আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। — ফাইল চিত্র।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে এ বার অভিযোগের আঙুল তুললেন সেখানকারই প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি। মঙ্গলবার তিনি অভিযোগ করেন, অনেক পড়ুয়ার ‘ক্ষতি’ করেছেন সন্দীপ। বিষয়টি নিয়ে তিনি লিখিত অভিযোগ জানানোর পরেও লাভ হয়নি। তবে হাসপাতালে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের তদন্তে যে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে নবান্ন, তা নিয়ে আখতার আশাবাদী। তাঁর আশা, সন্দীপ ‘শাস্তি’ পাবেন। তবে এ বিষয়ে সন্দীপের কোনও প্রতিক্রিয়া জানা সম্ভব হয়নি। কারণ মঙ্গলবার সকাল থেকে সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই তাঁকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। সেই আবহে কলকাতার এই সরকারি মেডিক্যাল কলেজে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন মহল থেকে আঙুল উঠেছে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপের দিকে। তাঁকে পাঁচ বার সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার জানালেন, সন্দীপের বিরুদ্ধে এর আগে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘অভিযোগ করার পরেও পদক্ষেপ করা হচ্ছিল না ওঁর বিরুদ্ধে। এক সময় মনে হয়েছিল আমি হেরে যাব।’’ তবে সিট গঠনের সিদ্ধান্তের পর আখতার রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার এবং স্বরাষ্ট্র দফতরকে ধন্যবাদ। উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। আশা করি, ওঁর অনিয়ম ধরা পড়বে। উনি শাস্তি পাবেন।’’
কেন সন্দীপের শাস্তির দাবি তুলছেন আখতার, তা-ও জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক ছাত্রের ক্ষতি করেছেন তিনি। পড়ুয়াদের ফেল করিয়ে দিতেন। ওয়ারেন্ট ইস্যু করাতেন। পাশ করানোর জন্য পড়ুয়াদের কাছ থেকে টাকা নিতেন। অনেক অভিযোগ।’’ আখতার জানিয়েছেন, তিনি ডেপুটি সুপার থাকাকালীন এ সব ‘অনিয়ম’ দেখেছেন। সেই নিয়ে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘সন্দীপের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করি। তখন কিছু হয়নি। এখন তদন্ত হচ্ছে। আশা করি, ও শাস্তি পাবে।’’
২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে এ পর্যন্ত আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে যে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তার তদন্তে সম্প্রতি একটি সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। তদন্তের প্রয়োজনে ওই বিশেষ তদন্তকারী দল সংশ্লিষ্ট সব সরকারি দফতর এবং বেসরকারি এজেন্সির নথিপত্র পরীক্ষা করে দেখতে পারবে। যে সময় থেকে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত হচ্ছে, সে সময় অধ্যক্ষ পদে ছিলেন সন্দীপ। আরজি করে নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। ওই চিকিৎসক পড়ুয়ার দেহ উদ্ধারের পর থেকে আরজি করে যে আন্দোলন শুরু হয়, তাতে চিকিৎসক থেকে পড়ুয়া— সকলের অন্যতম দাবি ছিল সন্দীপের অপসারণ কিংবা পদত্যাগ। আন্দোলনের চাপে পড়ে সোমবার, ১২ অগস্ট পদত্যাগ করেন সন্দীপ। স্বাস্থ্য দফতরে গিয়ে নিজের পদত্যাগপত্র জমা দেন। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সন্দীপকে কলকাতার অন্য একটি সরকারি হাসপাতালে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ করে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। সেখান থেকেও তাঁর অপসারণের দাবিতে শুরু হয় আন্দোলন। এরই মধ্যে কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দেয় সন্দীপকে ‘লম্বা ছুটি’তে যেতে। সেই থেকে ছুটিতেই ছিলেন সন্দীপ। তাঁকে ডেকে পাঁচ বার জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। মঙ্গলবার সকালেও তিনি সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়েছেন। তবে কী নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ, তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy