Advertisement
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Corona

অমিল অক্সিজেন ও অ্যাম্বুল্যান্স, মৃত্যু করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধার

দেহ বাড়ি থেকে সৎকারের জন্য নিয়ে যেতে দুপুর গড়িয়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ দেহ এ ভাবে পড়ে থাকায় আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২১ ০৫:১৮
Share: Save:

শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে এক বৃদ্ধার। তাঁর পরিবারের লোকেরা হন্যে হয়ে বিভিন্ন জায়গায় অক্সিজেনের খোঁজ শুরু করেছেন। পাশাপাশি, তাঁদের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গেও। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ হয়নি। এ দিকে, রাতভর খুঁজেও মিলল না অক্সিজেন। মিলল না হাসপাতালে যাওয়ার জন্য কোনও অ্যাম্বুল্যান্স। বাড়িতেই অক্সিজেনের অভাবে ধুঁকতে ধুঁকতে ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল।

বুধবার ভোরে লেক টাউনের ১ নম্বর পল্লিশ্রী এলাকার এই ঘটনায় ভোগান্তির এখানেই শেষ হয়নি বলে অভিযোগ। ওই বৃদ্ধার দেহ বাড়িতেই দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকে বলে দাবি পরিবারের। শেষে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। একটি এজেন্সি সৎকারের ব্যবস্থা করে। দেহ বাড়ি থেকে সৎকারের জন্য নিয়ে যেতে দুপুর গড়িয়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ দেহ এ ভাবে পড়ে থাকায় আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়।

দক্ষিণ দমদম পুরসভা এলাকার শ্রীপল্লিতে ২৬ এপ্রিল এক বৃদ্ধ করোনায় আক্রান্ত হয়ে কার্যত বিনা চিকিৎসায় মারা যান বলে অভিযোগ উঠেছিল। সে ক্ষেত্রেও ১১ ঘণ্টা ধরে দেহ বাড়িতে পড়ে ছিল।

লেক টাউনের ১ নম্বর পল্লিশ্রী এলাকার ওই পরিবার সূত্রের খবর, বুধবার ভোর ৫টার কিছু পরে মৃত্যু হয় বছর পঁয়ষট্টির ওই বৃদ্ধার। চার দিন আগে তিনি জ্বরে আক্রান্ত
হয়েছিলেন। তার পরে করোনা পরীক্ষা করানো হয়। মঙ্গলবার সেই রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তখনও তাঁর শারীরিক অবস্থা আপাতদৃষ্টিতে স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু রাতেই শুরু
হয় প্রবল শ্বাসকষ্ট। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য তখন অ্যাম্বুল্যান্সের খোঁজ করেন পরিচিতেরা। পরিবার সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য দফতরে যোগাযোগ করলে একটি নম্বর দেওয়া হয় তাঁদের। সেই নম্বরে যোগাযোগ করলে ফর্ম ভরতে বলা হয়। এরপরে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে, শয্যা ফাঁকা থাকলে খবর দেওয়া হবে।

তত ক্ষণে পরিবারের লোকেরা অ্যাম্বুল্যান্স এবং অক্সিজেনের খোঁজ চালু রেখেছিলেন। কিন্তু কোনওটাই মেলেনি। পরিবারের এক সদস্যার অভিযোগ, স্বাস্থ্য দফতর থেকে হাসপাতালে ভর্তির বিষয়ে বিশেষ কোনও সহযোগিতা মেলেনি। কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হল ওই বৃদ্ধার।

পুলিশ সূত্রের খবর, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। দুপুর নাগাদ বৃদ্ধার দেহ সৎকারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

তবে এই নিয়ে এলাকায় প্রবল আতঙ্ক ছড়ায়। সংক্রমণ ছড়ানোর ভয়ে অনেকে দরজা-জানলা বন্ধ করে দেন। চার দিনের ব্যবধানে একই ওয়ার্ডে পর পর দু’বার একই ধরনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে প্রশাসন অ্যাম্বুল্যান্স এবং শববাহী যানের ব্যবস্থা করুক। অন্তত বিপদের এমন সময়ে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার সুযোগটা পান এলাকাবাসী।

দক্ষিণ দমদম পুরসভার এক শীর্ষ প্রশাসক এর আগের ঘটনার সময়ে জানিয়েছিলেন, তাঁরা একটি এজেন্সির মাধ্যমে সৎকারের ব্যবস্থা করেছেন। ইতিমধ্যে একাধিক ঘটনায় ওই এজেন্সিই কাজ করেছে।

পাশাপাশি, বুধবার বিকেল থেকে শুধু করোনায় আক্রান্ত বা মৃতদের জন্য চারটি অ্যাম্বুল্যান্স এবং দু’টি শববাহী যান তাঁরা চালু করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corona COVID-19 coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE