Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
সাত জনের নামে চার্জশিটে দাবি পুলিশের
Murder

Murder: খুড়তুতো ভাই কষেন সব্যসাচী খুনের ‘ছক’

চার্জশিটে পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় আট জনের প্রত্যক্ষ যোগযোগ পাওয়া গিয়েছে।

নিহত সব্যসাচী।

নিহত সব্যসাচী। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়না শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:২২
Share: Save:

কলকাতার বড়বাজারের ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডলের (৩৮) খুনের চার্জশিট আদালতে জমা দিল পুলিশ। ঘটনার ৮৮ দিনের মাথায়, সাত জনের বিরুদ্ধে ৭২২ পাতার চার্জশিট শুক্রবার বর্ধমান আদালতে জমা দেন তদন্তকারী অফিসার। পুলিশের দাবি, নিহতের খুড়তুতো ভাই সোমনাথ মণ্ডল ‘সুপারি’ দিয়ে, দুষ্কৃতী নিয়োগ করে পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র করে খুন করিয়েছেন। খুনের কারণ হিসাবে পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে ‘বিবাদ’কে দায়ী করেছে পুলিশ। তবে এফআইআরে নাম থাকা সোমনাথের বাবা, মা ও ভাইয়ের নাম আপাতত চার্জশিটে রাখা হয়নি। তদন্তকারীদের দাবি, পরবর্তী তদন্তে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ মিললে, অতিরিক্ত বা সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করার ব্যবস্থা রয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্ধমান সদর) কল্যাণ সিংহ রায় বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। অভিযুক্তেরা যাতে দ্রুত সাজা পায়, সে চেষ্টা করা হবে।’’ সংশোধনাগারে থেকেই বিচার প্রক্রিয়া চলবে অভিযুক্তদের।

গত ২২ অক্টোবর হাওড়ার শিবপুরের বাসিন্দা সব্যসাচী ও তাঁর চার সঙ্গী রায়নার দেরিয়াপুরে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। সন্ধ্যায় প্রথমে গুলি চালিয়ে, পরে, নৃশংস ভাবে কুপিয়ে খুন করা হয় তাঁকে। রাতেই পুলিশ বাড়ির এক তলার বারান্দা থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে। নিহতের বাবা, বড়বাজারের ত্রিপল ব্যবসায়ী দেবকুমার মণ্ডল নিজের ভাই, ভ্রাতৃবধূ ও দুই ভাইপোর নামে অভিযোগ করেন।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, হাওড়ার নবীন সেনাপতি লেনের ছ’কাঠা জমির উপরে তিন তলা বাড়ি রয়েছে সব্যসাচীর পরিবারের। একই পরিমাণ জমিতে একটি একতলা বাড়িও রয়েছে। গত অগস্টে সেখানেও ‘হামলা’ হয়। তার পর থেকে হাওড়ার নেতাজি সুভাষ রোডের একটি ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করে সব্যসাচীর পরিবার। চার্জশিটে পুলিশ জানিয়েছে, হাওড়ার ওই ‘হামলা’র পিছনেও ‘পারিবারিক দ্বন্দ্ব’ ছিল। এর পরেই, সোমনাথ জানিসার আলম ওরফে রিকিকে ৫০ লক্ষ টাকা ‘সুপারি’ দেন বলে দাবি। পেশায় সিসি ক্যামেরা বিক্রেতা রিকি কলকাতার নারকেলডাঙার বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, এলাকার পরিচিত দুষ্কৃতীদের নিয়ে দল গড়ে সে।

চার্জশিটে পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় আট জনের প্রত্যক্ষ যোগযোগ পাওয়া গিয়েছে। যাদের মধ্যে সোমনাথ-সহ সাত জনকে গ্রেফতার হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, কলকাতা থেকে মোটরবাইকে করে দুষ্কৃতীদের গাড়িকে রাস্তা চিনিয়ে নিয়ে আসেন সোমনাথ। বাড়ির কাছে গিয়ে সব্যসাচীকেও চিনিয়ে দেন। পরে, রিকিরা সব্যসাচীকে ডেকে গুলি করে। আহত অবস্থায় বারান্দা দিয়ে ছুটে পালানোর সময়ে কুপিয়ে খুন করা হয় তাঁকে। রিকিরও হাতে চোট লাগে। ধৃতদের মধ্যে মহম্মদ জাভেদ আখতার, মেহেতাব আলম, সাইদে আলম ঘটনাস্থলেই ছিল। নিহতের ‘দেহরক্ষী’ রাজবীর সিংহ বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে তাদের চিহ্নিতও করেন।

পুলিশের দাবি, ধৃতদের মধ্যে তিন জনের আঙুলের ছাপ মিলেছে। রায়নার সাঁকটিয়া থেকে একটি মুঙ্গেরে তৈরি ৯ এমএম পিস্তল এবং ওয়ানশটার উদ্ধার হয়। দু’টি থেকেই গুলি চলেছিল বলে ‘ব্যালিস্টিক রিপোর্ট’-এ প্রমাণ মিলেছে। যে গাড়ি ও মোটরবাইকে করে দুষ্কৃতীরা দেরিয়াপুরে এসেছিল, সেগুলিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত রক্তের নমুনা, জামার ছেঁড়া অংশের ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট আসেনি।

নিহতের দিদি মঞ্জুরি পাত্র এ দিন বলেন, ‘‘ মাত্র মাস ন’য়েক বয়সে সব্যসাচীর মেয়ের বাবা বলে ডাকার অধিকার যারা কেড়ে নিল, তাঁদের কঠিন শাস্তি চাইছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy