Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
Kolkata East West Metro

একটি সুড়ঙ্গ দিয়েই ছুটবে কি ইস্ট-ওয়েস্ট

বৌবাজারে সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ের ধাক্কা সামলে পূর্বের সঙ্গে পশ্চিম জুড়বে কত দিনে, সেই প্রশ্ন উঠছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

ফিরোজ ইসলাম
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২০ ০৫:৫২
Share: Save:

এসপ্লানেড থেকে শিয়ালদহের মধ্যে অন্তত একটি সুড়ঙ্গের কাজ শেষ করতে পারলেই হাওড়া ময়দান থেকে পাঁচ নম্বর সেক্টর পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে ছুটতে পারে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। সে ক্ষেত্রে বৌবাজারে বিপর্যয়ের মুখে পড়া পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের কাজ শেষ হওয়ার জন্য পুরো সময় অপেক্ষা না করলেও চলবে, জানাচ্ছেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর আধিকারিকদের একটি বড় অংশ।

সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টর থেকে ফুলবাগান পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় যাত্রী পরিবহণের যাবতীয় ব্যবস্থা তৈরি। যে কোনও দিনই খুলে দেওয়া হতে পারে ফুলবাগান পর্যন্ত ওই পথ। কিন্তু বৌবাজারে সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ের ধাক্কা সামলে পূর্বের সঙ্গে পশ্চিম জুড়বে কত দিনে, সেই প্রশ্ন উঠছে। তবে মেট্রোকর্তারা জানাচ্ছেন, বিপর্যয়ের মুখে পড়া সুড়ঙ্গটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার অপেক্ষা না করে এসপ্লানেড থেকে শিয়ালদহের মধ্যে একই সুড়ঙ্গ দিয়ে দু’দিকের মেট্রো চলাচলের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। আর তা করা গেলে বছর দুয়েকের মধ্যেই হাওড়া থেকে সেক্টর ফাইভ ছুটতে পারে মেট্রো।

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সূত্রের খবর, সেক্টর ফাইভ থেকে ফুলবাগান পর্যন্ত মেট্রোয় যাত্রী পরিবহণের ব্যবস্থা করতে গিয়ে শিয়ালদহ স্টেশনের পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত যাবতীয় পরিকাঠামোগত কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে। মাটির নীচে শিয়ালদহ স্টেশনের সামান্য কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তবে এসপ্লানেড থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্টের পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের কাজ মিটলেই টানেল বোরিং মেশিন তুলে ফেলে ওই বাকি থাকা কাজ শেষ করে ফেলা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত পাশাপাশি দু’টি লাইনে মেট্রো চালাতে সে ভাবে সমস্যা নেই।

একই ভাবে হাওড়া ময়দান থেকে মাটির নীচ দিয়ে গঙ্গা পেরিয়ে, ব্রেবোর্ন রোড, বি বা দী বাগ হয়ে এসপ্লানেড পর্যন্ত জোড়া সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ আগেই সম্পূর্ণ হয়েছে। ওই অংশের মেট্রোপথে হাওড়া ময়দান, হাওড়া, বি বা দী বাগ এবং এসপ্লানেড স্টেশন তৈরির কাজ অনেক দূর এগিয়েও গিয়েছে। জোড়া সুড়ঙ্গে লাইন পাতার কাজও প্রায় শেষের মুখে। তবে ওই অংশে বিদ্যুৎ সংযোগ, সিগন্যালিং-সহ অন্যান্য কাজ শেষ করতে আরও বছর দেড়েক লাগতে পারে বলে মেট্রোকর্তাদের অনুমান।

আরও পড়ুন: সুরক্ষা ছাড়াই কেনাবেচা রাতের ফলবাজারে

ভবিষ্যতে যাত্রী-সংখ্যার কথা ভেবে এসপ্লানেড এবং শিয়ালদহ— এই দুই স্টেশনেই তিনটি করে প্ল্যাটফর্মের ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে দু’প্রান্তের মধ্যে এক দিকের ট্রেনকে কয়েক মিনিট দাঁড় করিয়ে রেখে পর্যায়ক্রমে দু’দিকেই ট্রেন চালানো সম্ভব বলে জানাচ্ছেন মেট্রোকর্তারা। তবে সে জন্য এসপ্লানেড থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত ২.৪৫ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের কাজ সম্পূর্ণ করতেই হবে। মেট্রো সূত্রের খবর, পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গে বিপর্যয়ের পরে টানেল বোরিং মেশিন ‘চণ্ডী’কে তুলে আনা যায়নি। এই অবস্থায় লকডাউন পরিস্থিতি শেষ হলে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের কাজ নির্বিঘ্নে শেষ করাটাই মেট্রো কর্তৃপক্ষের কাছে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ওই কাজ শুরু করার প্রস্তুতি চলছে। পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের কাজ সম্পূর্ণ হলে শিয়ালদহে টিবিএম ‘উর্বী’কে ফের তুলে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গে বসিয়ে বৌবাজার পর্যন্ত দ্বিতীয় সুড়ঙ্গের কাজ শেষ করা হবে। পরে বৌবাজার থেকেই ‘চণ্ডী’ এবং ‘উর্বী’কে মাটির নীচ থেকে তুলে আনা হবে।

আরও পড়ুন: শহরে রেকর্ড সংক্রমণ, বেসরকারি ক্ষেত্রে শয্যা বৃদ্ধির প্রস্তাব

তবে দুর্ঘটনাগ্রস্ত পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার আগে অন্যান্য পরিকাঠামোগত কাজ যদি সময় মতো শেষ করা যায়, তা হলে সম্পূর্ণ মেট্রোপথ খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা থাকবে না। এ প্রসঙ্গে এক মেট্রোকর্তা বলেন, ‘‘ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সিগন্যালিং ব্যবস্থা খুবই আধুনিক। যে কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে দু’দিকে ট্রেন চালানো যাবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE