Advertisement
E-Paper

ফোর্ট উইলিয়ামে ঢোকার মুখে ধৃত ভুয়ো সেনা

জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুর ১টা নাগাদ বরোদা একটি বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে ফোর্ট উইলিয়ামের পূর্ব দিকের দরজা দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করেন। সেখানে তাঁর পরিচয় জানতে চাওয়া হলে মোবাইলে মেজর এম এস চৌহান নামের একটি পরিচয়পত্র দেখান।

An image of Arrest

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৪ ০৮:২১
Share
Save

রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তাকর্মীর পরিচয় দিয়ে বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে ফোর্ট উইলিয়ামে ঢোকার মুখে ধরা পড়লেন এক তরুণ। শুক্রবার দুপুরে এই ঘটনার পরে সন্ধ্যার দিকে সেনার তরফে তাঁকে কলকাতা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এই তরুণের বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণার পুরনো অভিযোগ পেয়েছে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত ই এম বাইপাসের ধারের একটি হোটেল কর্তৃপক্ষের প্রতারণার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতের আসল নাম বরোদা সুধীর। তিনি আদতে বিশাখাপত্তনমের বাসিন্দা। কিন্তু তাঁর বয়স কত, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। নিজেকে ২৪ বছর বয়সি, বি-টেক পড়ুয়া বলে দাবি করলেও পুলিশ জেনেছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনি ওড়িশার একটি নাবালকদের হোমে ছিলেন। ২৪ বছর বয়স হলে তা কী করে সম্ভব, তা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।

জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুর ১টা নাগাদ বরোদা একটি বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে ফোর্ট উইলিয়ামের পূর্ব দিকের দরজা দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করেন। সেখানে তাঁর পরিচয় জানতে চাওয়া হলে মোবাইলে মেজর এম এস চৌহান নামের একটি পরিচয়পত্র দেখান। তাতে সেনার পদ উল্লেখ করা ছিল। কিন্তু ফোর্ট উইলিয়ামের নিরাপত্তারক্ষীদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সেনা কর্তাদের ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর কথাবার্তায় সন্দেহ আরও বাড়ে সেনা কর্তাদের। এর পরেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। সেনা এবং পুলিশ সূত্রে এর পরে খোঁজ করে জানা যায়, ওড়িশার ওই নাবালকদের হোম থেকে গত ফেব্রুয়ারিতে ছাড়া পেয়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি তিনি কটকের একটি হোটেলে ওঠেন। কিন্তু সেখানে ৬৩৯৩ টাকার বিল না মিটিয়েই একটি ট্যাক্সিতে উঠে ফেরার হয়ে যান। ১৪ মার্চ তিনি হাওড়া স্টেশনে পৌঁছন। কিন্তু সেই ট্রেন যাত্রার টিকিট তিনি দেখাতে পারেননি। হাওড়া স্টেশন থেকে তিনি একটি ক্যাবে করে কলকাতা বিমানবন্দরে যান। সেখান থেকেই তিনি ই এম বাইপাসের ধারের একটি হোটেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখানে এক রাত কাটিয়ে শুক্রবার দুপুরে তিনি ওই হোটেল থেকেই একটি বিলাসবহুল ক্যাব ভাড়া নিয়ে বেরিয়ে পড়েন।

পুলিশ ক্যাবের চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে জেনেছে, তাঁর কাছেও নিজেকে রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তাকর্মী বলে পরিচয় দিয়েছিলেন ওই তরুণ। নিজের প্রভাব দেখাতে ওই চালকের মেয়েকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি। ওই ক্যাবচালকের গাড়িতে চেপেই ফোর্ট উইলিয়ামের ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন বরোদা। সেই সময়ে তিনি ধরা পড়ে যান। পুলিশ জেনেছে, কটক এবং কলকাতার হোটেলের দু’জায়গাতেই হায়দরাবাদ পুলিশের কনস্টেবল সুনীল কুমারের নামে তিনি ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন। অনলাইনে টাকা লেনদেনের (ইউপিআই) অ্যাপের মাধ্যমে ভাড়া মেটানোর কথা বললেও তা করেননি। মোবাইলে টাকা মেটানোর একটি ছবি এডিট করে নিতেন তিনি। যা দেখতে সংশ্লিষ্ট ইউপিআই অ্যাপের স্ক্রিনের মতো। টাকা মেটানোর সময়ে স্ক্যানারে স্ক্যান করার কথা বলে সেই এডিট করা ছবিই দেখাতেন। যতক্ষণে হোটল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বুঝতেন, তত ক্ষণে তিনি ক্যাবে উঠে ফেরার হয়ে যেতেন।

এই তরুণকে হেফাজতে পেয়ে পুলিশ ই এম বাইপাসের ধারের ওই হোটেলে হানা দেয়। সূত্রের খবর, সেখানে তাঁর ভাড়ায় নেওয়া ঘর থেকে কোনও নথিপত্র বা জরুরি সামগ্রী উদ্ধার হয়নি। শনিবার রাত পর্যন্ত তাই স্পষ্ট হয়নি, তরুণ কেন ফোর্ট উইলিয়ামে প্রবেশ করতে চাইছিলেন। পুলিশ আপাতত তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

arrest fort william army Fake

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}