প্রতীকী ছবি।
করোনা পরীক্ষা করানোর নামেও এ বার ভুয়ো রিপোর্ট দিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ!
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে নেতাজিনগর থানা। তাদের নাম, বিশ্বজিৎ শিকদার, ইন্দ্রজিৎ শিকদার ও অনীত পায়রা। বিশ্বজিৎ ও ইন্দ্রজিৎ দুই ভাই। বিশ্বজিৎ এসএসকেএম এবং ইন্দ্রজিৎ আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ল্যাবরেটরির চুক্তিভিত্তিক কর্মী। তবে অনীত কোনও সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত নয়। দালাল হিসেবেই সে পরিচিত।
পুলিশ জানিয়েছে, নেতাজিনগর থানা এলাকার নাকতলা রোডের বাসিন্দা এক ব্যাঙ্ককর্মী গত কয়েক দিন ধরে জ্বর-সর্দিতে ভুগছিলেন। তিনি নিজের করোনা পরীক্ষা করাতে চেয়ে স্থানীয় এক চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন।ওই চিকিৎসক তখন একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে তাঁকে ফোন করে নিতে বলেন। ওই ব্যাঙ্ককর্মী সেই নম্বরে ফোন করলে তাঁকে বিশ্বজিতের নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়। তাঁকে এ-ও বলা হয়, বিশ্বজিৎ একটি নামী ল্যাবরেটরির কর্মী। সেই মতো বিশ্বজিৎকে ফোন করেন তিনি।
এর পরে গত ২৫ জুলাই ব্যাঙ্ককর্মীর বাড়িতে গিয়ে ইন্দ্রজিৎ তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে। শুধুমাত্র করোনা পরীক্ষার জন্যই দিতে হয়েছিল দু’হাজার টাকা। কিন্তু রিপোর্ট তাঁর হাতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। দু’দিন পরে হোয়াটসঅ্যাপে তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এর মধ্যে ২৭ জুলাই ওই ব্যক্তির শরীর আরও খারাপ হওয়ায় পরিবারের লোকজন তাঁকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু ওই ব্যাঙ্ককর্মীকে বাঁচানো যায়নি। এর পরে মৃতের সমস্ত উপসর্গের কথা শুনে হাসপাতাল জানতে চায়, তাঁর করোনা পরীক্ষা হয়েছিল কি না। পরিবারের সদস্যেরা হোয়াটসঅ্যাপে আসা সেই রিপোর্ট দেখান। হাসপাতালকে এ-ও জানানো হয়, হাতে কোনও রিপোর্ট পাননি তাঁরা। হোয়াটসঅ্যাপের রিপোর্টে যে কাগজের ছবি তুলে পাঠানো হয়েছিল, তাতে লেখা ছিল, ওই ব্যক্তি কোভিড নেগেটিভ। চিকিৎসকেরা দেখেন, সেটি পেন দিয়ে হাতে লেখা। এর পরেই তাঁদের চোখ যায় এসআরএফ আইডি-তে। দেখা যায়, সেটিও পেন দিয়ে লেখা। তখনই তাঁরা বুঝতে পারেন যে, ওই রিপোর্টটি জাল! এর পরেই মৃতের স্ত্রী নেতাজিনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
তদন্তে নেমে পুলিশ ওই তিন জনকে গ্রেফতার করার পরে জানতে পারে, বিশ্বজিৎ ও ইন্দ্রজিৎ সরকারি হাসপাতালের ল্যাবরেটরিতে কাজ করে। তারা আইসিএমআর-এর ওয়েবসাইটে গিয়ে ফর্ম ডাউনলোড করে তার প্রতিলিপি তৈরি করেছিল। আর সেই প্রতিলিপিতেই পেন দিয়ে এসআরএফ আইডি ও রিপোর্ট নেগেটিভ লিখেছিল। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, কোভিডের রিপোর্টে কোনও কিছুই হাতে লেখা হয় না। এসআরএফ আইডি সিস্টেম থেকেই তৈরি হয়ে যায়। আর রিপোর্টের ফলাফলও হাতে লেখা যায় না।
তিন জনকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও প্রশ্ন উঠেছে, এ ভাবে সরকারি হাসপাতালের চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা কী করে করোনার মতো পরীক্ষার জাল রিপোর্ট তৈরি করল? তা হলে কি এরা এমন আরও রিপোর্ট তৈরি করেছে বা আরও কেউ এদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে?
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ধৃত তিন জন এই ধরনের আর কোনও জাল রিপোর্ট কাউকে দেয়নি। তবে আর কেউ এই জালিয়াতিতে যুক্ত রয়েছে কি না, তা জানতে ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy