সহাবস্থান: চম্পাহাটিতে বাড়ির পাশেই বাজির দোকান। নিজস্ব চিত্র
বাজির কারখানা বৈধ না অবৈধ তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন পড়ে না চম্পাহাটিতে। সাদা চোখে বাজির দোকান ও কারখানা এক উঠোনেই। আর তা যে কোনও ভাবেই বৈধ হতে পারে না। সেটা সহজেই বোধগম্য। দক্ষিণ ২৪ পরগনার চম্পাহাটির হারাল, সোলগলিয়া, বেগমপুর, কমলপুর, নাড়িদানা গ্রামগুলিতে অধিকাংশ বাজির কারখানাই অবৈধ। আর বছরের পর বছর অসতর্কতায় একের পর এক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে চলেছে। ওই সব বিস্ফোরণে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। প্রতিটি ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে পুলিশ ও প্রশাসন শুধু নড়েচড়ে বসে। কিন্তু পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয় না।
বুধবার সমর নস্কর নামে এক বাজি ব্যবসায়ীর কারখানা ও দোকানে আগুন লেগে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ওই দোকানের আগুন গা ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকা আরও কয়েকটি কারখানা ও দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মজুত করে রাখা আতশবাজি, চকলেট
বোমা ফেটে আধ ঘণ্টা ধরে একের পর এক বিস্ফোরণ হয়। চম্পাহাটিতে এমন ঘটনা নতুন নয়। বছরে প্রায় ১৫ থেকে ২০টি ঘটনা ঘটে। বছরের পর বছর অবৈধ ভাবে ওই সব এলাকায় আতশবাজি ও চকলেট বোমা তৈরি করা হচ্ছে। অভিযোগ, বৈধ লাইসেন্স ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ছাড়াই চলছে ওই কারবার। পুলিশ ও প্রশাসনের নাকের ডগাতেই চলছে এই অবৈধ বাজি তৈরি ও বিক্রির ব্যবসা। ওই সব গ্রামের বড় রাস্তার পাশেই অন্তত হাজার দেড়েক এমন দোকান রয়েছে, যেগুলি বাড়ির সঙ্গে লাগোয়া। বাজির কারখানাও একই চত্বরে। স্থানীয় সূত্রের খবর, বড় রাস্তা থেকে ভিতরে এই ধরনের বাড়ি তথা বাজির কারখানা প্রায় হাজার দশেক।
আরও পডুন: বাজি ফাটেনি, তার আগেই হাওয়া খারাপ এই শহরের
আরও পডুন: দৈনিক দেড় লক্ষ যাত্রী বহনের ভাবনা মেট্রোয়
এক চিলতে ঘরের ভিতরে এক দিকে তৈরি করা হয় বাজি। আর এক দিকে চলে আগুন জ্বেলে রান্নাবান্নার কাজ। আবার বাড়ির বারান্দাতেই বাজির দোকান। খোলা চোখে দেখেই বোঝা যায়, ওই সব কারখানা অবৈধ। কোনও কাগজপত্র খতিয়ে দেখার প্রয়োজন পড়ে না। কারণ ওই রকম বাড়িতে বৈধ লাইসেন্স দেওয়া যায়ই না। বুধবার বিস্ফোরণের ঘটনার পরে ঘটনাস্থলে আসেন বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু, স্থানীয় বিডিও মোশারফ হোসেন ও বারুইপুর পূর্বের বিধায়ক নির্মল মণ্ডল। এ বারও পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশকর্তা ও প্রশাসনের আধিকারিকেরা এবং বিধায়ক।
বুধবারের ঘটনার পরে বৃহস্পতিবার বারুইপুরের বিডিও মোশারেফ হোসেন বলেন, “পুলিশ প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যেই আমরা বৈঠক করব।” তবে ওই এলাকায় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ‘‘বৈঠকই হয়। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায় না।’’ গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে বারুইপুর পুলিশ জেলার কর্তারা, প্রশাসনিক আধিকারিক এবং বাজি ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছিল। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসুর দাবি, ওই বৈঠকে বাড়িতে কোনও রকম কারখানা ও দোকান করা যাবে না বলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। ফাঁকা জায়গা ছাড়া কোনও বাজির কারখানা করা যাবে না, তা-ও ওই বৈঠকেই ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এলাকায় ওই সব নিষেধাজ্ঞার লিখিত লিফলেট পুলিশের তরফে বিলি করা হয়েছিল।
কিন্তু বাজি ব্যবসায়ীরা যে ওই সব নির্দেশের তোয়াক্কা করেননি এ দিন এলাকায় ঘুরে তা বোঝা গেল। বাড়ির ভিতরেই কারখানা ও দোকান তৈরি হয়েছে এ বারেও।বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, “এই ঘটনার পরে সম্পূর্ণ পরিস্থিতি লিখিত ভাবে প্রশাসনের উচ্চ স্তরে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ অনুযায়ী আলোচনা করে আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy