ছবি পিটিআই।
করোনা-সংক্রমণে আতঙ্কের অন্য নাম চিন। দেশ জুড়ে লকডাউন শুরুর আগে পর্যন্ত এ শহরের বিদেশি পণ্যের কয়েক হাজার ক্যারিয়ারের (বাহক) নিত্য যাতায়াত ছিল চিনে। এখন তাঁরা কোথায়? সংক্রমিত নন তো কেউ? তাঁদের প্রতি কি আদৌ প্রশাসনের নজর রয়েছে? অভিযোগ উঠছে, এ শহরে লাফিয়ে বাড়তে থাকা আক্রান্তের পরিসংখ্যান দেখেও টনক নড়ছে না প্রশাসনের।
কলকাতা পুরসভার ৭৭ এবং ৭৮ নম্বর ওয়ার্ড। ওই দু’টি ওয়ার্ডের কার্ল মার্ক্স সরণি, ডেন্ট মিশন লেন এবং মনসাতলা লেনে অসংখ্য বিদেশি পণ্যের বাজার রয়েছে। দু'টি ওয়ার্ডের হাজার পাঁচেক বাসিন্দা ওই সব বাজারে জিনিস সরবরাহ করতে প্রতি মাসে নিয়মিত চিনে যাতায়াত করেন। ডেন্ট মিশন লেন, ডক্টর সুধীর বসু রোড, ইকবালপুর রোড, ইকবালপুর লেন, মোমিনপুর রোড, রজব আলি লেন, শাহ আমান লেনে থাকেন ওই ক্যারিয়ারেরা।
লকডাউনের পরেও তাঁরা এলাকায় ঘুরছেন বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুরসভার তথ্য বলছে, অতি ঘিঞ্জি দু’টি ওয়ার্ড। অধিকাংশ বাড়িতেই পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশি। অর্থাৎ, ইতিমধ্যে যদি কেউ সংক্রমিত হয়ে থাকেন, তাঁর থেকে আশপাশে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, এমন স্পর্শকাতর সময়ে পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতর, কেউই ক্যারিয়ারদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করেনি।
আতঙ্কিত বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই বাজারগুলিতে চিন থেকে আনা বৈদ্যুতিন যন্ত্র, জামাকাপড়, প্রসাধনী দ্রব্য স্তূপ হয়ে পড়ে রয়েছে। সে সব জীবাণুমুক্ত করা হয়নি। যদিও এখন বন্ধ বাজার। তবুও শঙ্কা কাটছে না স্থানীয়দের। ডেন্ট মিশন লেনের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মুজিব আলম বলেন, “খুব ঘিঞ্জি এই এলাকা। কোনও ভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে গেলে তা শহরে মহামারির চেহারা নেবে।” স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, ওই এলাকায় বহু মানুষ লকডাউন উপেক্ষা করে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁদের অনেকেই মাস্কও পরছেন না।
কী করছে পুরসভা? ৭৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শামিমা রেহান খান অবশ্য পুরসভাকে জানানোর পর্যায়েই আটকে আছেন। এ দিকে, এই ক্যারিয়ারদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার দায়িত্ব নিয়ে পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। ডেপুটি মেয়র তথা মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ দায় চাপাচ্ছেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের উপরে। তিনি বলেন, “জীবাণুনাশক স্প্রে ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হবে।” স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অবশ্য বলছেন, “মূল দায়িত্ব পুরসভার। ওরা তথ্য স্বাস্থ্য দফতরকে দিলেই দফতর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।”
স্বাস্থ্য পরীক্ষা যে জরুরি, মানছেন পরজীবী বিশেষজ্ঞ অমিতাভ নন্দী। তিনি বলছেন, “জড়বস্তুতে ভাইরাস দীর্ঘদিন সক্রিয় থাকে না। তা ছাড়া বদ্ধ স্থানে তাপমাত্রা বেশি থাকায় ওই সব দ্রব্য থেকে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে ওই ক্যারিয়ারদের জন্য দ্রুত স্বাস্থ্য পরীক্ষা-সহ যাবতীয় ব্যবস্থা করা উচিত প্রশাসনের।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy