লুক আউট নোটিস জারি করতে চাইছে লালবাজার। — প্রতীকী চিত্র।
ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের তদন্তে এ বার লুক আউট নোটিস জারি করতে চাইছে লালবাজার। সূত্রের খবর, এই চক্রের সদস্যেরা গত কয়েক বছরে বিভিন্ন বাংলাদেশি নাগরিককে ভারতীয় বলে দেখিয়ে ১২১টি পাসপোর্ট তৈরি করেছিল। যার মধ্যে ৭০টিরও বেশি পাসপোর্ট দেওয়া হয়ে গিয়েছিল আঞ্চলিক পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষের তরফে। বাকি প্রায় ৫০টি পাসপোর্ট তৈরির অপেক্ষায় ছিল, যা ইতিমধ্যে আটকে দেওয়া হয়েছে। লালবাজারের তদন্তকারীদের দাবি, ৭০টিরও বেশি পাসপোর্ট বাংলাদেশ থেকে আগত অনুপ্রবেশকারীদের নামে তৈরি করা হয়েছিল। ওই অনুপ্রবেশকারীদের আটকাতেই তাঁদের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করতে চাইছেন গোয়েন্দারা। এর ফলে যেমন ওই পাসপোর্ট ব্যবহার করে কেউ নতুন করে দেশের বাইরে যেতে পারবেন না, তেমনই ওই পাসপোর্ট কার কার কাছে রয়েছে, তা সহজে চিহ্নিত করা যাবে বলে গোয়েন্দারা মনে করেছেন। এক আধিকারিক জানান, ওই পাসপোর্ট ব্যবহারীদের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এতে ভুয়ো পাসপোর্টের অধিকারী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
লালবাজার জানিয়েছে, এর সঙ্গেই আঞ্চলিক পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষের (আরপিও) কোন কোন কর্মী এই পাসপোর্ট তৈরিতে যুক্ত, তাঁদেরও চিহ্নিত করার চেষ্টা হচ্ছে। এর জন্য আরপিও কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। লালবাজার সূত্রের খবর, আবেদন এবং তার সঙ্গে জমা দেওয়া নথির পুলিশি যাচাইয়ের পরে পাসপোর্ট দেয় আরপিও। ফলে তাদেরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে। সেই দায়িত্ব সেখানকার কর্মীরা পালন করছেন কিনা, তা খতিয়ে দেখার কাজও শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য দেড় হাজার টাকা জমা দিতে হয়। ভুয়ো পাসপোর্টে তৈরিতে কোন কোন অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাকা এসেছিল, তা-ও চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। এ জন্য অ্যাকাউন্টগুলি খতিয়ে দেখে কারা সেটি ব্যবহার করেছে, তা জানার চেষ্টা শুরু হয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে গোয়েন্দারা মনে করছেন, ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের সদস্যেরা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে আবেদনের জন্য ওই টাকা পাঠিয়েছে। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, পাসপোর্টের আবেদনে ইমেল আইডি দিতে হয়। সেই ইমেল আইডিগুলি কারা বানিয়েছে, তা-ও জানার চেষ্টা শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। বর্তমানে ওই চক্রের আট জন সদস্য গ্রেফতার হয়েছে। তার মধ্যে এক জনের জামিন মিলেছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, আরপিও অফিসের কেউ বা কারা এর সঙ্গে যুক্ত থাকতেও পারেন। তাই আরপিও-র কাছে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়েছে। লালবাজার জানিয়েছে, পুলিশের পাসপোর্ট অফিসারের কয়েক জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাসপোর্টের নথি যাচাইয়ের সময়ে কোনও অনিয়ম তাঁরা করেছেন কি না, দেখা হচ্ছে মূলত সেটাই।
জাল পাসপোর্ট কারবার চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে ট্র্যাফিক পুলিশের এক অস্থায়ী হোমগার্ড-সহ তিন জনকে বুধবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা সকলেই হুগলির বাসিন্দা। ধৃতদের নাম মহম্মদ ইমরান, মোহন সাউ ও বিশ্বজিৎ ঘোষ। মোহনকে ধরা হয় নামখানার মৌসুনি দ্বীপ থেকে। ইমরানকে চাঁপদানি ও বিশ্বজিৎকে তারকেশ্বর থেকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার তাদের চন্দননগর আদালতে পাঠানো হলে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়। চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তার কথায়, ‘‘জাল পাসপোর্ট চক্রে আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy