রাতভর নিখোঁজ থাকার পরে বাড়ির কাছেই ঝোপের ভিতরে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল এক কিশোরকে। শুক্রবার এই ঘটনা ঘটেছে টিটাগড় থানার পলতা বামনপুর এলাকায়। মৃত কিশোরের নাম শ্রীদীপ সমাদ্দার (১৭)। এ দিন বেলার দিকে এলাকারই একটি অসমাপ্ত জলপ্রকল্পের ভিতরে তার দেহ মেলে। শ্রীদীপ এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল।
পুলিশ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে শ্রীদীপের ফোন থেকেই তার বাবার কাছে মুক্তিপণ চেয়ে একটি ফোন এসেছিল। পুলিশের ধারণা, ওই কিশোরকে খুন করা হয়েছে। কারণ, তার দেহে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। কিন্তু কারা, কী কারণে শ্রীদীপকে খুন করল, সে বিষয়ে পুলিশও অন্ধকারে। ওই জলপ্রকল্প চত্বর সমাজবিরোধীদের আখড়া বলে জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রীদীপ এলাকারই আনন্দমঠ হাইস্কুল থেকে এ বছর মাধ্যমিক দিয়েছিল। তার বাবা সুকুমার সমাদ্দার আয়ুর্বেদিক ওষুধ ফেরি করেন। শ্রীদীপের মা মণিমালা জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ সে বাড়িতে ফিরে মুড়ি-জল খেয়েছিল। তার পরে মাকে বলেছিল চা করতে। কিন্তু তিনি অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় শ্রীদীপ বেরিয়ে যায়। মণিমালা বলেন, “ছেলের চোখ দু’টো ছলছল করছিল। মনে হয়, ওর কিছু একটা হয়েছিল। কিন্তু আমি কাজে ব্যস্ত থাকায় আর জিজ্ঞাসা করা হয়নি। তখন কি জানতাম, ও আর ফিরবে না!”
রাত ৮টার পরেও ছেলে না ফেরায় তার মোবাইলে ফোন করেন সুকুমারবাবু। শ্রীদীপের ফোন বেজে বেজে বন্ধ হয়ে যায়। রাত ১০টা নাগাদ ছেলের মোবাইল থেকেই সুকুমারবাবুর মোবাইলে একটি ফোন আসে। তাঁকে বলা হয়, ছেলেকে ফেরত চাইলে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দিতে হবে। পুলিশকে জানালে ফল খারাপ হবে।
এই ঘটনার পরে সুকুমারবাবু স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে নিয়ে টিটাগড় থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। রাতভর খোঁজাখুঁজি করেও শ্রীদীপের সন্ধান মেলেনি। পুলিশও তল্লাশি চালায়। এ দিন বেলার দিকে জলপ্রকল্প এলাকার ভিতরে একটি চটি ও মাস্ক পড়ে থাকতে দেখা যায়। তা দেখে সেখানে তল্লাশি চালাতেই একটি ঝোপের মধ্যে শ্রীদীপের দেহ মেলে। তার মুখ ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। গলায় ছিল কালশিটে।
শ্রীদীপের মায়ের অভিযোগ, জলপ্রকল্পের মধ্যে নেশার আসর বসে। তাঁর ছেলেকেও এলাকার কয়েক জন সেখানে নিয়ে যেত। শ্রীদীপ মাঝেমধ্যেই নেশা করে বাড়ি ফিরত। এমনকি, স্কুলে যাওয়ার পথেও তাকে জোর করে ধরে নিয়ে যেত বন্ধুরা। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) আমনদীপ বলেন, “আমরা খুনের তদন্ত করছি। আশা করি, দ্রুতই রহস্যভেদ করা যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy