড়িতে পাঁচ রকম ভাজা এবং ভাত রান্না করা হয়ে গিয়েছিল এ দিন। আরও রান্নার তোড়জোড় হচ্ছিল। দুঃসংবাদ আসার পরে সব বন্ধ হয়ে যায়। স্বামীর মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পরে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই তাঁর স্ত্রী মিঠু। তাঁকে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে রাখা হয়েছে। একটানা কেঁদে চলেছেন শুভজিতের মা কাকলি মালিও। তিনি বলতে থাকেন, ‘‘ছেলেটা কোথায় চলে গেল! আর ফিরবে না।’’ বাবলু হালদার নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘‘পাড়ার কারও বিপদ-আপদে ঝাঁপিয়ে পড়ত শুভজিৎ। কী যে হয়ে গেল!’’
শুভজিতের পরিবার সূত্রের খবর, গাড়ি ডেলিভারির কাজ করতেন তিনি। এ বার গাড়ি চালিয়ে নাগাল্যান্ডে পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন তিনি। ফেরার কথা ছিল ট্রেনে। তাঁর সঙ্গে আরও দু’টি গাড়ি নিয়ে নাগাল্যান্ড গিয়েছিলেন শুভজিতের বন্ধু সূর্যশেখর পাণ্ডা এবং কসবার কুমোরপাড়ার বাসিন্দা এক ব্যক্তি। শুভজিৎ এবং সূর্যশেখর কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ধরলেও অন্য ব্যক্তি এই ট্রেন ধরতে পারেননি।
সূর্যশেখরও জামির লেনের বাসিন্দা। ডলি জানান, সূর্যশেখর তাঁর বান্ধবীকে ফোন করে দুর্ঘটনায় শুভজিতের মৃত্যুর খবর জানান। ওই বান্ধবী তাঁদের খবর দেন। জখম হয়েছেন সূর্যশেখরও। তাঁর ভাই চন্দ্রশেখর পাণ্ডা বলেন, ‘‘বুকে-হাতে-পায়ে আঘাত নিয়ে দাদা
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy