প্রতীকী চিত্র।
স্কুল খোলার পরে করোনা-বিধি মেনেই পঠনপাঠন হবে। কিন্তু স্কুলে এসে কোনও পড়ুয়া সংক্রমিত হলে তার দায়ভার নেবেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ। পড়ুয়ারা স্বাস্থ্য-বিধি মানছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব অভিভাবকদেরও। আগামী ১৬ নভেম্বর স্কুল খোলার আগে অভিভাবকদের এমনটাই জানিয়েছে শহরের বেশির ভাগ স্কুল। এমনকি কিছু স্কুল নোটিস দিয়েও অভিভাবকদের সতর্ক করে দিয়েছে।
আর তা নিয়েই এ বার শুরু হয়েছে বিতর্ক। এই নোটিস দিয়ে স্কুল নিজেদের দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলছেন অভিভাবকদের একাংশ। কারণ তাঁদের মতে, স্কুলে গিয়ে পড়ুয়ারা কী করছে, সে দিকে নজরদারি করা অভিভাবকদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই স্কুল তার দায় কোনও ভাবেই এড়াতে পারে না। আবার স্কুল কর্তৃপক্ষের পাল্টা প্রশ্ন, কোভিড-কালে পড়ুয়ার স্বাস্থ্যের দায়ভারের পুরোটা কেন বর্তাবে তাঁদের উপরে?
কলকাতার গার্ডেন হাই স্কুলের অভিভাবকদের একাংশ জানান, তাঁরা স্বেচ্ছায় ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন এবং তারা অসুস্থ হলে স্কুলের কোনও দায় নেই— এই শর্তে পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠাতে বলেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ওই অভিভাবকদের প্রশ্ন, স্কুলে পাঁচ-ছ’ঘণ্টা কাটানোর সময়ে বা তার পরে বাড়ি ফিরে কোনও পড়ুয়া অসুস্থ হলে তার দায় কী করে ঝেড়ে ফেলতে পারেন স্কুল কর্তৃপক্ষ? এই নিয়ে ওই স্কুলের অধ্যক্ষা রাজশ্রী বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
তবে শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, তাঁদের স্কুলে যাবতীয় করোনা-বিধি মেনে ক্লাস চলবে। এমনকি, স্কুলে কোনও পড়ুয়ার জ্বর এলে থাকছে আইসোলেশন রুমও। স্কুলে মাস্ক পরা, জীবাণুমুক্ত করা সংক্রান্ত সব বিধিই মেনে চলা হবে। তবু স্কুলে বা স্কুলের বাইরে কোনও পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে স্কুলের কি কোনও দায় নেই? ব্রততীদেবী বলেন, “পড়ুয়ারা তো শুধু স্কুলে থাকছে না। তারা গাড়ি করে স্কুলে আসছে। স্কুল ছাড়াও বাইরে বেরোচ্ছে। তাই কোনও পড়ুয়ার করোনা হলে তার দায় কেন স্কুল নেবে? অভিভাবকদের জানিয়েছি, এটা একটা টিম ওয়ার্ক। স্কুল যেমন দেখবে পড়ুয়া কোভিড-বিধি মানছে কি না, তেমনই স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে তারা স্বাস্থ্য-বিধি মানছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব অভিভাবকদেরও।” সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি জানান, স্কুল খুললে একটি ফর্মে পড়ুয়াদের নিশ্চয়তা দিতে হবে, তার বা তার পরিবারের কারও জ্বর হলে সে স্কুলে আসবে না। তিনি বলেন, “ফেব্রুয়ারিতে স্কুল খোলার কিছু দিন পরে এক পড়ুয়ার জ্বর এসেছিল। বাড়ি ফেরার পরে জানা যায়, তার করোনা হয়েছে। তখন তার সংস্পর্শে যারা যারা এসেছিল, তাদের কয়েক দিন স্কুলে আসতে বারণ করেছিলাম। স্কুল তো সতর্ক থাকবেই, পাশাপাশি সাবধান হতে হবে অভিভাবকদেরও।”
ডিপিএস রুবি পার্ক স্কুলের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, করোনা-বিধি মেনেই স্কুল চালানো হবে। স্কুলবাসে বা টিফিনের সময়েও করোনা-বিধি মানা হচ্ছে কি না, সে দিকে নজর রাখা হবে। স্কুলের সময়কেও দু’টি শিফটে ভাগ করা হয়েছে। থাকছে আইসোলেশন রুমও। কিন্তু তার পরেও কোনও পড়ুয়া সংক্রমিত হলে সেই দায়িত্ব নিতে নারাজ স্কুল। সংশ্লিষ্ট পড়ুয়া স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলছে কি না, তা দেখার দায় অভিভাবকদেরও বলে জানাচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy