Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
Death

করোনা নয়, তবু বাড়িতে দেহ পড়ে রইল সাত ঘণ্টা

মৃতার ছেলে, বৌমা, নাতি, নাতনি করোনা পজ়িটিভ হয়ে ইতিমধ্যেই গৃহবন্দি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২০ ০৫:৪৮
Share: Save:

ফের নিজের বাড়িতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দেহ পড়ে থাকার আরও একটি ঘটনার সাক্ষী থাকল এ শহর। সন্দেহ সেই করোনা। যার জেরে এক বৃদ্ধার দেহ নিজের বাড়িতেই সাত ঘণ্টা পড়ে থাকল।

মৃতার ছেলে, বৌমা, নাতি, নাতনি করোনা পজ়িটিভ হয়ে ইতিমধ্যেই গৃহবন্দি। ওই বৃদ্ধাও সম্ভবত করোনা আক্রান্ত হয়েই মারা গিয়েছেন, এই আশঙ্কা থেকেই তাঁর সৎকারে আসেননি আত্মীয়েরা। পরিবারের অভিযোগ, বার বার ফোন করলে তাঁরা মোবাইল বন্ধ করে দিয়েছেন। মৃতা কোভিড রোগী নন, এ কথা পুরসভাকে বলেও কাজ হয়নি বলে দাবি পরিবারের। শেষমেশ পাটুলি থানার তত্ত্বাবধানে রবিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ ওই বৃদ্ধার দেহ গড়িয়া শ্মশানে সৎকারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

পুলিশ সূত্রের খবর, পাটুলি থানা এলাকার রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা পারুলবালা মজুমদার (৮৩) বার্ধক্যজনিত কারণে দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। তাঁর ছেলে, বৌমা, নাতি, নাতনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত কয়েক দিন ধরে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। এ দিন সকালে বৃদ্ধা অসুস্থ বোধ করেন। সকাল দশটায় মারা যান।

পরিবার সূত্রের খবর, পারুলদেবীর মৃত্যুর খবর প্রথমে তাঁর আত্মীয়দের জানানো হয়। কিন্তু সকলের করোনা হয়েছে বলে আত্মীয়েরা আসতে চাননি বলে জানান বৃদ্ধার ছেলে। এর পরে স্থানীয় ওয়ার্ড অফিসে ফোন করে পুর স্বাস্থ্য দফতরের সাহায্য চান বলেও দাবি তাঁর। অভিযোগ, ওই মহিলা নন-কোভিড রোগী শুনে পুরসভার গাড়ি আসেনি। এমনকি হিন্দু সৎকার সমিতিকে ফোন করেও গাড়ি মেলেনি বলে দাবি।

দুপুরে পাটুলি থানায় ফোন করে জানানো হয়। থানার তরফেও আত্মীয়দের ফোন করলে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর পরে পুলিশই বৃদ্ধার বাড়িতে চিকিৎসক পাঠিয়ে তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করে। বিকেলে পাটুলি থানার ওসি সৌম্য ঠাকুরের নেতৃত্বে গড়িয়া শ্মশানে সৎকারের জন্য দেহ পাঠানো হয়।

প্রসঙ্গত, এই পরিস্থিতিতে দেহ সৎকারে যাতে বিলম্ব না হয় সে জন্য দিন কয়েক আগেই পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান এবং কলকাতার নগরপাল, পুর ও পুলিশ প্রশাসনকে সক্রিয় হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরেও এ দিনের ঘটনায় পুরসভার তরফে সেই নির্দেশ অমান্য করাই প্রমাণ করছে।

এ দিন সকালে বৃদ্ধার বাড়ির তরফে তাঁর ওয়ার্ড অফিসে যে ফোন করা হয়েছিল তা মেনে নিয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জ্বর নিয়ে বাড়িতে রয়েছি। ওই পরিবারের তরফে ওয়ার্ড অফিসে ফোন করেছিল। বৃদ্ধা নন-কোভিড হওয়ায় পুরসভার গাড়ি যায়নি।” তবে পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ বলছেন, “পুরসভার তিনটি গাড়ি কোভিড-দেহ নিয়ে যায়। বাকি দু’টি নন-কোভিড গাড়ি তো আছে অন্যদের জন্য। হয়তো ওই সময়ে গাড়ি না থাকায় পাটুলির ক্ষেত্রে পাঠানো সম্ভব হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Death Coronavirus in Kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy