Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Cyclone Yaas

আসছে ‘ইয়াস’, শহরে সবুজের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা

পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ডে প্রায় দু’লক্ষ গাছ আছে। যার মধ্যে রয়েছে ছাতিম, মেহগনি, জারুল, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, ইত্যাদি।

ফাইল চিত্র।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২১ ০৭:৩৭
Share: Save:

গত বছরে আমপানের তাণ্ডবে কলকাতা শহরে প্রায় ১৫ হাজার গাছ উপড়ে গিয়েছিল। এ বার বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’। গত বছরের কথা মাথায় রেখে তাই পরিবেশবিদদের আশঙ্কা, এ বারেও শহরের বড় বড় গাছপালার উপরে তাণ্ডব চালাতে পারে ‘ইয়াস’। তাই এই পরিস্থিতিতে শহরের সবুজ রক্ষা করাটা একটা বড়সড় চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করছেন পরিবেশবিদরা।

পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ডে প্রায় দু’লক্ষ গাছ আছে। যার মধ্যে রয়েছে ছাতিম, মেহগনি, জারুল, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, কদম, বকুল, দেবদারু, পলাশ, খিরীশ, শিরিষ ইত্যাদি। উত্তরের তুলনায় বেশি গাছ (৬৫ শতাংশ) রয়েছে দক্ষিণ কলকাতায়। কলকাতা পুরসভার উদ্যানবিদ সুশান্ত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কলকাতার মাটির নীচে জল, নিকাশি, বিদ্যুৎ ছাড়াও একাধিক কেব্‌ল রয়েছে। যার জন্য গাছগুলির শিকড় মাটির নীচে বেশি গভীরে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে ঝড়ের বেগ খুব বেশি হলেই এই গাছগুলিকে বাঁচানো মুশকিল হয়।’’

আমপানের জেরে শহরের বিপুল সংখ্যক গাছ উপড়ে যাওয়ার পিছনে এই কারণকেই মূলত দায়ী করা হয়েছিল। আমপানের পরে শহরে সবুজায়নের লক্ষ্যে পুরসভার উদ্যান বিভাগ প্রায় দশ হাজার গাছ লাগিয়েছিল। কিন্তু, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তার মধ্যে মাত্র দু’হাজার গাছ এখন বেঁচে রয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই সব গাছ দেখভালের দায়িত্ব যে ঠিকাদারদের দেওয়া হয়েছিল, তারা পুরসভার থেকে টাকা না পেয়ে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। ফলে পরিচর্যার অভাবে মরে গিয়েছে একের পর এক গাছ।

আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এর দাপট এতটাই থাকতে পারে যে, আমপানের পরে লাগানো ওই বেঁচে থাকা দু’হাজার গাছের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় থাকছে। ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে পড়া গাছ রাস্তা থেকে সরাতে ১৬টি ওয়ার্ডে এ বার বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছে কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগ। উপড়ে যাওয়া গাছ কাটতে মেশিনের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে কলকাতার সবুজের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলছেন, ‘‘কলকাতায় গাছের স্বাস্থ্য একেবারেই ভাল নয়। শহরে গাছ লাগানো ও তার পরিচর্যার জন্য সারা বছর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। মাটির নীচে অবস্থান বুঝে গাছ লাগানোয় জোর দিতে হবে। অবাধে গাছের ডাল কাটাও বন্ধ করতে হবে।’’

তবে পর পর দু’বছর ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ত সবুজ বাঁচাতে কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগ বৃক্ষরোপণ ও তার রক্ষণাবেক্ষণে এখন থেকেই বাড়তি গুরুত্ব দিতে চাইছে। কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘এখন ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করাই আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে ঘূর্ণিঝড়ের পরে শহরে গাছ লাগানো ও তার সুরক্ষার জন্য আমাদের একটা সুনির্দিষ্ট নীতি রূপায়ণ করতেই হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Yaas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy