প্রতীকী ছবি।
বাড়ির দোতলা আগেই নিজের নামে লিখিয়ে নিয়েছিল ছোট মেয়ে। একতলাও তার নামে লিখে দেওয়ার দাবিতে বৃদ্ধ বাবার উপরে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে সেই ঝামেলায় বাবাকে প্রাণে মারার চেষ্টা করে মেয়ে। প্রতিবেশীরা গিয়ে ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে বৃদ্ধের মেয়ে ও তার সঙ্গীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার ওই দু’জনকে হাওড়া আদালতে তোলা হলে সাত দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম অমৃতা মুখোপাধ্যায় ও শ্যামলেন্দু হাজরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, বালির শান্তিরাম রাস্তায় দোতলা বাড়িতে একাই থাকতেন ৮১ বছরের সুশীলকুমার মুখোপাধ্যায়। তিনি হাওড়া উন্নয়ন সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার। প্রায় ২২ বছর আগে সুশীলবাবুর স্ত্রী মারা গিয়েছেন। বড় মেয়ে সিঁথিতে থাকেন। ছোট মেয়ে অমৃতা কর্মসূত্রে মুম্বইয়ে থাকে। বৃদ্ধ পুলিশকে জানিয়েছেন, দু’-এক মাস অন্তর বালিতে আসত অমৃতা। মাঝেমধ্যে সঙ্গে আসত শ্যামলেন্দুও। ওই ব্যক্তিও থাকে মুম্বইয়ে। অভিযোগ, ২০১৩ সালে প্রথমে মানসিক চাপ তৈরি করে বাড়ির দোতলা নিজের নামে লিখিয়ে নেয় অমৃতা। তার পরেও সে থামেনি। অভিযোগ, বাড়ির বাকি অংশও তাকে দেওয়ার দাবিতে মুম্বই থেকে বাবাকে ফোনে হুমকি দিত সে। নানা ভাবে তাঁর উপরে চাপ তৈরি করত। কিন্তু কোনও মতেই ছোট মেয়ের প্রস্তাবে রাজি হননি সুশীলবাবু।
অভিযোগে বৃদ্ধ জানিয়েছেন, তাঁর উপরে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করে ১৬ লক্ষ টাকা ও তাঁর স্ত্রীর সোনার গয়নাও হাতিয়ে নেয় অমৃতা। সুশীলবাবুর বড় জামাই অঞ্জন রায় বলেন, ‘‘এত কিছুর পরেও অমৃতার অত্যাচার বন্ধ হচ্ছিল না। মাঝেমধ্যেই বালিতে এসে বাড়ির বাকি অংশের জন্য শ্বশুরমশাইকে অত্যাচার করত। কিন্তু তিনি অভিযোগ করতে চাইতেন না। সব সময়ে আশা করতেন, মেয়ে এক দিন ঠিকটা বুঝবে।’’ গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে শ্যামলেন্দুকে সঙ্গে নিয়ে ফের বালিতে আসে অমৃতা। অভিযোগ, বাড়ির বাকি অংশ লিখে দিতে হবেই বলে দাবি তোলে তারা। কিন্তু সুশীলবাবু স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি কোনও মতেই তা করতে পারবেন না। আর যা ভাগাভাগি হবে, তা তাঁর মৃত্যুর পরে।
অভিযোগ, এর পরেই সুশীলবাবুকে মারধর শুরু করে অমৃতারা। এক সময়ে দু’জনে বৃদ্ধের গলা টিপে ধরে। কোনও মতে চিৎকার করে সাহায্য চান সুশীলবাবু। চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা এসে তাঁকে উদ্ধার করেন। খবর দেওয়া হয় থানায়। পাশাপাশি, খবর পেয়ে অঞ্জনবাবুরাও চলে আসেন। সুশীলবাবু বলেন, ‘‘অত্যাচার সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সম্পত্তি না পেয়ে ওরা আমাকে প্রাণে মারার চেষ্টা করে। তাই পুলিশে লিখিত অভিযোগ করি। পুলিশও তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy