সাবধানি: যাত্রীদের হাতে স্যানিটাইজ়ার দিচ্ছেন দমদম স্টেশন অটো রুটের এক চালক। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
কেউ কিনে রেখেছেন নতুন স্যানিটাইজ়ার, কেউ বা নতুন করে অটোয় ঝাড়পোঁছ শুরু করেছেন। শহরের মেট্রো স্টেশনগুলির রুটে চলাচলকারী অটোচালকদের মুখে অবশেষে হাসি ফুটেছে। সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা নিটের পরীক্ষার্থীদের জন্য আগামী রবিবার এবং আগামী সোমবার থেকে সাধারণ যাত্রীদের জন্য চালু হচ্ছে মেট্রো।
তবে একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, মেট্রো চালুর সঙ্গে সঙ্গে অটোয় যাত্রী বাড়লে দূরত্ব-বিধি ঠিক মতো মানা হবে তো?
নিত্যযাত্রীদের অনেকের মতে, মেট্রোয় নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তবে সে ক্ষেত্রে মেট্রো নির্ভর অটোগুলিকেও দূরত্ব-বিধি বজায় রেখে দাঁড়ানোর নির্দেশিকা জারি করা হোক। না হলে মেট্রো স্টেশন থেকে বেরিয়ে অটো ধরতে গিয়ে দূরত্ব-বিধির দফারফা হয়ে যাবে।
নাগেরবাজার-দমদম রুটের অটো কার্যত পুরোটাই মেট্রো নির্ভর। ওই রুটের এক চালক শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আগে যেখানে আট ঘণ্টা অটো চালিয়ে ১৬টি ট্রিপ করতাম। এখন ১২ ঘণ্টায় আটটি ট্রিপ করি। তা-ও রোজ গাড়ি চালাই না। উপার্জন অর্ধেকেরও কম হয়ে গিয়েছে। এ বার যদি রোজগার বাড়ে।”
ওই অটো রুটের চালকেরা জানাচ্ছেন, আগে তাঁরা অটোয় পাঁচ জন বসিয়ে মাথাপিছু ৭ টাকা করে নিতেন। এখন অটোয় তিন জন বসিয়ে মাথা পিছু দশ টাকা করে নেন। তাতেও তাঁদের ট্রিপ পিছু পাঁচ টাকা করে লোকসান হচ্ছে।
তবে মেট্রো চালু হয়ে গেলে কি তাঁরা আবার পাঁচ জন যাত্রীতে ফিরে যাবেন? তা হলে সামাজিক দূরত্ব কী ভাবে বজায় থাকবে?
চালকেরা জানাচ্ছেন, প্রথম কয়েক দিন তাঁরা তিন জন যাত্রীই তুলবেন। পরে যদি দেখা যায় অটোর তুলনায় যাত্রী বেশি হয়ে যাচ্ছে তখন তাঁরা চার জন যাত্রী নেওয়ার কথা ভাববেন। যদিও দমদমের রুটে কিছু অটোয় এখনই পাঁচ জন যাত্রী বসানোর অভিযোগ উঠেছে।
উত্তর কলকাতায় উল্টোডাঙা থেকে শোভাবাজার মেট্রো স্টেশন অটোর রুটটি একে বারেই মেট্রো নির্ভর। শোভাবাজার মেট্রোর গেট সাধারণ যাত্রীদের জন্য আগামী সোমবার থেকে খুলছে জেনে চালকদেরও মুখে হাসি ফুটেছে। সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় নামে এক চালক বলেন, ‘‘বহু যাত্রী এখান থেকে অটো ধরে উল্টোডাঙা গিয়ে সল্টলেকের বিভিন্ন অফিসে যান। যেখানে থামতে না থামতে লোকে দৌড়ে অটো ধরতেন, সেখানে অপেক্ষা করেও অটোর যাত্রী মিলছে না।” তিনি জানান, এখন তিন জন যাত্রী নিলেও মেট্রো চালু হলে কত জনকে তোলা যাবে, তা নিয়ে এখনও কোনও নির্দেশিকা তাঁরা পাননি।
দক্ষিণের রাসবিহারী থেকে গড়িয়াহাট, বালিগঞ্জ স্টেশন-সহ বেশ কয়েকটি রুটের অটো মেট্রো নির্ভর। ওই রুটের অটোচালকেরা জানাচ্ছেন, মেট্রো যখন চালু ছিল তখন একটা ট্রেন স্টেশনে ঢুকলে রাসবিহারী মোড়ে দাঁড়ানো ৮-১০টি অটো একসঙ্গে যাত্রী পেত। এখন দিনে আড়াইশো টাকা উপার্জন করতে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে।”
মেট্রো চালুর খবরে খুশি হলেও তাঁরা মনে করেন লোকাল ট্রেনও চালু হওয়া দরকার। বালিগঞ্জ স্টেশনের লোকাল ট্রেন ও মেট্রো এই দুই চালু হলে তবেই আগের অবস্থা ফিরবে বলে জানান তাঁরা। খোকন দাস নামে এক অটো চালকের মতে, মেট্রো চালু হলেও আগের মতো ঘন ঘন মেট্রো চলবে না। তবুও অন্তত খানিকটা আকাল ঘুচবে।
মেট্রো চালু হলে যাত্রী ভিড় বাড়লে অটোর যাত্রী তোলা নিয়ে কোনও বিধিনিষেধ জারি হবে কি না, সে বিষয়ে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও কোনও উত্তর দেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy