ভাগ্নে শামিম শেখকে নিয়ে বাবলু শেখ (বাঁ দিকে)। মঙ্গলবার, এন আর এসে। নিজস্ব চিত্র
আমরা থাকি মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে। বাড়ির পাশেই পরিবার নিয়ে থাকে আমার ভাগ্নে শামিম। কয়েক সপ্তাহ হয়ে গেল, ও জন্ডিসে আক্রান্ত। চিকিৎসা চলছিল বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু গত কয়েক দিন আগে লক্ষ করলাম, শামিমের শরীরের বাঁ দিকটা অসাড় হয়ে গিয়েছে। বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারেরা বললেন, এক বার কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে দেখাতে। সেই মতো আমরা সোমবার ভোরে ধুলিয়ান থেকে গাড়ি ভাড়া করে ভাগ্নেকে নিয়ে আসি পিজি-তে। সেখানকার ডাক্তারবাবুরা ওকে পরীক্ষা করে বলেন, ভর্তি করতে হবে। কিন্তু তার পরপরই জানতে পারি, বেড ফাঁকা নেই। হাসপাতাল থেকেই বলল, আপনারা রোগীকে নিয়ে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। অগত্যা সন্ধ্যার পরে শামিমকে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে ছুটলাম ওই হাসপাতালে।
অনেক অনুনয়-বিনয় করে এক জনের মাধ্যমে ভাগ্নেকে নিয়ে গেলাম এন আর এসের ইমার্জেন্সিতে। ডাক্তারবাবুরা পরীক্ষা করে বলে দিলেন, ওই হাসপাতালেই ভর্তি হয়ে যাবে। তার আগে ইমার্জেন্সিতেই কিছু ক্ষণ রাখা হল ভাগ্নেকে। ভাবলাম, যাক, এ বার অন্তত চিকিৎসাটুকু শুরু হবে। কিন্তু ভোগান্তির যে সেই শুরু, কে ভেবেছিল! রাতে হঠাৎ শুনি, হাসপাতালে গোলমাল হচ্ছে। চার দিক পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। দেখি, ইমার্জেন্সি থেকে সব ডাক্তারেরা বেরিয়ে গেলেন। এক জন জানিয়ে গেলেন, পরে শামিমের চিকিৎসা হবে।
কিছু ক্ষণ পরেই শুনি, কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন ডাক্তারবাবুরা। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত কোনও চিকিৎসাই হল না ছেলেটার। যাঁর সাহায্য নিয়ে ওকে এন আর এসে দেখিয়েছিলাম, তিনিই বললেন অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে। কিন্তু যাব কোথায়? গোটা দুটো দিন ছোটাছুটি করে তখন রীতিমতো দিশাহারা অবস্থা। শামিমের বাড়ির লোকের সঙ্গে ফোনে কথা বললাম। ওর তো মা-বাবা কেউ নেই। আমিই কলকাতায় নিয়ে এসেছি চিকিৎসা করাতে। তা না করিয়েই ফিরিয়ে নিয়ে যাব ছেলেটাকে? এমনিতেই ভাগ্নে প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় রয়েছে।
শেষে বাড়ির অন্যদের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করি, বহরমপুর ফেরার আগে এক বার অন্তত শেষ চেষ্টা করি। তাই ওকে নিয়ে যাচ্ছি ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তো আর ডাক্তারবাবুরা কাজ বন্ধ করেননি (তখনও ওই হাসপাতালে কর্মবিরতি শুরু হয়নি)। দুপুরে ভাগ্নেকে নিয়ে সেখানে পৌঁছই। কিন্তু সেখানেও ভোগান্তি আমাদের পিছু ছাড়েনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy