প্রশ্নে: এই লেনদেন নিয়েই তৈরি হয়েছে আশঙ্কা। ছবি: রণজিৎ নন্দী
করোনা-আতঙ্কে ভুগছেন কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মীরা।
কলকাতা পুলিশের তরফে শহরের রাস্তার মোড়ে মোড়ে বকেয়া ট্র্যাফিক জরিমানা হিসেবে আদায় করা হচ্ছে নগদ টাকা। আর এতেই আতঙ্কিত কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগের কর্মীরা। তাঁদের আশঙ্কা, ‘‘টাকা থেকে সহজেই ছড়াতে পারে করোনাভাইরাস। এই মুহূর্তে অবিলম্বে টাকার লেনদেন বন্ধ করা হোক।’’
আগেই শহরের রাস্তায় হোর্ডিং দিয়ে কলকাতা পুলিশের তরফে আবেদন করা হয়েছিল জরিমানার টাকা জমা করার জন্য। ৩১ মার্চ পর্যন্ত বকেয়া পরিশোধ করলে ৫০ শতাংশ ছাড় মিলবেও বলা হয়েছিল। কলকাতা পুলিশের ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ড এবং লালবাজারের কাউন্টার ছাড়াও শহরের বিভিন্ন প্রান্তে নগদে বকেয়া মেটাচ্ছেন অনেকেই। উত্তর কলকাতার এক ট্র্যাফিক গার্ডের সার্জেন্টের কথায়, ‘‘অনলাইনে বকেয়া মেটানোর ব্যবস্থা থাকলেও বেশির ভাগ গাড়িচালক নগদে লেনদেন করছেন। ফলে বর্তমান পরিস্থিতিতে গাড়িচালকদের থেকে টাকার নোট হাতে নিতে গিয়ে আমাদের আতঙ্ক বাড়ছে।’’
পার্ক সার্কাসের এক ট্র্যাফিক সার্জেন্টের কথায়, ‘‘নিজের খরচে পকেটে স্যানিটাইজ়ার রাখলেও গাড়ি চালকদের থেকে বারবার নগদ টাকা নেওয়ার পরে সব সময়ে স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করা সম্ভবও নয়।’’ দক্ষিণ কলকাতার একটি ট্র্যাফিক গার্ডের এক সার্জেন্টের আবেদন, ‘‘বকেয়া ট্র্যাফিক জরিমানা আদায়ে অনলাইনের সুবিধাও রয়েছে। মাননীয় নগরপালের কাছে আমাদের বিনীত অনুরোধ, এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কেবল মাত্র অনলাইন পরিষেবা চালু থাকুক।’’
নোট বা টাকায় নানা ধরনের জীবাণুর উপস্থিতি মেলা নতুন কিছু নয়। নোটের মাধ্যমে সংক্রামক নানা রোগ ছড়িয়ে যাওয়ার কথাও বলেছেন বিশেষজ্ঞেরা। এই সংক্রান্ত একাধিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, কারেন্সি নোটে মাইক্রোঅর্গানিজ়ম থাকে। যা থেকে দ্রুত গতিতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। ইন্ডিয়ান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল, চিকিৎসক সংঘমিত্রা ঘোষ বলেন, ‘‘এখন করোনা মোকাবিলায় সর্বাত্মক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। টাকা বহু জনের মধ্যে যেহেতু ঘোরাফেরা করে, তাই সংক্রমণ সহজে ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। এই মুহূর্তে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে বকেয়া জরিমানা হিসাবে নগদে লেনদেন দ্রুত বন্ধ করাই ভাল।’’
প্রাণী এবং মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট সিদ্ধার্থ জোয়ারদারের কথায়, ‘‘অনেকের টাকা গুনতে বসে মুখে হাত দেওয়ার প্রবণতা থাকে। করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে টাকার মাধ্যমে সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রবল। কলকাতা পুলিশের মতো বৃহৎ সংস্থার ক্ষেত্রে আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত নগদ লেনদেন এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।’’
এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক) রূপেশ কুমার বলেন, ‘‘টাকা লেনদেনের সময়ে স্যানিটাইজ়ার ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy