সিংহী পার্কে ঠাকুর দেখার ভিড়। — নিজস্ব চিত্র।
ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় হানা দিয়েছিল বৃষ্টি। রাতের অন্ধকারে আবহাওয়ার সেই চোরাগোপ্তা আক্রমণ সামলে নিয়েছেন দর্শনার্থীরা। সেই সঙ্গে তাঁরা নিয়েছেন নতুন শিক্ষাও— যে কোনও ভাবেই হোক হারিয়ে দিতে হবে এই ‘অসুর’কে। রবিবার সপ্তমীর সকাল থেকে সেই ছবিই দেখা গেল দক্ষিণ কলকাতার পুজো মণ্ডপগুলিতে। আকাশের চাঁদোয়ায় সূর্য দেখা দেওয়ার কিছুটা পর থেকেই ভিড় বেড়ে উঠল শহরের রাস্তায়। তার পর যত সময় গড়াল ততই সেই ভিড় স্রোতের মতো আছড়ে পড়ল প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে।
একে মহাসপ্তমী, দুইয়ে রবিবার। সকাল সকাল প্রস্তুতি নিয়ে শহরতলি এবং মফস্সল থেকে অনেকেই বেরিয়ে পড়েছিলেন কলকাতার উদ্দেশে। আর খাস কলকাতার লোকজন তো ছিলই। ফলে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশই দানা বাঁধতে থাকে ভিড়। তার পর তা একটা বিরাট আকার ধারণ করে চষে ফেলতে থাকে দক্ষিণ কলকাতার পুজো মণ্ডপগুলি। গড়িয়াহাট, একডালিয়া, হিন্দুস্তান পার্ক, হিন্দুস্তান ক্লাব, দেশপ্রিয় পার্কের পুজোগুলি দক্ষিণ কলকাতার সেরার শিরোপাধারী। সপ্তমীর সকালে দর্শকদের ভিড় ক্রমশ বাড়তে থাকে ওই পুজো মণ্ডপগুলিতে। যা দেখে অনেকেই মনে করছেন, এই জনসমাগমের কাছে অনেকটা ছোট হয়ে গিয়েছে পঞ্চমী এবং ষষ্ঠীর রাতের ভিড়ের আয়তন। পরিস্থিতি এমন হয় যে, ভিড়ের চাপে গড়িয়াহাটে যান নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।
পুজোয় আকাশের মুখ ভার। সপ্তমীতেও মাঝারি বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। পাশাপাশি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কিছু এলাকায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলেও দেওয়া হয়েছে পূর্বাভাস। এই পরিস্থিতিতে বৃষ্টিকে ‘ওয়াকওভার’ দিতে রাজি নন দর্শকরা। তাই সকাল থেকেই প্যান্ডাল হপিংয়ের আয়োজন। দেশপ্রিয় পার্কের পুজো মণ্ডপের কাছে দাঁড়িয়ে উত্তর কলকাতার যুবক তনুজ মৃধা তো বলেই দিলেন, ‘‘বৃষ্টি হলেও আমরা ঠাকুর দেখব। কেউ আমাদের আটকাতে পারবে না। খুব জোরে নামলে কোনও একটা রেস্তোরাঁয় সটান ঢুকে যাব। হাঁটতে হাঁটতে খিদেও তো পায় না কি?’’
হিন্দুস্তান পার্কের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন নদিয়ায় কৃষ্ণনগর থেকে প্রথমবার কলকাতায় ঠাকুর দেখতে আসা দম্পতি অর্ণব মোহন্ত গুপ্ত এবং তাঁর স্ত্রী মন্দিরা মোহন্ত গুপ্ত। দু’জনেই একবাক্যে জানিয়ে দিলেন, তাঁরা সকাল সকাল ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছেন রাতের ভিড় এড়াতেই। এ সব দেখেশুনে মনে পড়ে গেল, ছোটবেলা থেকে শুনে আসা রসিকতাটা— ‘রেনি ডে’-তে ছুটি হবে এক দিন কেউ আর স্কুল কামাই করেনি। ছুটির লোভে সকলেই হাজির হয়েছিল স্কুলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy