প্রতীকী ছবি।
হাসপাতালের চারতলা থেকে ঝাঁপ দেওয়ায় মৃত্যু হয়েছিল বৃদ্ধ বাবার। বছর পাঁচেক আগে ই এম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ-সহ দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গাফিলতি এবং নজরদারির অভাবের অভিযোগ দায়ের করে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেছিলেন মৃতের দুই ছেলে। সম্প্রতি রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত ওই বেসরকারি হাসপাতালকে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় তিন লক্ষ টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছে।
ক্রেতা সুরক্ষা আদালত সূত্রের খবর, ২০১৪ সালের মার্চের মাঝামাঝি মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী প্রফুল্লকুমার দত্ত অসুস্থ হয়ে ই এম বাইপাসের ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। মৃতের ছেলে প্রবীর দত্তের অভিযোগ, ‘‘বাবা যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং যথাযথ নজরদারিতে থাকেন তার জন্যই মোটা টাকা খরচ করে ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। কিন্তু ভর্তি হওয়ার প্রায় দিন দশেক পর ফোনে জানানো হয়, বাবা চারতলা থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন।’’ প্রবীরবাবুর অভিযোগ, ‘‘হাসপাতালের গাফিলতির জন্যই বাবাকে হারিয়েছি। এক জন অসুস্থ বৃদ্ধ ওয়ার্ড থেকে চারতলার ছাদে চলে গেলেন। অথচ হাসপাতালের কোনও কর্মী দেখতে পেলেন না! হাসপাতালের কর্মীরা সতর্ক থাকলে বাবার এই ভাবে মৃত্যু হত না।’’
এই দুর্ঘটনার পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ জানিয়ে আনন্দপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মৃতের ছেলেরা। দুর্ঘটনার কয়েক মাস পরে তাঁরা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বারুইপুর ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে ক্ষতিপূরণের মামলা রুজু করেন। বছর দুয়েক আগে জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত হাসপাতাল এবং হাসপাতালের দুই চিকিৎসককে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় এগারো লক্ষ টাকা দিতে নির্দেশ দেয়। জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন দুই চিকিৎসক। সম্প্রতি রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত দুই চিকিৎসককে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে রায়ে জানিয়েছে, ‘‘বৃদ্ধের মৃত্যুর জন্য সম্পূর্ণ দায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এ ক্ষেত্রে রোগী ভর্তি হওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল দায় এড়াতে পারে না।’’
রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত আগামী ২৩ নভেম্বরের মধ্যে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছে। এই রায় প্রসঙ্গে হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার শুভাশিস দত্ত বলেন, ‘‘আমরা এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে যাব।’’ রাজ্য আদালতের রায় প্রসঙ্গে প্রবীরবাবু বলেন, ‘‘ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে আদালতে যত দূর যেতে হয় যাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy