বাঁ দিক থেকে সুজিত বসু (ফাইল চিত্র), সমুদ্র বসু। — নিজস্ব চিত্র।
এখনও তল্লাশি চলছে। তার মাঝেই মন্ত্রী সুজিত বসুর বাড়ি থেকে তাঁর ছেলে সমুদ্র বসুকে নিয়ে বার হন ইডি আধিকারিকেরা। নিয়ে যান শ্রীভূমি ক্লাবের উল্টো দিকের একটি ফ্ল্যাটে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওই ফ্ল্যাটে সুজিতের একটি দফতর রয়েছে। তিনি সেখানে মাঝেমধ্যে বসেন। তবে সুজিতের ছেলে সমুদ্র বসু জানিয়েছেন, একটা প্রক্রিয়া চলছে। তিনি সাহায্য করছেন।
তার প্রায় এক ঘণ্টা পর সেই ফ্ল্যাট থেকে সমুদ্রকে নিয়ে বেরিয়ে আসেন ইডি অফিসারেরা। সুজিত যে ফ্ল্যাটে রয়েছেন, সেখানেই নিয়ে যাওয়া হয় সমুদ্রকে। পথে তিনি বলেন, ‘‘সব ঠিকঠাক চলছে। কোনও সমস্যা নেই। আইন আইনের পথেই চলবে।’’ সকাল থেকে তল্লাশি অভিযানে চাপ পড়েছে কি না জানতে চাইলে সমুদ্র জানান, সে রকম কিছু হয়নি। সব রকম সহযোগিতা করেছেন বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী-পুত্র।
শুক্রবার সকালে পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে দমকলমন্ত্রী সুজিতের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। সকাল ৭টা নাগাদ মন্ত্রীর লেক টাউনের দু’টি বাড়িতে পৌঁছন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। মন্ত্রীর বাড়ি বাইরে থেকে ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সন্দেশখালির ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে যথেষ্ট প্রস্তুত হয়েই এসেছে তারা। হাতে রয়েছে ঢাল। মাথায় হেলমেট। সুজিতের বাড়ির নীচেও রয়েছে পুলিশ। তল্লাশির মাঝেই বিকেল নাগাদ সুজিতের ছেলে সমুদ্রকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন ইডির তদন্তকারী অফিসার। সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। তাঁকে নিয়ে শ্রীভূমি ক্লাবের উল্টো দিকের একটি ফ্ল্যাটে যান ইডি আধিকারিকেরা। সমুদ্র বলেন, ‘‘একটা প্রক্রিয়া চলছে। আমরা সহযোগিতা করছি।’’
এর আগে পুর নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের সূত্রে সুজিতকে তলব করেছিল অন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। গত বছরের ৩১ অগস্ট তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, সেই নথির সূত্রেই সুজিতের বাড়িতে হানা দিয়েছে ইডি। ২০১৬ সালে দক্ষিণ দমদম পুরসভার উপপ্রধান ছিলেন সুজিত। সেই সময় পুর নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছিল বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আর সেই সূত্র ধরেই ইডি শুক্রবার সকালে দমকলমন্ত্রীর বাড়িতে হানা দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, এর আগে ইডির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন সুজিত। দমকলমন্ত্রীর অভিযোগ ছিল, তাঁর নাম বলিয়ে নেওয়ার জন্য তাঁরই প্রাক্তন আপ্তসহায়ককে চাপ দিচ্ছেন ইডি আধিকারিকেরা।
শুক্রবার সকালে পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলার আরও দুই জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় এবং উত্তর দমদম পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুবোধ চক্রবর্তীর বাড়িতে হানা দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাপস বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর বৌবাজারের বাড়িতে হানা দিয়েছে ইডি। সুবোধ উত্তর দমদম পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। আগে উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যানও ছিলেন সুবোধ। শুক্রবার সকাল পৌনে ৭টা নাগাদ বিরাটির খলিসাকোটা পল্লিতে তাঁর বাড়িতে ঢোকে ইডি আধিকারিকের দল। সুবোধের বাড়ির চারপাশেও মোতায়েন রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy