বৌবাজারের বাধা কাটিয়ে শিয়ালদহ-এসপ্লানেড মেট্রোপথ সংযুক্ত হওয়ার কাজ আগেই মিটেছে। সিগন্যালিং ব্যবস্থার সমন্বয়ের কাজ সেরে চলতি বছরেই খুলে দেওয়া হতে পারে হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত মেট্রোপথ। তবে, এই প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বড় বাধা হিসাবে উঠে আসছে পর্যাপ্ত সংখ্যক চালকের অভাব। সমস্যার সুরাহায় বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে পাঁচ বছরের মেয়াদে ট্রেন অপারেটর নিয়োগ করার কথা ভেবেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
সূত্রের খবর, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোকে সরাসরি দিল্লি মেট্রো রেল কর্পোরেশনের হাতে তুলে না দিয়ে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা হিসাবে ট্রেন অপারেটর নিয়োগ করে পরিষেবা দেওয়ার কাজ সামাল দিতে চান তাঁরা। সম্প্রতি মেট্রোর তরফে ট্রেন অপারেটর নিয়োগ করার বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হতেই বিষয়টি নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় রেডিয়ো-সঙ্কেত নির্ভর ট্রেন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় চালকের ভূমিকা গৌণ হবে।
প্রসঙ্গত, হাওড়া ময়দান থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত পুরো পথে মেট্রো পরিষেবা শুরু হলে ট্রেনের সংখ্যা এবং পরিষেবার সময়— দুই-ই অনেকটা বাড়বে। বর্ধিত সংখ্যার ট্রেন চালানোর জন্য অন্তত ৫০ থেকে ৬০ জন চালক লাগতে পারে। বাস্তবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় এখন ৩৫ জনের কাছাকাছি চালক আছেন। ট্রেন অপারেটরদের দিয়ে ওই ঘাটতি সামাল দেওয়ার পাশাপাশি, রেলের প্রশিক্ষিত চালকদের উত্তর-দক্ষিণ এবং অন্য কিছু লাইনে (যেখানে রেডিয়ো সঙ্কেত নির্ভর ট্রেন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেই) বদলি করা হতে পারে বলেও জল্পনা রয়েছে।
বিপরীতে, বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে পাওয়া চুক্তিভিত্তিক ট্রেন অপারেটরদের দিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চালানোর কথা ভাবা হচ্ছে বলে মেট্রো প্রশাসনের একাংশ জানাচ্ছেন। মেট্রোর বাম কর্মী সংগঠন এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ধর্নায় বসার কথা ভাবছে। মেট্রোর প্রগতিশীল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের
সহ-সভাপতি শুভাশিস সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আধুনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা বিকল হলে ট্রেন অপারেটরেরা সাধারণ ব্যবস্থায় কী ভাবে ট্রেন চালাবেন, তা স্পষ্ট নয়।’’ মেট্রোকর্তাদের যদিও দাবি, ট্রেন অপারেটরদের
দিয়ে কাজে পরিষেবা আরও উন্নত হবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)