স্যানিটাইজ করা হচ্ছে দোকানটি। নিজস্ব চিত্র।
আর্মহার্স্ট স্ট্রিটের পর এ বার উল্টোডাঙার গৌরীবাড়ি। এ বার করোনার উপসর্গ থাকা এক মিষ্টি ব্যবসায়ীর শেষৃকৃত্য নিয়ে ফের টালবাহানার অভিযোগ উঠল প্রশাসনের বিরুদ্ধে। মারা যাওয়ার আগে ওই ব্যক্তির কোভিড-১৯ টেস্ট হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত সেই রিপোর্ট হাতে না আসায় দেহ সরাতে পুলিশ এবং পুরসভা উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ। বুধবার রাতে মৃত্যুর পর প্রায় ১৬ ঘণ্টা নিজের মিষ্টির দোকানে পড়ে ছিল ওই ব্যবসায়ীর দেহ। শুক্রবার সকালে ওই ব্যক্তির রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর অবশ্য নিয়ম মেনে তাঁর শেষকৃত্যের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
গৌরীবাড়ির বাসিন্দা ওই ব্যবসায়ীর বয়স ৫৭ বছর। এলাকায় তাঁর একটি মিষ্টির দোকান আছে। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেল থেকে ওই ব্যক্তি অসুস্থ বোধ করেন। করোনার উপসর্গ থাকায় তার আগে একটি বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে কোভিড-পরীক্ষাও করান তিনি। ওই রাতে শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় প্রথমে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানান, ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, এর পর ওই ব্যক্তির মৃত্যুর শংসাপত্র দিতে চাননি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এর পর স্থানীয় যে চিকিৎসককে দেখিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি, তাঁর কাছে দেহ নিয়ে যাওয়া হয়। তিনিও শংসাপত্র দিতে অস্বীকার করেন। সেই রাতের মতো মিষ্টির দোকানেই রেখে দেওয়া হয় তাঁর দেহ।
পরিবারের অভিযোগ, বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলেও করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট না আসায় তারা গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি। পরে ওই বেসরকারি ল্যাবরেটরি রিপোর্ট পাঠানো হয়, তাতে দেখা যায়, ওই ব্যক্তির করোনা পজি়টিভ ছিল। গোটা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রতিবাদ জানান। পথে নেমে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। এর পর এ দিন দুপুরের পর কলকাতা পুরসভা এবং পুলিশ উদ্যোগী হয়। যদিও অসহযোগিতার এই অভিযোগ মানতে চাননি স্থানীয় কাউন্সিলর শুক্লা ভোরে। তাঁর দাবি, আগে থেকে পুরসভাকে কিছুই জানানো হয়নি। জানার পর পুরসভার তরফে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘মিষ্টির দোকানের ওই মালিক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। একটি বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে তাঁর করোনা পরীক্ষা হয়েছিল। কিন্তু, আগে থেকে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। কিছু মানুষ উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করছেন। আইসিএমআর-এর নিময় মেনে যাতে সব কিছু করা হয়, তার ব্যবস্থাও করেছি আমরা।”
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পর পথে ৪ হাজার বেসরকারি বাস, স্বস্তি যাত্রীদের
মৃত ওই ব্যক্তি শেষ দিন পর্যন্ত দোকানে এসেছেন। সেখান থেকে বহু মানুষ প্রতি দিন মিষ্টিও কিনেছেন। মালিকের মৃত্যুর পর সেখানে কর্মরত বাকি কর্মচারীদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করানো হয়েছে। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এক জন মানুষ মারা যাওয়ার পরেও ১৬ ঘণ্টা তার দেহ একটা দোকানের ভিতর ফেলে রাখা হল, অথচ প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। পুরসভা সূত্রে খবর, আইসিএমআর-এর নিময় মেনে মিষ্টি ব্যবসায়ীর দেহ সরানো হয়েছে। তার পর ওই দোকান স্যানিটাইজ করা হয়। দোকানের সাত কর্মীকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হতে পারে।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে গুলি-যুদ্ধের মধ্যে নাতিকে বাঁচিয়ে নিহত দাদু
এর আগে আর্মহার্স্ট স্ট্রিটে ৭১ বছরের এক বৃদ্ধের দেহ করোনা রিপোর্ট আসার আগে পর্যন্ত বাড়িতেই ফ্রিজারের মধ্যে রেখে দিতে হয়েছিল। সেই ক্ষেত্রেও প্রসাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy