ছবি : কালো জিরে বাটা— দেবযানীর রান্নাঘর, মুলো বাটা— আ হোমমেকার’স ডায়েরি, বিট বাটা— দ্য কুকিং মাম্মা।
বাটা। সে তো দৈনন্দিন রান্নার জন্য কত কিছুই বাটতে হয়। তার পরে সেই বাটনা এবং মশলা দিয়ে কষিয়ে পছন্দের তরিতরকারি দিয়ে তৈরি হয় এক একটি পদ। কিন্তু বাটা যখন নিজেই একটি পদ। তখন মশলা কষানো সুন্দর করে কুটনো কোটার ঝঞ্ঝাট বাদ। বাটলেই রান্না শেষ!
রান্নাঘরে মিক্সির প্রবেশের পরে বাটনা বাটা এখন বাঁ হাতের খেলা। এক কালে অবশ্য সেই বাটাবাটিও ছিল ঝক্কির। ভারী পাথরের শিলে মশলা রেখে দু’ হাতে নোড়া দিয়ে পেষাই করতে করতে হাতে ব্যথা হয়ে যেত রাঁধুনী বা তাঁদের জোগারেদের। বাটা রান্না সেই সময়ের খাবার।
সব্জি হোক বা মশলা— শিলে ফেলে নানারকম স্বাদবর্ধকের সঙ্গে তাকে মিহি করে বেটে গরম ভাতের পাতে সাজিয়ে দেওয়া হত। ঝাল ঝাল বাটা দিয়েই এক থালা ভাত চালান হয়ে যেত পেটে। মাছ-মাংস বা পোলাও কালিয়ার দরকার পড়ত না।
বাটার জনপ্রিয়তার শুরু মূলত পূর্ববঙ্গেই। পরে অবশ্য পশ্চিমবঙ্গেও সমাদর পেয়েছে।সামনে পৌষ সংক্রান্তি প্রিয় পিঠে-পায়েস-পাটিসাপটায় মন ভরবে বাঙালির। তবে পৌষ পার্বনে মিঠের পাশাপাশি কিছু কড়া থুড়ি ঝাল স্বাদেও জুড়োতে পারেন রসনা। শীতের দুপুরে গরম গরম ভাতের পাশে থাক পূর্ববঙ্গীয় রন্ধনশৈলীতে তৈরি সেই বাটা।
মুলো বাটা
উপকরণ:
সওয়া ১ কাপ টুকরো করে কাটা মুলো
৩ টেবিল চামচ নারকেল কোরা
দেড় টেবিল চামচ সর্ষে বাটা
২টি কাঁচা লঙ্কা (স্বাদ বুঝে)
২ টেবিল চামচ সর্ষের তেল
১/৩ চা চামচ কালো জিরে
স্বাদ মতো নুন
প্রণালী:
মুলো ধুয়ে, খোসা ছাড়িয়ে টুকরো করে কেটে একটা কাঁচা লঙ্কার সঙ্গে মিক্সিতে বেটে নিন। আলাদা করে নারকেল কোরাও বেটে নিন।
এ বার কড়াইয়ে তেল গরম করে কালো জিরে হাতে ভাল করে ঘষে নিয়ে দিয়ে দিন। ভাজার আওয়াজ বেরোলেই মুলো বাটা, সর্ষেবাটা, এক চিমটে নুন দিয়ে কম আঁচে ৩-৪ মিনিট রান্না করুন। তার পরে নারকেল বাটা, কাঁচালঙ্কা বাটা দিয়ে আরও ২-৩ মিনিট রান্না হতে দিন।
এই পর্বে নুনটা স্বাদ মতো ঠিক করে নেবেন। ২-৩ মিনিট পর নামিয়ে নিয়ে গরম ভাতের সঙ্গে উপরে সর্ষের তেল ছড়িয়ে পরিবেশন করুন। মুলো বাটা গরমই খেতে ভাল লাগে।
বিট বাটা
উপকরণ:
১ টি বড় মাপের বিট
২ চা চামচ সর্ষে
২ চা চামচ পোস্ত
২টি কাঁচা লঙ্কা (স্বাদ বুঝে)
আধ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো
আধ চা চামচ লঙ্কা গুঁড়ো
আধ চা চামচ কালো জিরে
৭-৮ কোয়া রসুন
২ টেবিল চামচ সর্ষের তেল
স্বাদ মতো নুন
স্বাদ মতো চিনি
প্রণালী:
বিটের খোসা ছাড়িয়ে ছোট টুকরো করে কুকারে ভাল ভাবে সেদ্ধ করে নিন। এ বার মিক্সিতে সেদ্ধ করা বিটের সঙ্গে সর্ষে, পোস্ত, কাঁচা লঙ্কা, হলুদ এবং লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে মিহি করে বেটে নিন।
কড়াইয়ে তেল দিয়ে তাতে কালো জিরের ফোড়ন দিয়ে রসুন গুলো থেঁতো করে দিয়ে দিন। রসুন ভাজা ভাজা হয়ে গেলে তাতে বিটের মিশ্রণটি দিয়ে স্বাদ মতো নুন এবং চিনি দিয়ে ৬-৭ মিনিট রান্না করুন। জল ভাব শুকিয়ে এলে এবং তেল ছেড়ে এলে গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।
কালো জিরে বাটা
উপকরণ:
১/২ কাপ কালো জিরে
৩ টেবিল চামচ সর্ষের তেল
২টি পেঁয়াজ কুচনো
১০-১২ কোয়া রসুন
৪-৫টি শুকনো লঙ্কা (স্বাদ বুঝে)
১/২ আঁটি ধনেপাতা
স্বাদ মতো নুন
প্রণালী:
প্রথমে কালোজিরে শুকনো খোলায় ভাল করে নেড়ে নিন। ৩ মিনিট মতো নাড়া চাড়া করে সুগন্ধ বেরোলে একটি পাত্রে নামিয়ে রেখে ঠান্ডা হতে দিন। এ বার কড়াইয়ে তেল দিয়ে তাতে শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ কুচি, গোটা রসুন দিয়ে ভাল করে ভেজে তুলে রাখুন। থেকে যাওয়া তেলে ধনেপাতাও ভেজে নিন।
কালোজিরে ঘরের তাপমাত্রায় এলে মিক্সিতে দিয়ে মিহি করে গুঁড়িয়ে নিন। ভাজা পেঁয়াজ, রসুন, শুকনো লঙ্কা, ধনেপাতা ঠান্ডা হলে মিক্সিতে কালোজিরের মধ্যে দিয়ে স্বাদ মতো নুন দিয়ে ভাল ভাবে বেটে নিন।
কালো জিরে বাটা ফ্রিজে রেখে সাত দিন ভাল ভাবে খাওয়া যেতে পারে। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করলে আর কোনও পদ থালার পাশে সাজিয়ে দিতে হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy