খুশবু সুন্দর। ছবি : সংগৃহীত।
দক্ষিণী ছবির অভিনেত্রী তিনি। বলিউডেও কাজ করেছেন। তবে খুশবু সুন্দরের পরিচিতি এখন অভিনেত্রী হিসাবে কম, নেত্রী হিসাবেই বেশি। দেশের শাসক দল বিজেপির ন্যাশনাল এগজ়িকিউটিভ কমিটির সদস্য তিনি। জাতীয় মহিলা কমিশনেরও সদস্য। দেশের মেয়েদের নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচানো, তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। সেই খুশবু জানালেন, ছোটবেলায় তিনি নিজেও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এবং নির্যাতিত হয়েছেন নিজের বাবার হাতেই!
নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে খুশবু বলেছেন, বহু দিন ওই অত্যাচারের কথা মুখ ফুটে বলতে পারেননি, নির্যাতন আরও বেড়ে যাওয়ার ভয়ে। পরবর্তী কালে স্বাবলম্বী হওয়ার পরে প্রথম বাবার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। খুশবু বলেছেন, ‘‘বাবাকে নিয়ে যে মা বা ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলব, তার উপায়ই ছিল না। কারণ বাবা আমার উপর যেমন যৌন নির্যাতন করতেন, তেমনই আমার মা এবং ভাইয়ের উপর নির্দয় শারীরিক অত্যাচারও করতেন। আমার মনে হত, কিছু বললে ওই অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে যাবে। তাই ছোট থেকেই মুখ বুজে অত্যাচার সহ্য করতে শিখেছিলাম।’’
খুশবু জানিয়েছেন, তাঁর বাবা যখন মা এবং ভাইয়ের উপর অত্যাচার করতেন, তখন তাঁর কোনও হুঁশ থাকত না। নেত্রীর কথায়, ‘‘বেল্ট, লোহার চেন, জুতোর হিল সবই বাবার অস্ত্র হয়ে উঠত। মাকে দেওয়ালে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে, মাকে লক্ষ্য করে সজোরে ঘুসি চালাতেও দেখেছি আমি!’’ তবে পরিস্থিতি বদলায় খুশবু দক্ষিণী ছবির কাজ শুরু করার পরে।
প্রথম দিকে ছবির সেটেও খুশবুর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন তাঁর বাবা। শ্যুটিংয়ে মারধরও করতেন। এমনকি, কাজ শেষে যখন হোটেলে ফিরতেন তখনও চলত অত্যাচার। খুশবু বলেছেন, ‘‘আমার কেশসজ্জা শিল্পী উবিন প্রথম বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলে। ও দেখেছিল, আমার বাবা আমাকে কী ভাবে স্পর্শ করেন, কী ভাষায় কথা বলেন, আমার সামনে কেমন ভাবভঙ্গী করেন। উবিন তখন এক জন একা-মা। চার সন্তানকে একা বড় করেছে। ওরই প্রথম বিষয়টি মনে হয়— আমাদের বাবা-মেয়ের সম্পর্কে কিছু একটা গোলমাল রয়েছে। তার পরেই ওর কাছে সব খুলে বলি আমি। উবিনই আমাকে মায়ের সঙ্গে কথা বলতে বলে।’’
খুশবু জানিয়েছেন, বাবার কথা মায়ের কাছে তিনি বলেন তারও অনেক পরে। সিনেমা জগতে প্রায় বছর দুই কাটিয়ে ফেলার পরে যখন খুশবু স্বাবলম্বী, তখন তাঁর বাবার অত্যাচার আরও বাড়ে। খুশবু বলছেন, ‘‘হয়তো তিনি বুঝতে পারছিলেন, মেয়ে হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। আর তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন না। কারণ, আমি ধীরে ধীরে না বলতে শিখছিলাম। মাকে সেই সময়েই বাবার অত্যাচারের কথা বলেছিলাম আমি। আমার সহকর্মীরাও আমাকে সমর্থন করতেন। কিন্তু বাবার মুখের উপর কথা বলতে পারতেন না। কারণ, তখনও আমি নাবালিকা।’’
মেয়ের উপর বাবার অত্যাচার এক দিন হঠাৎ থামে। খুশবু বলছেন, ‘‘১৯৮৬ সালের সেপ্টেম্বরের এক রাতে হঠাৎই বাড়ি থেকে কাউকে না জানিয়ে বেরিয়ে যান তিনি। হয়তো বুঝতে পারছিলে্ন, এখানে আর বিশেষ সুবিধা করতে পারবেন না। তার পর থেকে তিনি কোথায় ছিলেন, কেমন ছিলেন, তার কোনও খোঁজ আমরা নিইনি। সম্ভবত তিনি গত বছর মারা গিয়েছেন। কিন্তু কোথায় কী ভাবে, তা জানি না। জানার চেষ্টাও করিনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy