ভিন্ন চিত্র: মেট্রোর কামরায় আসন মুছছেন এক কর্মী (বাঁ দিকে)। অটোর ক্ষেত্রে সোমবার পর্যন্ত কোনও তৎপরতা দেখা যায়নি। নিজস্ব চিত্র
দূরপাল্লার ট্রেনের বাতানুকূল কামরায় জীবাণুনাশক ছড়ানোর কাজ শুরু হয়েছিল আগেই। কিন্তু, ভিড়ে ঠাসা শহর ও শহরতলির লোকাল ট্রেন বা মেট্রোয় তেমন কিছু চোখে না-পড়ায় আশঙ্কা বাড়ছিল যাত্রীদের মধ্যে।
পরিস্থিতি সামলাতে সোমবার থেকে লোকাল ট্রেন এবং মেট্রোর কামরাও জীবাণুমুক্ত করার কাজ শুরু হল। এ দিন টিকিয়াপাড়া এবং নারকেলডাঙা কোচিং ইয়ার্ডে রেলকর্মীরাই লোকাল ট্রেনের কামরায় উঠে জীবাণুনাশক ছড়ানোর কাজ করেন। উল্লেখ্য, শিয়ালদহ মেন, উত্তর ও দক্ষিণ শাখার ট্রেনগুলিতে প্রতিদিন অগণিত মানুষ যাতায়াত করেন। সপ্তাহের কাজের দিনে লোকাল ট্রেনে সওয়ার হন কম-বেশি ২০ লক্ষ যাত্রী। হাওড়া থেকে বর্ধমান, খড়্গপুর এবং মেচেদা শাখা মিলিয়ে রোজ যাতায়াত করেন দশ থেকে বারো লক্ষ লোক। দূরপাল্লার মেল ও এক্সপ্রেস রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে সময় পাওয়া যায়, সেই তুলনায় লোকাল ট্রেন রক্ষণাবেক্ষণে সময় অনেক কম মেলে। তবুও পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে রেলের নিজস্ব কর্মীরা কোচিং ইয়ার্ডে জীবণুনাশক ছড়ানোর কাজ করছেন।
রবিবার থেকে দূরপাল্লার ট্রেনযাত্রীদের কম্বল দেওয়া বন্ধ করেছে পূর্ব রেল। সরানো হচ্ছে বাতানুকূল কামরার পর্দাও। পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেলের দূরপাল্লার ট্রেনগুলিতে যাত্রীদের দেখভাল এবং ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকেন যে কর্মীরা, তাঁরাই মূলত বাতানুকূল কামরা এবং শৌচাগারে জীবাণুনাশক ছড়ানোর কাজ করছেন। সোমবার, সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে লোকাল ট্রেনে যাত্রীদের ভিড়ও তুলনামূলক ভাবে কম ছিল বলে খবর।
সচেতনতা বাড়াতে পিছিয়ে নেই মেট্রোও। উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ছ’লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। তুলনায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় যাত্রী-সংখ্যা এখনও অনেক কম। দুই মেট্রোতেই ট্রেনের কামরা জীবাণুমুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। নোয়াপাড়া ডিপোয় মেট্রোর কামরায় জীবাণুনাশক ছড়ানোর পাশাপাশি কামরার হাতল, আসন, দরজার প্রান্ত-সহ যে সব জায়গায় যাত্রীদের হাত রাখার প্রবণতা বেশি, তা পরিষ্কার করা হচ্ছে।
এ দিন দেখা গিয়েছে, মেট্রো স্টেশনগুলিতে যাত্রীদের বসার আসন, এসক্যালেটরের হাতল পরিষ্কার করছেন মেট্রোকর্মীরা। সাবান জল এবং জীবাণুনাশক দিয়ে ধোয়া হচ্ছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর বিভিন্ন স্টেশনে সিঁড়ির হাতলও। যাত্রীদের সচেতন করতে নাগাড়ে প্রচার চালাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। স্টেশনের বিভিন্ন জায়গায় লাগানো হয়েছে পোস্টার এবং ব্যানার। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মেট্রোর কর্মীদেরও।
তবে, রেল এবং মেট্রোয় নানা পদক্ষেপ চোখে পড়লেও শহরের অটোচালকদের ক্ষেত্রে এখনও কোনও তৎপরতা চোখে পড়েনি। সোনারপুর, গড়িয়া, টালিগঞ্জ, রাসবিহারী, শিয়ালদহ, উল্টোডাঙা, বাগুইআটি-সহ বিভিন্ন অঞ্চলের অটোচালকদের বক্তব্য, এখনও ইউনিয়ন থেকে তাঁদের কিছু জানানো হয়নি। হাতে গোনা কয়েক জন চালক ব্যক্তিগত উদ্যোগে মাস্ক ব্যবহার করলেও বেশিরভাগই জানিয়েছেন, তাঁরা এ নিয়ে স্বচ্ছন্দ নন। অনেকের আবার মত, মাস্ক পরে গাড়ি চালানো বা যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলা অসুবিধাজনক। পাশাপাশি, অটো চালানো শেষ হলে অনেকে গাড়ি ধোয়া-মোছা করেন ঠিকই। তবে যাঁরা অটো দিনের বিভিন্ন সময়ে একাধিক চালককে ভাড়া দেন, তাঁদের ক্ষেত্রে নিয়মিত গাড়ি ধোয়া-মোছা করার সুযোগ অনেকটাই কম।
তবে এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাট থেকে গড়িয়া এবং পাটুলি রুটের অটো ইউনিয়নের নেতা দেবরাজ ঘোষ এবং উত্তর কলকাতা জেলা অটো ইউনিয়নের নেতা অশোক চক্রবর্তী জানান, তাঁরা দ্রুত এ নিয়ে চালকদের সচেতন করতে তৎপর হবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy