রুদ্ধ: গার্ডরেল দিয়ে ঘেরা হাওড়া হাসপাতালের গেট। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
করোনা থেকে শিক্ষা নিয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালের বিকল্প হিসেবে সত্যবালা আইডি-র পরিকাঠামো উন্নত করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এ দিকে, হাওড়া জেলা হাসপাতাল জীবাণুমুক্ত করার প্রক্রিয়া পুরো শেষ না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকছে সেখানে রোগী ভর্তি। বুধবার থেকে আপাতত তালাবন্ধ ওই হাসপাতাল।
হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সত্যবালা আইডি হাসপাতালে অবিলম্বে শুরু হচ্ছে ১০ শয্যার আইসিসিইউ এবং দু’টি ডায়ালিসিস ইউনিট। একটি ইউএসজি যন্ত্রও বসছে। রাজ্যের অন্যতম সংক্রামক রোগের চিকিৎসা কেন্দ্রগুলির একটি উত্তর হাওড়ার এই হাসপাতালে চিকিৎসার উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই বলে দীর্ঘদিনের অভিযোগ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হাওড়ায় ছড়িয়ে পড়ার পরে সেখানে ভর্তি রোগীর আত্মীয়েরা বারবারই চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন। গত ২ এপ্রিল ওই হাসপাতালে সাঁকরাইলের ধূলাগড়ের বাসিন্দা এক বৃদ্ধের করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়ে। রোগীর মৃত্যুর পরে তাঁর পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়, বিনা চিকিৎসায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এর আগে সালকিয়ার বাসিন্দা এক মহিলা গুরুতর অসুস্থ হন সত্যবালা আইডি হাসপাতালেই। কিন্তু ভেন্টিলেশন না থাকায় তাঁকে প্রথমে টি এল জয়সওয়াল এবং পরে হাওড়া জেলা হাসপাতালে সরানো হয়। পরে করোনা পজ়িটিভ ওই মহিলার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: অক্ষমকে ত্রাণ দিতে বিশেষ ব্যবস্থার আর্জি
অন্য দিকে, দুই চিকিৎসক এবং এক জন স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা পজ়িটিভ হওয়ায় তড়িঘড়ি হাওড়া জেলা হাসপাতাল জীবাণুমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। এ দিনই ওই হাসপাতালের রোগীদের সরিয়ে মূল ফটক বন্ধ করে শুরু হয়েছে ওয়ার্ড জীবাণুমুক্ত করার কাজ। সূত্রের খবর, কিছু রোগীকে অন্য ওয়ার্ডে সরিয়ে আগামী কয়েক দিন ধরে হাওড়া পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর ওই কাজই করবে। কাজ শেষ হলে কয়েক দিনের মধ্যে হাসপাতাল ফের চালু হবে বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এর আগে গত কয়েক দিন ধরে ওই হাসপাতাল চত্বর জীবাণুমুক্ত করার কাজ করেছিল দমকল।
বুধবার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বীরেন্দ্রপ্রসাদ সাউ বলেন, ‘‘সত্যবালা আইডি হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নত করতে ১০ শয্যার আইসিসিইউ ও দু’টি ডায়ালিসিস ইউনিট হবে। একটি ইউএসজি যন্ত্রও দেওয়া হচ্ছে। দ্রুত সেই কাজ শুরু হবে।’’ তবে সেখানে করোনার চিকিৎসা হবে না বলেই মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান। করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রোগীকে পরীক্ষা করে ফলাফল জানা হবে। প্রয়োজন বুঝে তাঁকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হবে। বীরেন্দ্র আরও জানান, এই মুহূর্তে হাওড়ার কোনও সরকারি হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা হচ্ছে না। গোলাবাড়ি এবং উলুবেড়িয়ার দু’টি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা পজ়িটিভ রোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে। তা অবশ্যই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নিয়ন্ত্রণে।
এ দিন প্রায় জনশূন্য হাওড়া জেলা হাসপাতালের সামনে গিয়ে দেখা গেল, সুনসান চত্বরের অধিকাংশ গেটই বন্ধ। জরুরি বিভাগের গেটে তালা ঝুলছে। বাইরের থেকে কেউ যাতে ঢুকতে না পারেন, তাই মূল ফটকের সামনে গার্ডরেল রেখে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের অধিকাংশ রোগীকে হয় অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে অথবা বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যদিও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি, হাসপাতাল বন্ধ না করেই ওয়ার্ড জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। তবে রোগী ভর্তি যে বন্ধ, তা তিনি এ দিন জানিয়েছেন। পাশাপাশি, দিন কয়েকের মধ্যে ফের রোগী ভর্তি শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বে-তার তানপুরা, সুর কেটেছে শিল্পের
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy