বেলগাছিয়া এলাকায় পিপিই পরে তথ্য সংগ্রহ করার প্রস্তুতি কলকাতা পুরসভার কর্মীদের। —নিজস্ব চিত্র
সম্ভাব্য করোনাভাইরাস আক্রান্তকে চিহ্নিত করতে কলকাতায় শুরু হল বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ। বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত বেলগাছিয়া বস্তি এলাকায় শুরু হয় তথ্য সংগ্রহের কাজ। কলকাতা পুরসভা এবং রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের যৌথ দল এ দিন দুপুরে বেলগাছিয়াতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, কলকাতা পুরসভা এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডেই এই তথ্য সংগ্রহ করা হবে। সেই সঙ্গে স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে করা হবে র্যাপিড টেস্ট।
এ দিন বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত পুরসভার ৩০ জনের একটি দল বেলগাছিয়া বস্তি এলাকায় যায়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, একাধিক সংক্রমণের ইতিহাস থাকায় ইতিমধ্যেই ওই অতি ঘন বসতি এলাকাকে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ‘স্পর্শকাতর’ তালিকার প্রথম সারি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এ দিন পুরসভার দলের সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভার সাংসদ এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শান্তনু সেন।
স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে একটি অংশ পিপিই (পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট) বা ভাইরাস প্রতিরোধী বিশেষ পোশাক পরে ওই এলাকায় যান। প্রতিটি বাড়িতে তাঁরা বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে তথ্য সংগ্রহ করেন, কারও অসুস্থতা আছে কি না। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, প্রতিটি বাড়িতে বয়স্ক বাসিন্দা কত জন আছেন, তাঁদের পুরনো কোনও জটিল রোগ আছে কি না, গত কয়েক দিনের মধ্যে তাঁদের সর্দি, জ্বরের মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে কি না তা-ও নথিভুক্ত করছেন পুরকর্মীরা। শান্তনুবাবু এ দিন বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রথমে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সর্দি, জ্বরের মতো উপসর্গ আছে কি না জানা হচ্ছে। সেই সঙ্গে সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন (সারি) আছে কি না কারও, তা-ও দেখা হচ্ছে। সেই অনুযায়ী পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা ফোনে ওই ব্যক্তিদের প্রতি দিন খবর রাখবেন। শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন অনুযায়ী পুরকর্মীরা সিদ্ধান্ত নেবেন কাউকে আইসোলেশনে পাঠানো দরকার, না হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দরকার।”
আরও পড়ুন: এখন যা কিছু করতে হবে গরিবদের দিকে তাকিয়েই, পরার্শ তিন অর্থনীতিবিদের
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, এই তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে বস্তি বা অতি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। কারণ, সেখানে দ্রুত সংক্রমণের সম্ভবনা রয়েছে। শান্তনুবাবু এ দিন জানিয়েছেন, বেলগাছিয়ার ওই বস্তিতে জনসংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার। ওই এলাকায় কত জন সংক্রমিত হয়েছেন, তা নির্দিষ্ট করে বলেননি শান্তনুবাবু। পুরসভা সূত্রে খবর, নারকেলডাঙা নর্থ রোড, বন্দর এলাকার ঘন বসতিপূর্ণ অঞ্চল এবং বালিগঞ্জের কয়েকটি অতি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় দ্রুত এই তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ করা হবে।
বাসিন্দাদের তথ্য নিচ্ছেন এক পুরকর্মী। ছবি: রয়টার্স
বেলগাছিয়া বস্তিতে ঢোকা বেরনোর রাস্তা বুধবার রাত থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। সেখানকার বাসিন্দাদের বাইরে বেরনো নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাজার-দোকানের উপরও নিয়ন্ত্রণ রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাবার করোনা, হোম কোয়রান্টিনে রাখা হল অভিনেত্রী-সাংসদের মা এবং বোনকে
এই অঞ্চলগুলিতে র্যাপিড টেস্ট করানোর পরিকল্পনা রয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের। র্যাপিড টেস্টে খুব দ্রুত চিহ্নিত করা যায়, কোনও ব্যক্তির শরীরের প্রতিরোধ ব্যাবস্থায় কোনও সংক্রমণ হয়েছে কি না। তা থেকে সম্ভাব্য কোভিড সংক্রামিতকে প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব। তবে এখনও রাজ্যের হাতে র্যাপিড টেস্টের জন্য প্রয়োজনীয় কিট না আসায় সেই টেস্ট করা সম্ভব হচ্ছে না। কিট এলে ওই অতি ঘনবসতি এলাকাগুলোয় র্যাপিড টেস্ট করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy