কলকাতা পুরসভার অধীন বস্তি এলাকায় প্রোমোটারের থাবা ঠেকাতে নতুন পদক্ষেপ করছে কলকাতা পুরসভা। সম্প্রতি কলকাতার বেশ কিছু বস্তিতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। সেই সব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বস্তিবাসীদের অভিযোগ, এলাকার প্রভাবশালী প্রোমোটারেরা জমি খালি করে বহুতল নির্মাণের জন্য বস্তিতে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছেন। সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতার চক্রবেড়িয়া রোডের একটি বস্তিতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে সেখানে গিয়েছিলেন স্বয়ং মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সেখানে গিয়ে বস্তিবাসীদের অভিযোগ শোনেন মেয়র। কলকাতা পুরসভার একটি সূত্র জানাচ্ছে, সেখানে মেয়রকে কাছে পেয়ে বস্তিবাসীরা জানিয়েছিলেন, প্রভাবশালী প্রোমোটারেরা অসাধু প্রক্রিয়ায় জমি খালি করতে তাঁদের ঝুপড়িতে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছেন। আর এমন অভিযোগ পাওয়ার পরেই এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দিয়েছেন ফিরহাদ।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, বস্তিতে থাকা মানুষজনকে ‘ঠিকা টেনেন্সি অ্যাক্ট’-এর মাধ্যমে জমির মালিকানা বস্তিবাসীদের হাতে তুলে দিতে চান মেয়র। পরে সেই সব জমিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বাংলার বাড়ি প্রকল্পে পাকা বাড়ি বানিয়ে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন তিনি। এই সংক্রান্ত বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে মেয়র বলেছেন, ‘‘উত্তরণের যাতে উত্তরণ হয় সেই প্রক্রিয়ায় শামিল কলকাতা পুরসভা। এর জন্য বস্তির যে জমির চরিত্র রয়েছে, তা ঠিকা জমির চরিত্র করা হবে। কিছু আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে সেগুলো মিটলে তবেই সব বস্তির জমি ঠিকা জমিতে রূপান্তরিত করা হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তের ফলে নিজের জমির অধিকার পাবেন বস্তিবাসীরা। আইনের জটিলতার হাত থেকে মুক্তি পাবেন। কলকাতা পুরসভাও তাদের সেই জমিতে বাংলার বাড়ি করে ভাল ভাবে রাখতে পারবে। এমনটা হলে বস্তির উপর প্রোমোটারদের থাবা বন্ধ হবে।’’
তবে কলকাতা পুরসভার বস্তি বিভাগের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কলকাতার শতকরা ৯০ শতাংশ বস্তির মালিকানা বর্তমানে ‘ঠিকা টেনেন্সি অ্যাক্ট’-এর মাধ্যমে তুলে দেওয়া হয়েছে বস্তিবাসীদের হাতে। কিন্তু এখনও এমন কিছু বস্তি রয়ে গিয়েছে, যেগুলির মালিকানা বস্তিবাসীরা পাননি। তাই মেয়র এই বিষয়ে নির্দেশ দেওয়ার পর সেই সব বস্তির জমির মালিকানা যাতে বস্তিবাসীদের হাতে তুলে দেওয়া যায়, সেই প্রক্রিয়া আগামী দিনে শুরু করবে কলকাতা পুরসভা। কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, বস্তি থেকে আর যে বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করা যাবে না, সেই বিষয়টি স্পষ্ট করে দিতেই নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র।