প্রতীকী ছবি।
মোবাইল চুরির অভিযোগে ধৃত বছর ষোলোর এক কিশোরকে প্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে আদালতে তোলার অভিযোগ উঠল বিষ্ণুপুর থানার বিরুদ্ধে। ওই কিশোরের আইনজীবী সুবীররঞ্জন চক্রবর্তীর অভিযোগ, পুলিশের ওই ‘ভুলের’ জন্য দু’দফায় ২১ দিন জেল হেফাজতে থাকতে হয় ধৃত নাবালককে!
সুবীরবাবু জানিয়েছেন, গত অগস্ট মাসের শেষে ওই নাবালকের বাবা, পেশায় রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করা এক শ্রমিক তাঁর কাছে আসেন। তিনি জানান, গত ১৪ জুলাই বিষ্ণুপুর থানা এলাকার পৈলানে এক মন্দিরের মহারাজের মোবাইল চুরি হয়। সেই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ স্থানীয় তিন তরুণের সঙ্গে তাঁর ছেলেকেও গ্রেফতার করে। ছেলের বয়স এখন ১৬ বছর ৮ মাস! শুধু তা-ই নয়, ধৃতের বাবা সুবীরবাবুকে জানিয়েছেন, ছেলেকে গ্রেফতারের খবর পেয়ে তিনি তার বয়সের প্রমাণপত্র নিয়েই থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ কোনও কাগজপত্র দেখতে রাজিই হয়নি। পরের দিনই পুলিশ ওই তিন তরুণের সঙ্গে সেই কিশোরকেও আলিপুর আদালতে পেশ করে।
এখানেই শেষ নয়। সুবীরবাবুর দাবি, আদালতে তোলার আগে পুলিশ জানতে পারে, ওই নাবালক একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া এবং বয়স ষোলো বছর। অভিযোগ, সব জেনেও পুলিশ তার বয়স আঠেরোর বেশি দেখিয়ে ওই কিশোরকে ডাকাতির চেষ্টা এবং অস্ত্র আইনের মামলায় যুক্ত করে। ওই চার জনকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। পরে ২৯ জুলাই ফের তাদের আদালতে তোলা হলে নতুন করে আরও ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়।
এর মধ্যেই ওই নাবালকের বাবা এলাকার কয়েক জনের মাধ্যমে খোঁজ পান আইনজীবী সুবীররঞ্জন চক্রবর্তীর। সুবীরবাবু ওই কিশোরের যাবতীয় কাগজপত্র, আধার কার্ড, মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে আদালতে পেশ করেন। সব দেখে আদালত ওই কিশোরকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে হাজির করতে বলে। সুবীরবাবু বলেন, ‘‘কাগজপত্র দেখে বিচারক তদন্তকারী অফিসারকে তথ্যগুলি যাচাই করতে বলেন। আর তাতে তদন্তকারী অফিসার আদালতকে জানান, ওই নাবালকের বয়স ১৬ বছর আট মাস ন’দিন। যা দেখে আদালত নির্দেশ দেয়, ওই নাবালককে জেল থেকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে হাজি করাতে হবে।’’ সেই মতো গত ৬ অগস্ট জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে হাজির করানো হলে ওই নাবালককে ধ্রুবাশ্রমে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার হোম থেকে তাকে ব্যক্তিগত বন্ডে সই করিয়ে বাড়িতে নিয়ে যান তার বাবা। গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ আইনজীবী সুবীরবাবু বলেন, ‘‘পুলিশ সব জেনেও কী করে একটি নাবালককে জেলে পাঠাল, বুঝতে পারছি না। এটাও বুঝতে পারছি না যে, একটি মোবাইল চুরির মামলাকে কী করে ডাকাতির চেষ্টা এবং অস্ত্র আইনের মামলায় যুক্ত করল!’’
বিষ্ণুপুর থানা এ বিষয়ে কোনও কথা বলতে রাজি হয়নি। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ডায়মন্ড হারবার ডিভিশনের পুলিশ সুপার সেলভা মুরুগানকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ওই কিশোরের বাবা প্রথমে ঠিকঠাক নথি থানায় জমা দেননি। দিয়ে থাকলে এটা ঘটত না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy