প্রতীকী ছবি।
করোনা থেকে সেরে উঠলেও বিভিন্ন রোগে ভুগছেন অনেকেই। কারও কারও সেই রোগের কারণে মৃত্যুও ঘটেছে। কেউ আবার দীর্ঘ রোগভোগের কারণে কাজ হারিয়েছেন। করোনা-পরবর্তী শারীরিক ও আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির সেই সব তথ্য এ বার একত্রিত করে শুরু হয়েছে গবেষণা। অন্য দিকে, পুর এলাকায় ওই সংক্রান্ত একটি তথ্যভাণ্ডার তৈরির কাজেও হাত দিচ্ছে কলকাতা পুরসভা।
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের চার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজি’ (আইআইসিবি)-র এক গবেষকের যৌথ উদ্যোগে শুরু হয়েছে ‘পোস্ট কোভিড ফলো-আপ সার্ভে’। দু’টি পদ্ধতিতে চলছে তথ্য জোগাড়ের কাজ। সম্প্রতি গবেষণার বিষয়ে এথিক্স কমিটির ছাড়পত্র মিলেছে বলে জানাচ্ছেন প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর তথা বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের বক্ষরোগ চিকিৎসক কৌশিক চৌধুরী। তাঁর কথায়, ‘‘করোনা সেরে গেলেও দুর্বলতার পাশাপাশি বক্ষ, স্নায়ু ও পেটের রোগ-সহ বিবিধ অসুখে অনেকেই ভুগছেন। কিন্তু সকলেই যে পোস্ট কোভিড ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য আসছেন, তা নয়। সংখ্যাটা ১০০-র মধ্যে ৪০ জন। তাই প্রকৃত সংখ্যা কত, তার প্রভাব কতটা, কোভিড-পরবর্তী সময়ে কী ধরনের সমস্যা বেশি হচ্ছে— সেই সব বুঝতেই এই বিশ্লেষণ।’’
একই ভাবে তৃতীয় ঢেউ আসার আগে তথ্যের দিক থেকেও প্রস্তুতি সেরে রাখতে চাইছে পুরসভা। সম্প্রতি ১১ নম্বর বরোয় স্বাস্থ্য বিভাগের প্রশাসনিক বৈঠকের পরে তথ্যভাণ্ডার তৈরির কথা জানান পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‘ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রেও এমন তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা হয়েছিল, যা শহরে মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেছে।’’ পুর স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, অতিমারির প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে ১৪৪টি ওয়ার্ডের কোন এলাকায় কতটা প্রভাব পড়েছিল, মৃত্যু কত, প্রতিষেধকের কার্যকারিতা কত, আক্রান্তদের মধ্যে মহিলা কত জন— এই সব তথ্য নিয়েই তথ্যভাণ্ডারটি তৈরি করা হবে।
অন্য দিকে, এক মাসের মধ্যে গবেষণার প্রথম পর্বের রিপোর্ট প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন আইডি হাসপাতাল এবং আইআইসিবি-র চিকিৎসক-গবেষকেরা। প্রথম দিন থেকে এ পর্যন্ত আইডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন, এমন এক হাজার জনকে ফোন করে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৬০০ জনের তথ্য নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। বেলেঘাটা আইডি-র অধ্যক্ষ অণিমা হালদার ও সুপার আশিস মান্নার পাশাপাশি গবেষণায় যুক্ত আছেন চিকিৎসক কৌশিক চৌধুরী, সায়ন্তন বন্দ্যোপাধ্যায়, শেখররঞ্জন পাল এবং সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ যোগীরাজ রায়। আইআইসিবি-র তরফে রয়েছেন গবেষক দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায়।
২০-২৫টি প্রশ্নের উত্তর থেকে পাওয়া তথ্যের উপরে হচ্ছে বিশ্লেষণ। চিকিৎসক-গবেষকেরা জানাচ্ছেন, করোনা-পরবর্তী কী কী সমস্যা, কত দিন পর থেকে তা শুরু হচ্ছে, করোনা পজ়িটিভ থাকার সময়ে রোগীর অবস্থা কেমন ছিল, পরবর্তী সমস্যার সঙ্গে সেটির যোগ রয়েছে কি না, কোমর্বিডিটি কতটা প্রভাব ফেলছে, করোনার কারণে কাজ হারানোর ফলে ওই ব্যক্তির কী ভাবে চলছে— এমন নানা বিষয়ে জানা হচ্ছে। সেই তথ্য সংখ্যাতত্ত্বের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। দীপ্যমানবাবু বলেন, ‘‘কোভিড-পরবর্তী সমস্যা নিয়ে বিশ্বে গবেষণা চলছে। ভারতেও সেটা হওয়া জরুরি। রাজ্যের এমন একটি হাসপাতাল এই কাজে অংশ নিয়েছে, যেখানে সরাসরি করোনা রোগীদের চিকিৎসা হয়েছে। পাশাপাশি দেশের অন্য প্রান্ত থেকেও তথ্য নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy