ওয়াকফ আইনের সংশোধনী নিয়ে উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন স্থানে চলা অশান্তি-আন্দোলনের মধ্যেই অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা দাবি করলেন, “প্রায় ৪০% মুসলিম জনসংখ্যা থাকা সত্ত্বেও, অসমে কেবলমাত্র তিনটি স্থানে শান্তিপূর্ণ ও বিচ্ছিন্ন বিক্ষোভ ছাড়া কোনও অশান্তিই হয়নি। শান্তি ও ঐক্য বজায় রাখার জন্য রাজ্যের পুলিশবাহিনী এবং বাসিন্দাদের প্রশংসা ও ধন্যবাদ প্রাপ্য। অসমের মানুষ জাতি, ধর্ম, সম্প্রদায় ও ধর্ম নির্বিশেষে আত্মিক দিক থেকে ঐক্যবদ্ধ, আনন্দ ও সম্প্রীতির সঙ্গে বহাগ বিহুকে স্বাগত জানাতে তৈরি।"
হিমন্তের মন্তব্য প্রসঙ্গে ইউডিএফ এবং অসম রাজ্য জমিয়ত উলেমার সভাপতি তথা তিন বারের প্রাক্তন সাংসদ বদরুদ্দিন আজমল বলেন, ‘‘বিজেপি সরকার জনমত উপেক্ষা করে বিলটি পাশ করেছে। সে জন্য অসমেও একই ভাবে সর্বত্র বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। এখানে জমিয়ত-সহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন গণতান্ত্রিক ভাবে ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। অসমের মুসলিমরা শান্তিপ্রিয়, তাই গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা রেখে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছেন।’’
এ দিকে, ওয়াকফ সংশোধনী নিয়ে মণিপুরে উত্তেজনা অব্যাহত থাকল। সংঘর্ষে মেইতেইদের সমর্থন আগে বিজেপি সরকারের প্রতি থাকলেও ওয়াকফ সংশোধনীকে ঘিরে মেইতেই পাঙ্গালদের (মেইতেই মুসলিম সম্প্রদায়) এখন আর পাশে পাচ্ছে না তারা। সংখ্যালঘু ছাত্র সংগঠন মণিপুর (এমএসএএম) এবং অল মণিপুর মুসলিম ছাত্র সংগঠন (এএমএমএসও) আজ একটি যৌথ বিবৃতি জারি করে দাবি করে, তিন মুসলিম বিধায়ক আব্দুল নাসির (জেডিইউ, লিলং), শেখ নুরুল হাসান (এনপিপি, ক্ষেত্রীগাঁও) এবং মহম্মদ আশাবুদ্দিন (বিজেপি, জিরিবাম) এবং বিশিষ্ট মুসলিম নেতাদের এই সংশোধনী নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। নুরুল ইতিমধ্যেই সংশোধনীর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন। সংশোধনী সমর্থন করায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহেরও তীব্র সমালোচনা করেন মেইতেই পাঙ্গাল প্রতিবাদকারীরা।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)