জনারণ্য: পুজোর কেনাকাটা করতে নিউ মার্কেট চত্বরে উপচে পড়া ভিড়। রবিবার। ছবি: বিশ্বনাণ বণিক
দেবীপক্ষ শুরুর আগে শেষ রবিবার। দুপুর ১টা। গ্র্যান্ড হোটেলের পাশের গলিতে কার্যত পা ফেলার জায়গা নেই। ‘না দাঁড়িয়ে এগিয়ে চলুন’— সমানে মাইক হাতে বলে চলেছেন দুই পুলিশকর্মী। প্রতিমা দর্শনের নয়, পুজোর কেনাকাটার সেই ভিড় ফুটপাত ছাপিয়ে গিয়েছে নিউ মার্কেটের সামনে পর্যন্ত। ক্রেতা সামলে এক বিক্রেতা অন্য জনকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘‘আজ বৃষ্টি, মিটিং-মিছিল নেই। কমবেশি করে মাল যা ছাড়ার আজই ছেড়ে দে। পরের রবিবার বৃষ্টি আবার কী খেল দেখাবে কে জানে!’’
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির পর একে রোদ ঝলমলে আকাশ, তায় রবিবার। ফলে পুজোর বাজার জমা নিয়ে প্রায় নিশ্চিত ছিলেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ অবশ্য কালো মাথার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিক্রিবাটা না জমার কথাও বললেন। যদিও দিনের শেষে পুজোর বাজারের চেনা ভিড়, হুল্লোড় হতাশ করল না হাতিবাগান, নিউ মার্কেট, গড়িয়াহাটের অধিকাংশ ব্যবসায়ীকে।
পাল্লা দিল শপিং মলগুলিও। গত দুই রবিবারের ভিড়কে ছাপিয়ে গিয়েছে বলে দাবি শহরের অধিকাংশ শপিং মল কর্তৃপক্ষের। বেলা গড়ালে ব্যস্ততা বেড়েছে পুলিশেরও। কোথাও ভিড় সামলাতে পুলিশকে নামতে হল মাইক হাতে। যানবাহন সচল রাখতে আবার কোথাও দড়ি, গার্ডরেল দিয়ে ব্যারিকেড করে জনস্রোত সামলানোর চেষ্টা চলল।
এ দিনের ভিড়ে সব বাজারকে টেক্কা দিয়েছে নিউ মার্কেট। দুপুরের আগেই গোটা এলাকা ঢেকে যায় গিজগিজে কালো মাথায়। ক্রেতার ভিড় যত বেড়েছে, চড়েছে বিক্রেতার স্বর, ‘‘দেড়শো দেড়শো, সাড়ে তিনশো’’। বিক্রেতা আমির ইসলাম বললেন, ‘‘সারা বছরের ব্যবসার বেশির ভাগটাই তো হয় পুজোয়। গত কয়েক দিনের বৃষ্টি বাজার ধরতেই দিচ্ছিল না। আজ যেটুকু হচ্ছে।’’ মনের মতো কানের দুল খুঁজছিলেন শ্রীজা আচার্য। বললেন, ‘‘হাতে ধরে পরখ করে বাজার করার মজাই আলাদা।’’
নিউ মার্কেট চত্বরের ক্রেতার ঢেউ সিঁড়ি টপকে সে ভাবে পৌঁছয়নি বাজারের ভিতরে। এক দোকানদারের আক্ষেপ, ‘‘শুধু মাথা দেখলে হবে! পকেট ভরছে কি না, সেটাও তো দেখতে হবে। যে কয়েক জন আসছেন, ঘোরাফেরা করে দেখে চলে যাচ্ছেন।’’ বিকেলের গড়িয়াহাট চত্বর দেখে মনে হচ্ছিল যেন অষ্টমীর রাত। ব্যবসায়ী স্বপন পাল বললেন, ‘‘দু’বছর ধরে তো বিক্রিই ছিল না। এ বছর তোলা মাল বিক্রি হয়ে গেলেই শান্তি।’’
দুপুরের পর থেকেই হাতিবাগানের ফুটপাত ধরে হাঁটা যাচ্ছিল না। সন্ধ্যায় বিধান সরণি দিয়ে গাড়ি চলাচল থমকে যায়। মেয়ে কোলে আসা দমদমের অয়ন্তিকা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দুটো রবিবার তো বৃষ্টির জন্য বেরোতে পারিনি। ভেবেছিলাম, আজ কেনাকাটা শেষ করব! মনে হচ্ছে না সেটা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy