থমকে: এই ইনটেক জেটি তৈরি নিয়েই চলছে চাপান-উতোর। —ফাইল চিত্র।
নতুন দু’টি জলপ্রকল্পের জন্য গঙ্গা থেকে জল তুলতে ‘ইনটেক’ জেটি তৈরি করছিল হাওড়া পুরসভা। উদ্দেশ্য ছিল, গঙ্গা থেকে জল তুলে তা পাইপলাইনের মাধ্যমে মূল প্লান্টে নিয়ে গিয়ে পরিশোধন করে সরবরাহ করা হবে। কিন্তু কাজ যখন শেষের দিকে, তখন কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের পাঠানো কাজ বন্ধের নোটিসে দিশাহারা পুর কর্তৃপক্ষ। গত তিন মাসে বন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে দু’টি চিঠি দিয়ে কাজ বন্ধ করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, কেন কাজ বন্ধ করা হচ্ছে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে। পুরসভা বিষয়টি রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে জানিয়ে সাহায্য চেয়েছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে আজ, মঙ্গলবার হাওড়ার নাজিরগঞ্জের গঙ্গাতীরে যেখানে এই জেটি তৈরি হচ্ছে, সেটি পরিদর্শন করতে যাচ্ছেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
হাওড়া পুরসভা এলাকায় পানীয় জলের চাহিদা মেটাতে প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তীর উদ্যোগে পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের ভিতরেই দু’টি এক কোটি গ্যালন ক্ষমতার জলপ্রকল্পের কাজ শুরু হয়। খরচ ধরা হয়েছিল ২১৫ কোটি টাকা। এত দিন পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের জন্য বটানিক্যাল গার্ডেনে পুরসভার নিজস্ব ইনটেক জেটি থেকে গঙ্গার জল তুলে তা পাম্প করে পাঠিয়ে দেওয়া হত প্লান্টে। সেই জল পরিশোধন করে সেখান থেকেই তা পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে সরবরাহ করা হত। কিন্তু বটানিক্যাল কর্তৃপক্ষ নতুন দু’টি জলপ্রকল্পের জন্য উদ্যানের ভিতরে খোঁড়াখুঁড়ি করতে না দেওয়ায় পুরসভাকে বিকল্প ব্যবস্থা করতে হয়। ঠিক হয়, গঙ্গা তীরবর্তী নাজিরগঞ্জের গোয়াবেড়িয়ায় ইনটেক জেটি-সহ একটি সাব স্টেশন তৈরি করা হবে। মূল জলপ্রকল্প দু’টি হবে সেখান থেকে তিন কিলোমিটার দূরে, পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের ভিতরে।
পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের কাজ শুরু হয় গত বছরের মাঝামাঝি। কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় কেএমডিএ-কে। পুরসভার দাবি, বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়েই গোয়াবেড়িয়ায় জেটি তৈরির কাজ শুরু হয় গত মার্চে। কয়েক মাস আগে পদ্মপুকুর জলপ্রকল্প থেকে নাজিরগঞ্জের গোয়াবেড়িয়া পর্যন্ত পাইপলাইন বসানোর কাজের জন্য রাস্তা বন্ধ করায় হিমশিম খেতে হয় হাওড়া সিটি পুলিশ ও গ্রামীণ পুলিশকে। সেই রাস্তা আজও না সারানোয় নিত্যদিন যানজটে নাজেহাল হচ্ছেন মানুষ।
পুরসভা সূত্রের খবর, নতুন প্রকল্প তৈরির কাজ যখন জোরকদমে চলছে, তখন গত ১৯ জুন বন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে মেরিন দফতরের প্রধান ও ডেপুটি কনজারভেটর, ক্যাপ্টেন জে জে বিশ্বাস পুরসভাকে কাজ বন্ধের নোটিস পাঠান। তাঁর বক্তব্য, নদীর ৫০ মিটার ভিতর পর্যন্ত যে ভাবে জেটি তৈরি হচ্ছে, তাতে সেখানে কোনও জাহাজ ঘোরানো যাবে না। তা ছাড়া, বন্দর পুরসভাকে এই জেটি তৈরির অনুমতিও দেয়নি।
ডেপুটি কনজারভেটর বলেন, ‘‘হাওড়া পুরসভাকে আমরা গঙ্গায় জেটি তৈরির অনুমোদন দিইনি। শুধু জল তোলার জন্য জমি দিয়েছিলাম। কোনও নির্মাণেরও অনুমতি দেওয়া হয়নি। আমি চিঠি দিয়ে জানিয়েছি, কাজ বন্ধ করে ওই জায়গা থেকে প্রকল্প সরিয়ে নেওয়া হোক।’’ ক্যাপ্টেন বিশ্বাস জানান, কাজ কেন বন্ধ করা হয়নি, তা জানতে চেয়ে এ বার অধিকর্তা নিজে চিঠি দিয়েছেন।
হাওড়ার পুর কমিশনার ও প্রশাসক বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের দু’টি চিঠি এসেছে ঠিকই। আমরা বিষয়টি কেএমডিএ-কে জানিয়েছি। রাজ্য সরকারের তরফে বিষয়টি দেখা হচ্ছে। পুরমন্ত্রী নিজে আসছেন জায়গাটা দেখতে। দেখা যাক, কী হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy