ফাইল ছবি
এক পক্ষের দাবি, বেড়াল পোষার কারণে আবাসনের পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠছে। তার উপরে রাস্তার বেড়ালদেরও এমন ভাবে খাওয়ানো হচ্ছে যে, সহজে চলাফেরা করা যাচ্ছে না। কারণ, চতুর্দিকে ছড়িয়ে থাকা বেড়ালদের মল-মূত্র ও তাদের লোম মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।
অপর পক্ষের দাবি, বেড়ালের অজুহাত দিয়ে অহেতুক হেনস্থা করা হচ্ছে। নিয়ম মেনে, পরিচ্ছন্ন ভাবে তাদের পোষা হয়। এবং রাস্তার বেড়ালদেরও এমন ভাবে খাওয়ানো হয় যে, নোংরা হওয়ার প্রশ্নই নেই। তা ছাড়া ফ্ল্যাটের পোষ্য বেড়াল তো বটেই, এমনকি রাস্তার সব বেড়ালকেও প্রতিষেধক দেওয়া রয়েছে।
দক্ষিণ কলকাতার গড়চা লেনের একটি আবাসনে বেড়াল নিয়ে দু’পক্ষের এই বিবাদের কথা ইতিমধ্যেই রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, কলকাতা পুরসভা, গড়িয়াহাট থানা, লালবাজার, অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার বোর্ড, রাজ্য ও জাতীয় মহিলা কমিশন-সহ বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছছে। সব জায়গা ঘুরে শেষ পর্যন্ত তা গিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালতে। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, পুরসভা এবং গড়িয়াহাট থানার প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গড়েছে পরিবেশ আদালত।
সংশ্লিষ্ট আবাসনের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এক বাসিন্দা মোহর চট্টোপাধ্যায় তাঁর ফ্ল্যাটে প্রায় ৮০টি বেড়াল পোষেন। সেই সঙ্গে রাস্তার আরও ৭০-৮০টি বেড়ালকে খাওয়ান। অভিযোগকারীদের আইনজীবী পৌষালি বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, বেআইনি ভাবে বেড়াল পোষায় আবাসনের পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে। বেড়ালের মল-মূত্র, তাদের খসে পড়া লোমের কারণে বায়ুদূষণ ও পরিবেশদূষণ হচ্ছে। পৌষালির কথায়, ‘‘আবাসিক এলাকায় এমন ভাবে বেড়াল পোষা হচ্ছে যাতে স্বাস্থ্যসঙ্কট তৈরি হয়েছে। আবাসনের সাধারণ জায়গাগুলিতেও বেড়ালের উপদ্রবে চলাফেরা করা মুশকিল হচ্ছে। তা ছাড়া, পশুজনিত রোগেরও আশঙ্কা থাকছে।’’
উল্টো দিকে, বেড়াল পোষার কারণে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে আবাসিকদের একাংশ তাঁকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে হেনস্থা, এমনকি প্রাণে মারারও হুমকি দিচ্ছেন বলে গড়িয়াহাট থানায় ইতিমধ্যেই অভিযোগ করেছেন মোহর। তিনি জানাচ্ছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা রাস্তার ৭০-৮০টি বেড়ালকে খাওয়ানোর অভিযোগ ভিত্তিহীন। কারণ, গোটা এলাকায় অত বেড়াল একসঙ্গে পাওয়া অসম্ভব। তা ছাড়া, পোষা বেড়ালদের ফ্ল্যাটের বাইরে বেরোনো আটকাতে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা-ব্যবস্থা রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, ফ্ল্যাট এবং রাস্তার বেড়ালদের প্রতিষেধক দেওয়া রয়েছে এবং তার প্রামাণ্য নথিও আছে। মোহর এ-ও জানাচ্ছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়েও আছে, রাস্তার পশুপাখিদের খাওয়ানো নাগরিকদের অধিকার ও কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। তাঁর কথায়, ‘‘বেড়ালের কারণে কী ভাবে বায়ুদূষণ বা পরিবেশদূষণ হয়, তা আমিও দেখতে চাই। আদালতের উপরে আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে।’’
এ দিকে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, পুরসভা ও গড়িয়াহাট থানার প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত তিন সদস্যের কমিটিকে পরিবেশ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, আবাসন সরেজমিনে পরিদর্শন করে রিপোর্ট তৈরি করতে। আগামী শুক্রবার ওই কমিটির আবাসন পরিদর্শনে যাওয়ার কথা। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৭ অগস্ট।
ফলে বেড়াল নিয়ে বিবাদ কোন পথে এগোয়, সব পক্ষ এখন সে দিকে তাকিয়ে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy