নতুন কৌশলে সাইবার অপরাধ ঘটছে। প্রতীকী ছবি।
পুরনো কৌশলেই ‘রূপ’ বদলে ফের কি শহরে জাল ছড়াচ্ছে সাইবার অপরাধীরা? সাম্প্রতিক কালের মধ্যে লালবাজারে আসা বেশ কয়েকটি অভিযোগের তদন্তে নেমে এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে পুলিশকর্তাদের মধ্যে। সাইবার বিশেষজ্ঞেরা প্রতারণার একাধিক নতুন কৌশলের কথা বললেও সেগুলির সঙ্গে চিন্তা বাড়াচ্ছে রূপ বদলে ফেরা পুরনো কৌশল। প্রশ্ন উঠছে, ক্রমেই বেড়ে চলা সাইবার অপরাধের জাল থেকে মুক্তি কী ভাবে সম্ভব?
সপ্তাহখানেক আগেই সাইবার অপরাধের একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয় যাদবপুর থানায়। অভিযোগে ওই ব্যক্তি জানান, দিন কয়েক আগে প্যান নম্বর আপডেট করার মেসেজ পান তিনি। মেসেজে প্যান নম্বর আপডেট না করালে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে বলেও জানানো হয়। সঙ্গে একটি লিঙ্ক দিয়ে, তাতে ক্লিক করে বাড়ি বসেই প্যান নম্বর আপডেট করা যাবে বলেও জানানো হয়। সেই মতো লিঙ্কে ক্লিক করতেই অ্যাকাউন্ট থেকে ধাপে ধাপে দশ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়ার মেসেজ পান। দ্রুত তিনি যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে কয়েক দিনের মধ্যে ওই ব্যক্তির উধাও হওয়া দশ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা।
শুধু যাদবপুরের এই ঘটনা নয়, ইদানীং শহর কলকাতায় একাধিক এই ধরনের মেসেজ আসার অভিযোগ সামনে আসছে বলে লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে। এখানেই উঠছে প্রশ্ন, তা হলে কি পুরনো কৌশলেই শহরে ফের সক্রিয় হচ্ছে সাইবার অপরাধের চক্র?
লালবাজার সূত্রের খবর, বছর কয়েক আগে সাইবার অপরাধের শুরুর দিকে কখনও প্যান কার্ড, কখনও আধার কার্ড আপডেটের নামে ফোন করে তথ্য হাতায় অপরাধীরা। মূলত, ভিন্ রাজ্যে বসে চলত গোটা কারবার। পরে জালিয়াতির ক্ষেত্রে কৌশল বদলে ফেলে অপরাধীরা। কখনও ভিডিয়ো কল করে, কখনও আবার মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার পরিচয় দিয়ে অপরাধ ঘটানোর প্রমাণ মিলেছে। বিদ্যুতের বকেয়া বিল না-মেটালে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে বলেও ফোন, মেসেজ বা লিঙ্ক পাঠিয়ে সম্প্রতি প্রতারণার ফাঁদ পাততে দেখা গিয়েছে। এক তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘মানুষ বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সচেতন হচ্ছেন বলে কৌশল বদল করছে অপরাধীরা। আসল কথা হল, ফোনে কোনও অপরিচিত ব্যক্তিকে তথ্য দেওয়া থেকে সব সময়ে বিরত থাকতে হবে।’’
পুলিশকর্তাদের পাশাপাশি সাইবার বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ইদানীং শহরে আরও কিছু নতুন কৌশলে সাইবার অপরাধ ঘটছে। কখনও নতুন চাকরি পাওয়ার মেসেজ, কখনও বিমানবন্দরে কারও নামে আসা উপহার পেতে শুল্ক দেওয়ার কথা বলে প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। আবার কখনও অনলাইনে আসা কোনও জিনিস ফেরতের নামে প্রতারণার ফাঁদ পাতা হচ্ছে।
সাইবার বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘প্রত্যেক দিন একই মুখোশ পরলে যেমন মানুষ সহজেই চিনে ফেলে, সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রেও অনেকটাই সে রকম। অপরাধের কৌশল হল নতুন নতুন মুখোশ। কিন্তু মুখোশের পিছনে অপরাধটা একই। একটাই বিষয় সব সময় খেয়াল রাখতে হবে, কোনও ভাবেই ফোনে বা লিঙ্কে ক্লিক করে তথ্য কাউকে দেওয়া যাবে না।’’
লালবাজারের এক পুলিশ কর্তা আবার জানাচ্ছেন, সাইবার অপরাধ ঠেকাতে দু’ভাবে কাজ করছে পুলিশ। এক দিকে অপরাধের শিকড় পর্যন্ত পৌঁছে গিয়ে অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, অন্য দিকে মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন করা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy