বিপজ্জনক: সকালের ঘন কুয়াশায় বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। শুক্রবার, রুবি মোড়ে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
গাড়ির ঠিক সামনে খুব বেশি হলে এক হাত দূর পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। আশপাশে সব আবছায়া। দিনের শুরুতেই শহরের এমন দৃশ্যমানতার অভাবে বড় অঘটনের আশঙ্কা করছেন অনেকেই। চিন্তায় পুলিশও। তারা জানাচ্ছে, এমনিতেই প্রতি বছর শীত শুরুর এই সময়ে পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে যায়। এ বারও তেমন হলে মুশকিল।
যদিও আশঙ্কাই সার, কিছু রাস্তায় ফ্লুরোসেন্ট রিফ্লেক্টর লাগানো ছাড়া এ বছর এখনও পর্যন্ত নতুন কোনও ব্যবস্থার আশ্বাস মেলেনি পুলিশের তরফে। প্রশ্ন উঠেছে রাতের শহরে পুলিশি নজরদারির অভাব নিয়েও।
কলকাতা পুলিশের দাবি, চলতি শীতের মরসুমে এখনও পর্যন্ত কুয়াশার কারণে মৃত্যু হয়েছে এক জনের। গত মঙ্গলবার ভোর পাঁচটা নাগাদ লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার ভোজেরহাটে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় বিশ্বজিৎ মণ্ডল নামে এক সাইকেল আরোহীর। কুয়াশার কারণেই এক গাড়িচালক হঠাৎ সামনে চলে আসা ওই সাইকেল আরোহীকে ঠাহর করে উঠতে পারেননি বলে পুলিশের অনুমান। মৃত্যুর ঘটনা আর না ঘটলেও গত এক সপ্তাহে ভোরের শহরে বেশ কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে।
চালকদের জন্য পরামর্শ
• ভোরের যাত্রা এড়িয়ে চলুন
• বেরোতে হলে আবহাওয়া দফরের ঘোষণায় নজর রাখুন
• গাড়ির লোয়ার বিম হেডলাইট এবং ফগ লাইটের যথাযথ ব্যবহার করুন
• কোনও মতেই গতি বাড়িয়ে লেন বদলের ঝুঁকি নেবেন না
• ট্র্যাফিক সিগন্যাল মানুন, সমস্যা হলে ইমার্জেন্সি আলো জ্বেলে পথের ধারেই অপেক্ষা করুন
পুলিশের হিসেব, এক সপ্তাহে অন্তত ১৬টি মোটরবাইক দুর্ঘটনা ঘটেছে ভোর পাঁচটা থেকে সকাল সাড়ে আটটার মধ্যে। ওই সময়ে গাড়ি দুর্ঘটনার অভিযোগ দায়ের হয়েছে প্রায় ন’টি। তারাতলার কাছে গত বুধবার সকাল ন’টা নাগাদ এক মোটরবাইক আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। যদিও এই মৃত্যু কুয়াশার জেরে হওয়া দুর্ঘটনার তালিকায় ফেলা হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে পুলিশ। কারণ, প্রত্যক্ষদর্শীরা কুয়াশাচ্ছন্ন রাস্তার কথা জানালেও সকাল ন’টাতেও কুয়াশা ছিল কি না, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ।
কুয়াশার জেরে বাড়তে থাকা পথের বিপদের কথা মেনে নিয়েই চালকদের নিজস্ব নিরাপত্তার উপরেই জোর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে লালবাজার। ট্র্যাফিক বিভাগের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, “আগামী কয়েক দিন ভোরে যাতায়াত যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত। ভোরে একান্তই বেরোতে হলে আবহাওয়া দফতরের সে দিনের ঘোষণা অবশ্যই জেনে নেওয়া প্রয়োজন। কুয়াশার মধ্যে গাড়ি চালানোর আরও একটি নিয়ম হল, গাড়ির বাইরের সব আলোর যথাযথ ব্যবহার। লোয়ার বিম তো বটেই, গাড়িতে ফগ লাইট থাকলে তা-ও ব্যবহার করতে হবে।’’ পুলিশের পরামর্শ, কুয়াশার মধ্যে কোনও ভাবেই লেন বদলে গাড়ি চালানো যাবে না। গতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক থাকতে হবে। মেনে চলতে হবে পথ নিরাপত্তার মূল পাঠ, ট্র্যাফিক সিগন্যাল।
গত বছর অবশ্য এই সব পরামর্শের পাশাপাশি দুর্ঘটনা এড়াতে চালকদের সচেতন করার একাধিক পদক্ষেপ করেছিল পুলিশ।
হাইওয়ে এবং বড় রাস্তার ধারে চালকদের ঘুম কাটাতে রাখা থাকত, জল-চা পানের ব্যবস্থা। ঘুমের জেরে বিপদ এড়াতে গাড়ি-পুলিশের সঙ্গে কিছু ক্ষণ গল্প করে নেওয়ার নিদানও ছিল। এ বছর বহু কমিশনারেট সেই সব পুরনো পদ্ধতি নতুন করে ব্যবহারের ঘোষণা করলেও কলকাতা পুলিশের কোনও উদ্যোগ এখনও দেখা যায়নি।
বছরের এই সময়ে অনেকেই রাতে পার্টি সেরে ভোরে গাড়িতে ফেরেন। সেই সময়ে পথে পর্যাপ্ত পুলিশি নজরদারি নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। ট্র্যাফিক বিভাগের কর্তারা যদিও জানাচ্ছেন, সাধ্য মতো নাকা তল্লাশি চলছে শহরের রাস্তায়। ভোরের শহরের জন্য বাড়তি পুলিশকর্মীও মোতায়েন করা হচ্ছে গত সপ্তাহ থেকে। চালকদের সুবিধার জন্য পথের ধারের বিভিন্ন জিনিসের গায়ে লাগানো হয়েছে ফ্লুরোসেন্ট রিফ্লেক্টর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy