খাদ্য-সরণি: ডেকার্স লেন এখন যেমন। ছবি: সুমন বল্লভ
কলকাতা জুড়ে রাস্তার খাবার বা স্ট্রিট ফুডের কোনও শুরু বা শেষ নেই। অথচ, আজ পর্যন্ত এই শহরের কোনও ফুড স্ট্রিট বা রসনা-সরণি দ্রষ্টব্য হয়ে উঠতে পারল না। তবে, এ বার ডেকার্স লেনকে ব্যাঙ্ককের সুখুমভিট সয় থার্টি এইট বা সিলম সয় টোয়েন্টি কিংবা লাহৌরের কাবাব গলির মতো আন্তর্জাতিক করে তুলতে সরকারি-বেসরকারি স্তরে উদ্যোগ শুরু হয়েছে।
টোস্ট-ঘুগনি-চা থেকে চপ-ফ্রাই-কাটলেট, চিকেন স্টু-মটন কোর্মা থেকে ফ্রায়েড রাইস-নুডলস-চিলি চিকেন আর সব শেষে ডাবল হাফ চা। দেশি-বিদেশি বহু পর্যটক কলকাতার এই খানা খাজানা দেখে চমকে গিয়েছেন। তবে তাঁদের একটা বড় অংশ ডেকার্স লেনের খাবার মুখে তোলেননি। কারণ? খোলা নর্দমার উপরে ডাঁই করে রাখা এঁটো বাসন, অপরিষ্কার জলে ধোয়াধুয়ি, নোংরা পরিবেশে রান্নাবান্না এবং কোথাও কোথাও প্রস্রাবের গন্ধ— সব মিলিয়ে চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।
ডেকার্স লেনের ভোল পাল্টাতে পর্যটন দফতর পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি ফেরানোর উপরেই গুরুত্ব দিচ্ছে। রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘ডেকার্স লেন কলকাতার অন্যতম দ্রষ্টব্য। রাস্তায় বেঞ্চে বসে চিকেন স্টু খাওয়া একটা অভিজ্ঞতা। কিন্তু পরিচ্ছন্নতা থাকা জরুরি।’’
বণিকসভা ‘বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’ সম্প্রতি পর্যটন দফতরে ডেকার্স লেনের ভোল পাল্টানোর যে প্রস্তাব দিয়েছে, তার মূল কথা পরিচ্ছন্নতা ফেরানো।
পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, খোলা নর্দমা রাখা চলবে না, প্রবহমান পরিষ্কার জলে বাসন ধুতে হবে, গলির দু’পাশে আবর্জনা ফেলার মুখ ঢাকা বিন রাখতে হবে, খাবার যাঁরা দেবেন তাঁদের নির্দিষ্ট পরিচ্ছন্ন পোশাক ও হাতে দস্তানা চাই, পরিষ্কার ও দুর্গন্ধহীন শৌচাগার থাকবে গলির দু’প্রান্তে। তা ছাড়া, ওই জায়গায় অবস্থিত অফিসগুলির ছাড়া অন্য গাড়ির প্রবেশ বন্ধ করতে হবে। প্রতিটি দোকানের উজ্জ্বল সাইনবোর্ড, বিভিন্ন ভাষায় মেনু ও সেই সব খাবার সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু বিবরণ থাকা দরকার। আর সন্ধ্যায় যেন গোটা তল্লাট আলোয় ঝলমল করে।
বণিকসভার তরফে স্নেহাশিস ভৌমিক বলেন, ‘‘কলকাতার স্ট্রিট ফুড সংস্কৃতি বহন করছে ডেকার্স লেন। একে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতেই ভোল পাল্টানো জরুরি।’’ এই নিয়ে বণিকসভাকে পরামর্শ দিয়েছেন যিনি, ইনবাউন্ড ট্যুর অপারেটর্স কাউন্সিল-এর সভাপতি সেই শুদ্ধব্রত দেবের বক্তব্য, ডেকার্স লেনকে স্বাস্থ্যকর করতে গিয়ে এর খাবারের দাম যাতে না বাড়ে, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। বহু নিম্নবিত্ত মানুষ ডেকার্স লেনে সস্তায় খান। তাই, শুদ্ধব্রতবাবুর পরামর্শ, ‘‘স্বাস্থ্যবিধি ফেরাতে সরকার সাহায্য করুক।
পরিচ্ছন্ন জলের সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারে পুরসভা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy