Advertisement
৩১ অক্টোবর ২০২৪
Illegal Firecrackers

নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কলকাতার বাজারে দেদার বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ বাজি, ‘নীরব দর্শক’ পুলিশ?

মঙ্গলবার ময়দানের বাজি বাজার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন নগরপাল মনোজ বর্মা। যদিও তিনি পরিদর্শন করে চলে যাওয়ার পরে বিক্রেতাদের অধিকাংশ অভিযোগ করেন, বাজি বাজারে পর্যাপ্ত খদ্দেরের দেখা মিলছে না।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:১৭
Share: Save:

উল্টোডাঙা বাজারের ব্যস্ত রাস্তার পাশে লম্বা টেবিল পাতা। তার উপরে একের পর এক বাজি সাজানো। কী নেই সেখানে! তুবড়ি, চরকি থেকে শুরু করে নিষিদ্ধ শব্দবাজি— সবই রয়েছে। কোনও বাজির প্যাকেটের গায়ে কিউআর কোড আছে। কোনওটিতে আবার সে সবের বালাই নেই। বাজির মান যাচাইয়ের পাশাপাশি খদ্দের টানতে মাঝেমধ্যেই শব্দবাজির দু’-একটি রাস্তায় ফাটিয়ে চিৎকার করছেন বিক্রেতা।

শহরের চারটি বৈধ বাজি বাজার ছাড়া অন্যত্র বাজি বিক্রি করা আইনত নিষিদ্ধ। পুলিশি নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। যদিও উল্টোডাঙার এই ছবি দেখে তা বোঝার উপায় নেই। শুধু উল্টোডাঙা নয়, বেলেঘাটা, কসবা, যোধপুর পার্ক, যাদবপুর, বেহালা, গড়িয়া, নারকেলডাঙা, চাঁদনি চক— সর্বত্রই খোলা বাজারে দেদার বিকোচ্ছে নিষিদ্ধ বাজি। বড়বাজারের মতো জায়গাতেও ‘বিকল্প ব্যবসা’ হিসাবে অনেকেই বাজির পসরা সাজিয়ে বসেছেন বলে অভিযোগ। অধিকাংশ এলাকাতেই পুলিশি ধরপাকড় চোখে না পড়ায় বেআইনি বাজির দৌরাত্ম্য আরও বাড়ছে বলে শহরের সচেতন বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ। এমনকি, লালবাজার দমকল কেন্দ্রের উল্টো দিকের ফুটপাতেও দেদার বিক্রি হতে দেখা গেল নিষিদ্ধ বাজি। অভিযোগ, সব দেখেও নীরব দর্শকের ভূমিকায় পুলিশ!

নিয়ম বলছে, ১৫ কেজির বেশি বাজি বিক্রির ক্ষেত্রে অনুমতি লাগে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ
পর্ষদের। ১৫ কেজির কম বাজি বিক্রির ক্ষেত্রেও এমএসএমই ছাড়পত্র থাকতে হয়। কিন্তু অভিযোগ, সে সব কিছুর তোয়াক্কা না করেই কালীপুজো ও দীপাবলির আগে শহরের
একাধিক জায়গায় চলছে দেদার বাজি বিক্রি।

শহরের চারটি জায়গা— টালা, ময়দান, কালিকাপুর এবং বেহালায় বাজি বাজার শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার ময়দানের বাজি বাজার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা। যদিও তিনি পরিদর্শন করে চলে যাওয়ার পরে বিক্রেতাদের অধিকাংশ অভিযোগ করেন, বাজি বাজারে পর্যাপ্ত খদ্দেরের দেখা মিলছে না। বাজি বাজারের বিক্রেতারা বাজি বিক্রি না হওয়ার অভিযোগ করলেও সপ্তাহখানেক আগে থেকেই শহরের যত্রতত্র ফাটতে শুরু করেছে নিষিদ্ধ শব্দবাজি। গত দু’দিনে যা কার্যত মাত্রা ছাড়িয়েছে। রাতের দিকে বিভিন্ন বহুতল থেকে শুরু করে ঘন বসতিপূর্ণ এলাকায় দেদার শব্দবাজি ফাটানো হয়েছে। পুলিশি নজরদারির অভাবেই খোলা বাজার থেকে কেনা নিষিদ্ধ বাজির দৌরাত্ম্য বাড়ছে বলে অভিযোগ করছেন বাজি ব্যবসায়ীরা। ময়দানের এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘পাড়ার মোড়ে মোড়ে যদি বাজি পাওয়া যায়, তা হলে দূর থেকে মানুষ এখানে আসবেন কেন? তার উপরে নজরদারি না থাকায় নিষিদ্ধ বাজি কিনতেও ভয় পাচ্ছেন না অনেকে। ফলে, শহর জুড়েই নিষিদ্ধ বাজির দৌরাত্ম্য বাড়ছে।’’

যদিও লালবাজারের কর্তারা নজরদারির অভাবের অভিযোগ মানতে চাননি। লালবাজারের যুক্তি, গত এক সপ্তাহে প্রায় ৩৯৩৪ কেজি নিষিদ্ধ বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ৩৫ জনকে। এক কর্তার কথায়, ‘‘সব ডিভিশনের বিভিন্ন বাহিনী গোটা এলাকায় নজরদারি চালাচ্ছে। বাজি বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি ধরপাকড়ও চলছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Police Kali Puja 2024
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE