Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus

জল-বিস্কুটের ভরসাতেই গড়িয়ে যাচ্ছে দিনের অর্ধেক

শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কোনও এলাকায় কেউ যাতে অভুক্ত না থাকেন সে জন্য কাজ করছে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তবে কোনও এলাকায় বাচ্চারা যাতে অভুক্ত না থাকে সে জন্য কাজ করছে চাইল্ডলাইন।’’

অপেক্ষা: এন আর এসের বাইরে বাবার কোলে আইনুল। নিজস্ব চিত্র

অপেক্ষা: এন আর এসের বাইরে বাবার কোলে আইনুল। নিজস্ব চিত্র

দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২০ ০৬:১৬
Share: Save:

ট্রামলাইনের ধারে বাবার কোলে বসে ঘনঘন জল খাচ্ছে ছেলেটি। খিদে পেয়েছে বুঝে তাড়াতাড়ি বাবা প্যাকেট থেকে বিস্কুট বার করে তিন বছরের ছেলের হাতে দেন। সবে বেলা ১১টা। খাবারের গাড়ি আসতে অন্তত দেড়-দু’ঘণ্টা দেরি। তত ক্ষণ ওইটুকু খেয়েই খাকতে হবে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার সন্দেশখালির বাসিন্দা আলকাস মোল্লা বলেন, ‘‘আমি তো সকাল থেকে কোনও মতে কাটিয়ে দিই। সমস্যা হয় বাচ্চাটাকে নিয়ে। দুপুর পর্যন্ত ওকেও আমার সঙ্গে এ ভাবেই জল-বিস্কুট খেয়ে থাকতে হয়।’’

এনআরএস হাসপাতালের বাইরে ট্রামলাইনের ধারে রাস্তায় গামছা পেতে সকাল থেকে ছোট ছেলে আইনুলকে নিয়ে বসে থাকেন আলকাস। দিন দশেক আগে লকডাউনের মাঝে বড় ছেলের চিকিৎসা করাতে স্ত্রী ও ছোট ছেলেকে নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে

কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসেন আলকাস। চিকিৎসকেরা পরীক্ষার পরে রোগীকে এনআরএস হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানে পেটে অস্ত্রোপচার হয় বছর এগারোর সাইনুলের। আলকাস বলেন, ‘‘মাদ্রাসা থেকে ফেরার সময়ে শুকনো পুকুরে পড়ে পেটে চোট পেয়েছিল সাইনুল। বুক-পেট ফুলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। গ্রামের চিকিৎসক পরীক্ষা করে ছেলেকে তাড়াতাড়ি কলকাতায় নিয়ে যেতে বলেন।’’ সেই থেকে স্ত্রী ও ছোট ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালেই রাত কাটছে তাঁর।

স্ত্রী থাকছেন সাইনুলের সঙ্গেই। সেখানে যেটুকু খাবার মেলে মা-ছেলের কোনও মতে চলে যায়। বাবা ও ছোট ছেলে হাসপাতালের চাতালের একটু ফাঁকা জায়গা খুঁজে রাতে শুয়ে থাকেন। সকাল থেকে রাস্তায় বসে চলে খাবারের অপেক্ষা। আলকাস জানান, হাসপাতাল চত্বরে সংস্থার গাড়ি ঢুকতে দেয় না। তাই বাইরে ছায়ায় বসে থাকি। মোড়ে গাড়ি এলে দু’জনে যাই। বেশি ভাত পেলে স্ত্রীকে দিয়ে আসি। শুনছি লকডাউন বাড়বে। এ ভাবে কত দিন চলবে জানি না!’’

শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কোনও এলাকায় কেউ যাতে অভুক্ত না থাকেন সে জন্য কাজ করছে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তবে কোনও এলাকায় বাচ্চারা যাতে অভুক্ত না থাকে সে জন্য কাজ করছে চাইল্ডলাইন।’’ কিন্তু সকাল থেকে যে দীর্ঘক্ষণ এই শিশুরা অভুক্ত থাকছে? তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ ক্ষেত্রে শিশুটি বা তার পরিবারের ঠিকানা বা রাস্তার নাম, পরিবারের কারও ফোন নম্বর চাইল্ড লাইনকে দিলে সংস্থার প্রতিনিধিরা সেখানে গিয়ে বাচ্চাকে শুকনো খাবার, দুধ দিয়ে আসছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Covid-19 NRS Food
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy